শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
একুশের অমর গানের রচয়িতা আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্ত্রী সেলিমা আফরোজ চৌধুরীর কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে তার মরদেহ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। এরপর সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়।
এর আগে সকালে বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ গ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক।
ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতিটি ধাপে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া গাফ্ফার চৌধুরীর প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য তার মরদেহ বিকেল ৩টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়।
বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের টেনিস গ্রাউন্ডে তার জানাজা সম্পন্ন হয়। সেখানে সাংবাদিকরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ দাফন করা হয়।
গত ১৯ মে ৮৮ বছর বয়সে লন্ডনের একটি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এই স্বনামধন্য লেখক, সাংবাদিক ও গীতিকার।
পরের দিন ২০ মে লন্ডনের ব্রিক লেন মসজিদে তার প্রথম নমাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর সেখানে বসবাসরত বাঙালি ও ভক্ত-অনুরাগীরা তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
১৯৭৪ সাল থেকে লন্ডনে বসবাস করলেও মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার পক্ষে গাফ্ফার চৌধুরীর কলম সোচ্চার ছিল বরাবর। প্রবাসে থেকেও ঢাকার পত্রিকাগুলোয় তিনি রাজনৈতিক ধারাভাষ্যের পাশাপাশি সমকালীন নানান বিষয়ে লিখে গেছেন। রচনা করেছেন কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, স্মৃতিকথা ও প্রবন্ধ।
বিশেষ করে, গত শতকের আশির দশকজুড়ে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের আমলে গাফ্ফার চৌধুরীর লেখা কলাম দেশের সব রাজনীতি-সচেতন পাঠকের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
এভাবেই বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবী পরিমণ্ডলে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক পরিচিত নাম।
Comments