মুক্তিযুদ্ধ

খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা: আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দার, বীর উত্তম

মুক্তিযুদ্ধে আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দার প্রথমে ছিলেন ২ নম্বর সেক্টরের সহ-অধিনায়ক। পরে ২ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব ও নেতৃত্বের জন্য তাকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়। বীর উত্তম খেতাবে তার সনদ নম্বর ১৬।
আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দার, বীর উত্তম। ছবি:সংগৃহীত

(মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছরে দ্য ডেইলি স্টারের পক্ষ থেকে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা নিয়ে বিশেষ আয়োজন 'মুক্তিযুদ্ধের খেতাবপ্রাপ্ত যোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা'। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সাধারণত আমরা ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের বীরত্ব সম্পর্কে জানি। কিছুটা আড়ালে ঢাকা পড়ে যান আমাদের বাকি খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা। দ্য ডেইলি স্টার উদ্যোগ নিয়েছে সেই জানা ও অজানা মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা নিয়মিত প্রকাশ করার। ক্রমানুসারে বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা নিয়েই চলছে ধারাবাহিক এই আয়োজন। পর্যায়ক্রমে বীর বিক্রম, বীর প্রতীক মিলিয়ে সর্বমোট ৬৭২ জন মুক্তিযোদ্ধার বীরত্বগাঁথা প্রকাশ করবে দ্য ডেইলি স্টার। আমাদের আজকের পর্বে রইল আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দার, বীর উত্তম'র বীরত্বগাঁথা)

মুক্তিযুদ্ধে আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দার প্রথমে ছিলেন ২ নম্বর সেক্টরের সহ-অধিনায়ক। পরে ২ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব ও নেতৃত্বের জন্য তাকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়। বীর উত্তম খেতাবে তার সনদ নম্বর ১৬।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শুরুর দিকে ক্যাপ্টেন আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দারকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে বলা হয়, উত্তরবঙ্গে ভারতীয়দের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই তাকে সেখানে পাঠানো হতে পারে। কিন্তু ঢাকায় আসার পর সে ধরনের কোনো নির্দেশ বা ইঙ্গিত পেলেন না এটিএম হায়দার। আরও কয়েকজন বাঙালি সেনা অফিসারের মতোই তাঁবুতে অন্তরীণ করে রাখা হয় তাকে।

মূলত ক্যাপ্টেন হায়দারের মতো কমান্ডোকে মুক্ত রাখা বিপজ্জনক হতে পারে ভেবেই তাকে অন্তরীণ করে রেখেছিল পাকিস্তানি বাহিনী। সেখানে  থাকা অবস্থায় এটিএম হায়দার কোনো কিছুর খবরই পেলেন না। দিনের পর দিন শুয়ে-বসে থাকতে ভাল লাগছিল না তার।

এক সন্ধ্যায় নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ট্রেনে কমলাপুর স্টেশনে নেমে মতিঝিল কলোনিতে বড় বোনের বাসায় উঠলেন তিনি। রাতে খেয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি জেনে ফের ক্যান্টনমেন্টে ফিরলেন। এভাবে বেশ কয়েকবার কমলাপুর কলোনিতে চুপিসারে গিয়েছিলেন এটিএম হায়দার।

এদিকে ঢাকা থাকায় ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পাননি তিনি। বেতনের দাবি নিয়ে গেলেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের এক সিনিয়র অফিসারের কাছে। ২ জনের মধ্যে তর্কের এক পর্যায়ে সেই পাকিস্তানি অফিসার তাকে বললেন, 'তুমি তোমার কর্মক্ষেত্র কুমিল্লায় চলে যেতে পার। সেখানে তোমার বেতন নিয়ে সমস্যা হবে না আশা করি। আজকেই একটি ট্রাক কুমিল্লায় যাবে। তুমি কেন এই সুযোগটা নিচ্ছ না?' সুযোগ পেয়ে ২০ মার্চ ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে চলে গেলেন এটিএম হায়দার।   

কুমিল্লায় গিয়ে এটিএম হায়দার পাকিস্তানি অফিসারদের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করলেন। তাদের কথাবার্তায় গোপনীয়তা, ষড়যন্ত্রের আভাস। তিনি বুঝতে পারলেন, পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। ২৫ মার্চ পরিস্থিতির আরো অবনতি হলো।

২৫ মার্চ বিকেলে এটিএম হায়দার তৃতীয় কমান্ডো ব্যাটেলিয়নের সেকেন্ড ইন কমান্ডের রুমের একদিকে বসেছিলেন। সেকেন্ড ইন কমান্ড এটিএম হায়দারের উপস্থিতি খেয়াল করেননি। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার এক ফাঁকে সেকেন্ড ইন কমান্ড অন্যদের বললেন, 'আজ সব বাঙালি সৈনিককে সারেন্ডার করানো হবে।' এটিএম হায়দার বুঝতে পারলেন, সেদিনই চূড়ান্ত আঘাত আসবে। এই পরিস্থিতিতে কী করা সম্ভব তা খতিয়ে দেখার জন্য মেসে ফিরতে চাইলেন তিনি।

রুম থেকে বের হয়ে দেখলেন পরিস্থিতি এরইমধ্যে ভয়াবহ। চারদিকে অবাঙালি সেনারা রাইফেল তাক করে আছে। হায়দার কিছুটা ভয় পেলেন। অজানা আশঙ্কায় সেকেন্ড ইন কমান্ডের রুমেই বসে রইলেন তিনি। সন্ধ্যার দিকে সেকেন্ড ইন কমান্ড উঠলে তার গাড়িতে করেই মেসে গেলেন এটিএম হায়দার। হায়দার প্রথমে ঢুকলেন ডাইনিং রুমে। সেখানে এক বাঙালি ডাক্তার বসে খাচ্ছিলেন। তিনি তাকে বললেন, 'স্যার, আপনি খাচ্ছেন। অথচ এদিকে পরিস্থিতি ভয়াবহ। যে কোনো সময় হামলা হতে পারে।' 

এরপর দ্রুত নিজের রুমে গিয়ে এটিএম হায়দার ঠিক করলেন, তাকে পালাতে হবে। রুম থেকে পিস্তল নিয়ে বাথরুমের জানালা ভেঙে বের হয়ে গেলেন তিনি। এ সময় পাকিস্তানি বাহিনীর গাড়ি একটি দ্রুত মেসে ঢুকল। প্রথমেই ডাইনিং টেবিলে থাকা বাঙালি ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করল তারা। এরপর খুঁজতে লাগল হায়দারকে।

এটিএম হায়দার ততক্ষণে দ্রুতগতিতে ক্রলিং করে বিধ্বস্ত শরীরে নালা-নর্দমা, খাদ পেরিয়ে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরিয়ে গেছেন। পালিয়ে একটি গ্রামে আশ্রয় নিয়ে  তিনি ঠিক করলেন, যে করেই হোক তাকে যুদ্ধে যোগ দিতে হবে। এরপর তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন, চতুর্থ বেঙ্গল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আছে। হায়দার ঠিক করলেন, তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবেন এবং চতুর্থ বেঙ্গলের সঙ্গে যোগ দেবেন। প্রায় ৬০ মাইল পায়ে হেঁটে সেখানে পৌঁছালেন হায়দার। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিনি কমান্ডিং অফিসারের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন। কিন্তু কমান্ডিং অফিসার খালেদ মোশাররফ তখন তেলিয়াপাড়ায় চলে গেছেন। ফলে হায়দার তেলিয়াপাড়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।

৩০ মার্চ তেলিয়াপাড়ায় মেজর খালেদ মোশাররফের সঙ্গে তার দেখা হলো। সেখানে যাওয়ার উদ্দেশ্য শুনে হায়দারকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন খালেদ মোশাররফ। তিনি হায়দারকে তরুণদের প্রশিক্ষণ ও পাকিস্তানি বাহিনীর যোগাযোগ ধ্বংসের কাজে  নিযুক্ত করলেন। একইসঙ্গে তাকে অনিয়মিত বাহিনী গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

ক্যাপ্টেন হায়দার পাকিস্তানিদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করতে চাইলে মেজর খালেদ মোশাররফ বিএসএফের সহযোগিতা চান। এরপর বিএসএফের বেশ কয়েকজন কমান্ডো এই কাজে ক্যাপ্টেন হায়দারকে সহযোগিতা করেন। ভারতীয় কমান্ডোরা তখন ছিলেন শ্রীমন্তপুর বিএসএফ ঘাঁটিতে। ২ নম্বর সেক্টরের টেকনিক্যাল হেডকোয়ার্টার তখনো শ্রীমন্তপুরে। 

২ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার প্রথমে ছিল হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়াতে। পারে হেডকোয়ার্টার স্থাপন করা হয় ত্রিপুরায়। ২ নম্বর সেক্টর তৈরি হলে সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয় মেজর খালেদ মোশাররফকে। সেক্টরের সহ অধিনায়ক করা হয় এটিএম হায়দারকে।

ত্রিপুরার মেলাঘর থেকেই খালেদ মোশাররফের নির্দেশে অসংখ্য যুদ্ধের পরিকল্পনা করেছিলেন এটিএম হায়দার। মুক্তিযুদ্ধের মে মাসে তার ওপর স্টুডেন্ট কোম্পানি গঠনের দায়িত্ব পড়ে। মেলাঘরে হায়দার প্রথম স্টুডেন্ট কোম্পানি গঠন করেন। এই কোম্পানিকে তিনিই ট্রেনিং দিতেন।

ঢাকা থেকে যাওয়া ছাত্র ও যুবকদের নিয়ে ক্যাপ্টেন হায়দার গড়লেন এক প্লাটুন  আরবান গেরিলা দল। খালেদ মোশাররফের নির্দেশে আরবান গেরিলা যুদ্ধের জন্য ক্যাপ্টেন হায়দার বিশেষভাবে গড়ে তুলেছিলেন এই দলটিকে।

খালেদ মোশাররফ ও এটিএম হায়দার চেয়েছিলেন, এই দলের সদস্যরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থানরত বিদেশি সাংবাদিক ও অতিথিদের জানাবে, ঢাকা শহরের অবস্থা স্বাভাবিক নয়। এজন্য  শহরের আশেপাশে গ্রেনেড ও গুলি ছুড়বে তারা।  কিন্তু এই তরুণরা ৯ জুন ঢাকায় গিয়ে সরাসরি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গ্রেনেড হামলা করে এবং বেশ কয়েকজনকে হত্যা করে,  যা ছিল অকল্পনীয়। ৯ জুন সন্ধ্যায় ক্যাপ্টেন হায়দারের মাধ্যমে ঢাকার খবর পান খালেদ মোশাররফ। এই অপারেশনের কথা জানতে পেরে তিনি বলেছিলেন, 'দিজ অল আর ক্র্যাক পিপল!' সেই থেকেই 'ক্র্যাক প্লাটুন' নামে পরিচিত হয়ে উঠে দলটি।

মেলাঘরে অবস্থিত প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে সব মুক্তিযোদ্ধাকে কমান্ডো, বিস্ফোরক ও গেরিলা ট্রেনিং ও শপথ করাতেন ক্যাপ্টেন হায়দার।  এ সময়  তিনি অসংখ্য বিখ্যাত অপারেশনের নকশা করেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের ২৩ অক্টোবর মেজর আইনউদ্দিনের সঙ্গে কসবা অপারেশনে গিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর শেলের আঘাতে মেজর খালেদ মোশাররফ গুরুতর আহত হলে ২ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয় আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দারকে। এরপর অসংখ্য যুদ্ধের নির্দেশনা দিয়েছিলেন এটিএম হায়দার।

২ নম্বর সেক্টরকে বলা হয় 'গণযুদ্ধের সূতিকাগার'। মুক্তিযুদ্ধে ইতিহাসের ২ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন সবচেয়ে বেশি। নিয়মিত বাহিনী ও গণবাহিনী মিলে এই সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৩ হাজার। গণযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণে ক্যাপ্টেন হায়দারের ভূমিকা ছিল অনন্য।

মুক্তিযুদ্ধের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে কে ফোর্সকে ২ ভাগ করে এক ভাগ পাঠানো হয় চট্টগ্রামে এবং অন্যভাগ চাঁদপুরে। ততক্ষণে মুক্ত হয়ে গেছে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর। ৮ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন হায়দার মিত্রবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার ডেমরা এলাকা পর্যবেক্ষণ করেন এবং সেনাদের নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশন ও মুগদাপাড়া দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করেন। 

১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণের অনুষ্ঠানে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ রাখা, লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরাকে অভ্যর্থনা জানানো, পাকিস্তানি বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজী ও  পাকিস্তানি জেনারেলদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এটিএম হায়দার।

১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের পর ঢাকা বেতার কেন্দ্র দখল করেন এটিএম  হায়দার।  ১৭ ডিসেম্বর বেতারে প্রথমবারের মতো বিজয়ের ঘোষণা দেন তিনি।  এদিন সন্ধ্যা ৭টায় আনুষ্ঠানিক সম্প্রচার শুরু হয় বাংলাদেশ টেলিভিশনের। মেজর হায়দার টেলিভিশনে আনুষ্ঠানিক বিজয়ের ঘোষণা দেন।

আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দারের জন্ম ১৯৪২ সালের ১২ জানুয়ারি কলকাতার ভবানীপুরে। তার পৈত্রিক বাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের কান্দাইল গ্রামে।  এটিএম হায়দারের প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শুরু হয়  পাবনার বীণাপানি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কিশোরগঞ্জ রামানন্দ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৮ সালে ম্যাট্রিক এবং কিশোরগঞ্জ সরকারি গুরুদয়াল কলেজ থেকে ১৯৬১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। এরপর তিনি পাকিস্তানের লাহোরে চলে যান এবং লাহোর ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হন। মাস্টার্স প্রথম পর্বে পড়ার সময় তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।  

১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন তিনি। এরপর কাকুল  পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন।  চেরাটে ট্রেনিং শেষ করার পর মুলতান ক্যাণ্টনমেন্টে  পোস্টিং হয় এটিএম হায়দারের। ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন। ১৯৬৯ সালের শেষ দিকে এটিএম হায়দারকে কুমিল্লা সেনানিবাসে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে তাকে বদলি করে ঢাকায় এবং ২ মাস পরে আবার  কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়।  

মুক্তিযুদ্ধের পরে আবু তাহের মোহাম্মদ  হায়দার কুমিল্লা সেনানিবাসে ১৩ ইস্টবেঙ্গল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদ পান এবং চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ৮ম বেঙ্গলের কমান্ডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে বাবার জরুরি টেলিগ্রাম পেয়ে তিনি ঢাকায় যান এবং জেনারেল খালেদ মোশাররফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর এক অভ্যুত্থানে হত্যা করা হয় আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দার, বীর উত্তমকে। 

তথ্যসূত্র:

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র: ১০ম খণ্ড

মুক্তিযুদ্ধে মেজর হায়দার ও তার বিয়োগান্ত বিদায়/ জহিরুল ইসলাম

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস: সেক্টর ২

আহমাদ ইশতিয়াক

[email protected]

Comments

The Daily Star  | English

Rooppur Nuclear Power Plant: First unit to start production in Dec

One of the two units of the Rooppur Nuclear Power Plant will be commissioned this December if transmission lines are ready although the deadline for the project’s completion has been extended to 2027.

3h ago