ক্যাম্পাস

কুয়েট অধ্যাপক সেলিম হোসাইনের মৃত্যুতে নানা প্রশ্ন

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. সেলিম হোসাইনের মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে তিনি মারা যান। তিনি কুয়েটের লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. সেলিম হোসাইনের মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে তিনি মারা যান। তিনি কুয়েটের লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন।

অভিযোগ উঠেছে, হলের ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচন নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার দুপুরে অধ্যাপক সেলিমের ওপর মানসিক নির্যাতন চালান। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তার মৃত্যুর খবর আসে।

এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে আজ থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আজ দুপুর ১২টার দিকে সাধারণ সভা করে কুয়েট শিক্ষক সমিতি। সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে সমিতির সভাপতি প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, বৃহস্পতিবার সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্বার বাংলার পাদদেশে প্রতিবাদ সভা এবং কালো ব্যাজ ধারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে সুষ্ঠু সমাধানের আগ পর্যন্ত ক্লাস ও ল্যাব কার্যক্রমে শিক্ষকরা অংশ নিবেন না। এ ছাড়া শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিষদের পরিচালক অধ্যপক ইসমাঈল সাইফুল্যাহ বলেন, 'এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনু্যায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

লালন শাহ হলের ডিসেম্বর মাসের ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচন নিয়ে কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একটি দল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে অধ্যাপক সেলিম হোসাইনকে নিয়ে তার চেম্বারে প্রবেশ করেন। এ সময় তার ওপর মানসিক নির্যাতন চালনো হয় বলে অভিযোগ তুলেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই শিক্ষকের কক্ষে প্রবেশ করেন। প্রায় ৪০ মিনিট পর তারা বেরিয়ে যান।

শিক্ষকের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বেলা ২টার কিছু আগে অধ্যাপক সেলিম দুপুরে খাবার খেতে ক্যাম্পাসের কাছে তার বাসায় যান। তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন যে তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তার মৃত্যুর কথা জানান।

শিক্ষকের স্ত্রী গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, বেলা সোয়া ১টার দিকে দুপুরের খাবার তৈরি রাখতে বলে তিনি ক্যাম্পাসে যান। আড়াইটা থেকে তার ল্যাব ক্লাস ছিল। ২টার কিছু আগে তিনি বাসায় ফিরে বাথরুমে যান। বেশ কিছুক্ষণ বাথরুম থেকে তার সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। দরজা ভেঙে দেখি তিনি স্তব্ধ হয়ে বসে আছেন।

তিনি আরও জানান, তার স্বামীর উচ্চ রক্তচাপ ছাড়া কোনো সমস্যা ছিল না। উচ্চ রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে ছিল। লোকমুখে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সঙ্গে হওয়া ঝামেলার কথা শুনেছেন।

এ ব্যাপারে কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে সেখানে যাইনি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকল্যাণ কমিটির সদস্য-সচিব। সে হিসেবেই সেখানে গিয়েছিলাম। হলে যিনিই প্রভোস্টের দায়িত্ব পান আমরা অফিসিয়ালি তার সঙ্গে দেখা করি। কিন্তু করোনার কারণে স্যারের সঙ্গে আগে দেখা করা হয়নি। এ ছাড়া বিজয়ের মাসে নানা কর্মসূচির ব্যাপারেও স্যারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। সেখানে স্যারের সঙ্গে স্বাভাবিক কথা হয়েছিল।'

Comments

The Daily Star  | English

Upazila Polls: AL, BNP struggle to keep a grip on grassroots

The upazila election has exposed how neither of the two major parties, the Awami League and BNP, has full control over the grassroots leaders.

1h ago