‘জয়বাংলা’ আমার শেষ পরিচালনা তা কোথাও বলিনি: কাজী হায়াৎ
যান্ত্রিক এই শহরে সন্ধ্যা নেমেছে একটু আগেই। এফডিসির গেটের সামনে তখনও দর্শনার্থীদের পাশাপাশি 'এক্সট্রা' নামে পরিচিত শিল্পীদের আনাগোনা। প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেলো একটা উৎসব উৎসব আমেজ সারা এফডিসি জুড়ে।
প্রযোজক সমিতির অফিসের সামনে এসে উৎসব আমেজের আসল কারণ জানা গেল। পাশেই ৭ নম্বর ফ্লোরে চলছে খ্যাতিমান পরিচালক কাজী হায়াতের 'জয় বাংলা' সিনেমার শুটিং। ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকারি অনুদান পেয়েছে সিনেমাটি।
এটি কাজী হায়াতের পরিচালিত ৫১ নম্বর সিনেমা। টুঙ্গিপাড়া চলচ্চিত্রের ব্যানারে নির্মিত হচ্ছে এটি। সিনেমার প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করছেন বাপ্পী চৌধুরী ও জাহারা মিতু।
গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, এই সিনেমার পর আর সিনেমা নির্মাণ করবেন না কাজী হায়াৎ। 'জয়বাংলা' সিনেমার সেটে বসে দ্য ডেইলি স্টারকে কাজী হায়াৎ বলেন, '"জয়বাংলা" আমার শেষ পরিচালনা তা কোথাও বলিনি। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত অ্যাকশন-কাট বলতে চাই। আমার বয়সের কথা ভেবে অনেকেই হয়তো মনগড়া কথা বলছে, কেউ লিখেছে। সিনেমা ছাড়া আমার তো কোনো অস্তিত্ব নেই। আমার বেঁচে থাকার নিঃশ্বাসই হলো চলচ্চিত্র। কেনো বলবো আর সিনেমা নির্মাণ করবো না।'
সিনেমার গল্প নিতে তিনি বলেন, 'জয়বাংলা সিনেমার গল্প আবর্তিত হয়েছে ১৯৬৮ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মুক্তিযুদ্ধের একটা অধ্যায় দারুণভাবে বলা হয়েছে সিনেমায়। এই সিনেমায় রাজু চৌধুরী, রাকিবুল ইসলাম রাকিবের মতো পরিচালক আমার সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। সিনেমার গল্পে মোট ৩টি রবীন্দ্রসংগীত ব্যবহার করা হয়েছে। ভালো কিছু নির্মাণের প্রয়াস আছে, শেষ হলে বোঝা যাবে কেমন হলো।'
কথা শেষে কাজী হায়াৎ আবারও একটি দৃশ্যের শুটিংয়ে মনোযোগী হয়ে উঠলেন। সেই দৃশ্যে ছিলেন বাপ্পী, নাদের চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন। ২ বারে ঠিকঠাক হলো দৃশ্যায়ন।
শুটিং অবসরে বাপ্পী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাজী হায়াতের মতো গুণী পরিচালকের সিনেমায় অভিনয় আমার জন্য পরম পাওয়া। নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করছি কাজটি করে। আমার চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে পরিশ্রম করে যাচ্ছি।'
এফডিসিতে 'জয়বাংলা' সিনেমার শুটিং সেট থেকে বের হয়েই টুপটাপ বৃষ্টির মুখোমুখি। কিছুটা ভিজিয়েই গেলো বেপরোয়া বৃষ্টি। শীতল হাওয়ায় শুনশান রাতের এফডিসি কিছুটা অচেনা মনে হলো। যেন আজকের মতো উৎসব শেষ।
Comments