হল ছাড়ার নির্দেশ: ভোগান্তিতে কুয়েট শিক্ষার্থীরা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদ সুমনের বাড়ি নাটোরে। আজ শুক্রবার বিকেল ৪টা মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ পাওয়ার পর বাড়ি যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিটের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু পাননি।
খুলনায় থাকার মতো কোনো জায়গা নেই তার। হাতে তেমন টাকাও নেই।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'হঠাৎ করে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ায় এমন বিপাকে পড়েছি। এক আত্মীয়ের কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নিয়েছি। বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছি এখন।'
শুধু রাশেদ সুমনই নন, ৪টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ পেয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কুয়েটে পড়তে আসা অনেক শিক্ষার্থী ভোগান্তিতে পড়েছেন। দুপুর ২টার পর থেকেই শিক্ষার্থীরা হল থেকে বের হতে শুরু করেন।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রোবায়েত ফেরদৌস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার বাড়ি রাজশাহীর তানোরে। অনেক চেষ্টা করেও বাড়ি যাওয়ার টিকিট জোগাড় করতে পারিনি। খুলনার দৌলতপুরে এক আত্মীয়ের বাসায় রাতটা থাকার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। আগামীকাল টিকিটের ব্যবস্থা করে বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করব।'
লায়লা সিদ্দিকা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, 'আমার আর আমার বান্ধবীর বাড়ি পিরোজপুর। বাড়িতে পৌঁছাতে রাত হয়ে যাবে। সেই দুশ্চিন্তা তো আছেই। তার ওপর ১৩ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয় আসলেই খুলবে কি না, তা নিয়েও শঙ্কিত আমরা। করোনার কারণে এমনিতেই আমাদের পড়াশোনা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'
ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রুমানা আসাদ বলেন, 'আমি সাধারণত একা দূরে যাতায়াত করি না। হঠাৎ হল বন্ধ ঘোষণা করায় বিপদে পড়েছি। আমার ভাই বরিশাল থেকে আমাকে নিতে আসছেন। তিনি আসার আগ পর্যন্ত খুলনা শহরে অপেক্ষা করতে হবে আমাকে।'
এ ছাড়া, অনেক শিক্ষার্থী টিউশনের কারণে বাড়ি যাওয়া নিয়ে দ্বিধায় আছেন। তারা বিভিন্ন মেসে উঠার চেষ্টা করছেন বলে জানান দ্য ডেইলি স্টারকে।
আজ সকালে কুয়েট সিন্ডিকেট মিটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পরপরই বিকেল ৪টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের।
গত মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্তৃপক্ষ কুয়েট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
Comments