ব্যর্থতা ঢাকতে সরকার শহীদ জিয়ার কবর নিয়ে কুরুচিকর ইস্যু তৈরি করেছে: মির্জা ফখরুল
করোনা ও ডেঙ্গু মোকাবিলাসহ জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ এই সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে শহীদ জিয়ার কবর নিয়ে কুরুচিকর, অরাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সোমবার দুপুরে তিনি ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়িতে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, 'জিয়ার কবর নিয়ে এখন কথা বলার কোনো মানেই হয় না। করোনার কারণে দেশে এই দুবছরে বেকারত্ব বেড়েছে, অনেক মানুষ কাজের অভাবে দিশেহারা। এসব থেকে উত্তরণের চিন্তা না করে সরকার জিয়ার কবর নিয়ে মেতে উঠেছে। এই সরকারের ওপর এজন্যই মানুষের আস্থা নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'এখন এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সরকারের মনোযোগ দেওয়া উচিত।'
গত ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানীর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত এক সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছিলেন, 'বিএনপির গঠনতন্ত্র মেনে তারেক রহমানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।'
এই বক্তব্যের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মির্জা ফখরুল তাকে বিভ্রান্তিকর কথা না বলতে অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, 'ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সাহেবের বয়স হয়ে গেছে। তিনি অত্যন্ত সম্মানিত জ্ঞানী মানুষ। বর্তমান ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। কিন্তু তার বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে কিছু সময় উল্টোপাল্টা কথা বলছেন, যা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনকে ব্যাহত করছে।'
'বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তার মন্তব্যটা যুক্তিসঙ্গত না,' যোগ করেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, 'গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে আছেন। তারেক রহমান আগেও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। দলের মধ্য থেকেই তিনি ধারাবাহিকভাবে এই পদে এসেছেন। তিনি বিদেশে থেকেও সফলতার সঙ্গে জাতীয়তাবাদী দলকে সুসংগঠিত করছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'গত ১২ বছর ধরে শুধু বিএনপি নয়, গোটা দেশ একটা বড় রাজনৈতিক সংকট, অস্তিত্বের সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে আমাদের অর্জন ছিল স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং পরবর্তীতে নব্বইয়ের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে গণতন্ত্র অর্জন করেছিলাম, এই পুরো বিষয়গুলো আওয়ামী লীগ ধ্বংস করছে।'
দলের চেয়ারপারসনের কারাগারে থাকা বিএনপির জন্য বড় সংকট সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশের বাইরে নির্বাসিত করা হয়েছে। এরপরেও তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিটি নেতাকর্মীর সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রেখেছেন। এখানে নেতৃত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না।'
'তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী যে, অচিরেই দল সুসংগঠিত হবে এবং একটা আন্দোলন সৃষ্টি করতে পারবো। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী-ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।'
Comments