আর ১৪ মিটার ভাঙলেই পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে একমাত্র স্কুলটি
দিন দিন ভয়ঙ্কর হচ্ছে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গি এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙন। ভাঙনের হুমকিতে আছে- ওই এলাকার একমাত্র স্কুল সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর ১৪ মিটার ভাঙলেই পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে স্কুলটি।
নতুন করে ভাঙন দেখা দেওয়ায় আজ রোববার অন্তত ৫০ শতাংশ ফসলি জমি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। গত দুই মাস আগেও স্কুলটি থেকে ৬০ মিটার দূরে ছিল পদ্মা নদী। কিন্তু, ভাঙতে ভাঙতে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে- যে কোনো মুহূর্তে পদ্মায় বিলীন হতে পারে স্কুলটি।
স্থানীয়রা জানান, আজ সকাল ৭টা থেকে ভাঙন শুরু হয়। এ সময় ৫০ শতাংশ ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন কবলিত স্থান থেকে হতে সবাই কাঁচা ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রশিদ শেখ (৫৬) বলেন, 'কতজন আইলো, দেখলো কেউ এটা ব্যবস্থাও নিলো না। কাঁচা ধান কাইডা নিব্যার লাগছি ভাংগনের জায়গা থ্যা।'
সবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মা রাজিয়া বেগম বলেন, 'সরকারি স্কুলটি নদীতে চলে গেলে আমাদের সন্তানদের কীভাবে লেখাপড়া করাব তাই নিয়ে চিন্তায় আছি। স্কুলটি রক্ষায় কেউ একটু ব্যবস্থা নিলো না।'
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল্লাহ জানান, দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙন ঝুঁকি আছে স্কুলটি।
তিনি বলেন, '১৯৭০ সালে স্থাপিত স্কুলটি ১৯৯৭ সালে ভাঙনের কবলে পড়ে। পরে সেখানে থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে সরিয়ে বর্তমান জায়গায় স্থাপন করা হয়। এখানে মাত্র ২০ শতাংশ জমির ওপর দুটি টিনের ঘরে চলছিল স্কুলের কার্যক্রম। এখানে ৪ জন শিক্ষক ও ১৫০ জন শিক্ষার্থী আছে। যেভাবে ভাঙন অব্যাহত আছে তাতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছি।'
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল মোহাম্মদ বাহউদ্দীন বলেন, 'ভাঙন রোধে সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। স্কুলের ঘর দুটি স্থানান্তর করা মতো। ভাঙন অব্যাহত থাকলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে ঘর দুটি ভেঙে সরিয়ে নিতে হবে।'
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা বলেন, 'সবুল্লা সিকদারের ডাঙ্গী এলাকায় ভাঙন কবলিত এলাকায় পদ্মার গভীরতা অনেক। আমরা মেপে দেখেছি ওই জায়গার গভীরতা ৫০ থেকে ৬০ ফুট। এ গভীর জায়গায় বালির বস্তা ফেলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়। এখানে পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণসহ স্থায়ী কাজ হওয়ার প্রয়োজন।'
তিনি আরও বলেন, 'এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া রয়েছে। ওই প্রকল্প অনুমোদন হলে কাজ শুরু করা হবে।'
Comments