উত্তাপ-উত্তেজনায় ভরপুর ম্যাচে ইকুয়েডরের সঙ্গে ব্রাজিলের ড্র
ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে গেল ব্রাজিল। এরপর অল্প সময়ের মধ্যে দেখা মিলল দুই লাল কার্ডের। দুই দলই পরিণত হলো দশ জনে। ঘটনাবহুল এই প্রথমার্ধের পর নাটকীয়তার কমতি থাকল না দ্বিতীয়ার্ধেও। ভিএআর দখল করল কেন্দ্রবিন্দু। ৩২ ফাউলের লড়াইয়ে শেষদিকে গোল হজম করে পয়েন্ট খোয়াল তিতের শিষ্যরা।
বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ইকুয়েডরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করেছে ব্রাজিল। কাসেমিরোর লক্ষ্যভেদে ষষ্ঠ মিনিটে সফরকারীরা এগিয়ে যাওয়ার পর স্বাগতিকদের পক্ষে ৭৫তম মিনিটে গোল শোধ করেন ফেলিক্স তরেস।
ম্যাচে ভিএআরের ভূমিকা ছিল অনেক বড়। ১৫তম মিনিটে ইকুয়েডরের আলেক্সান্দার দমিঙ্গেজ ও ২০তম মিনিটে ব্রাজিলের এমারসনকে লাল কার্ড দেখানো হয় ভিএআরের সাহায্যে। দুবার লাল কার্ড দেখেও ভিএআরের কল্যাণে বেঁচে যান ব্রাজিলের গোলরক্ষক অ্যালিসন। একবার প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময়ে, আরেকবার দ্বিতীয়ার্ধের একদম শেষদিকে। ইকুয়েডরকে দুটি পেনাল্টি দেওয়া হলেও ভিএআরে পাল্টে যায় সিদ্ধান্ত। তাই এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকছে বিতর্ক ওঠার সম্ভাবনা।
নানা ঘটনায় বারবার খেলা বন্ধ হওয়ায় খেলার স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হয়। পুষিয়ে নিতে প্রথমার্ধ শেষে বাড়তি খেলা হয় ১০ মিনিট। দ্বিতীয়ার্ধে সেটা বেড়ে হয় ১২ মিনিট।
চোটে পড়া নেইমারকে ছাড়া খেলতে নেমে ষষ্ঠ মিনিটে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ফিলিপ কৌতিনহোর ক্রসে মাথেয়াস কুনহার হেড বাধা পায় ইকুয়েডরের ডিফেন্ডার পিয়েরো হিনকাপিয়ের গায়ে। গোললাইনের ঠিক সামনে থাকা বল কোনোক্রমে জালে ঠেলে দেন কাসেমিরো।
১৫তম মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ইকুয়েডরের গোলরক্ষক দমিঙ্গেজ। বল বিপদমুক্তের চেষ্টা করতে গিয়ে তার বুট লাগে কুনহার গলায়। বিপজ্জনক এই ফাউলের জন্য ভিএআরের সাহায্যে তাকে বহিষ্কার করেন রেফারি। পাঁচ মিনিট পর লাল কার্ড পান ব্রাজিলের ডিফেন্ডার এমারসন। এটি ছিল তার দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই আগের হলুদ কার্ড দেখেন তিনি।
২৬তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে বেরিয়ে প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখে দেন অ্যালিসন। বলে শট নেওয়ার পর তার পা লাগে এন্নার ভ্যালেন্সিয়ার মাথায়। প্রথমে তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হলেও ভিএআরে পাল্টে যায় সিদ্ধান্ত।
বিরতির পর ম্যাচের ৫৫তম মিনিটে ইকুয়েডরের পেরভিস এস্তুপিনিয়ান ডি-বক্সের ভেতর পড়ে যান। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন রাফিনহা। পেনাল্টির বাঁশি বাজানোর পর ভিএআরে অবশ্য তা টেকেনি। তবে ৭৫তম মিনিটে হতাশ হতে হয়নি স্বাগতিকদের। সমতাসূচক গোলের দেখা পায় তারা। গঞ্জালো প্লাতার কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে জাল কাঁপান তরেস।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে আবার ছড়ায় উত্তাপ ও উত্তেজনা। বল বিপদমুক্ত করার সময় অ্যালিসনের হাত লাগে আইয়ারতন প্রেসিয়েদোর মুখে। ব্রাজিল গোলরক্ষককে লাল কার্ড দেখানোর পাশাপাশি ইকুয়েডরকে পেনাল্টি দেন রেফারি। কিন্তু সফরকারীরা প্রতিবাদ জানালে দীর্ঘ সময় ভিএআরে দেখে দুটি সিদ্ধান্তই বাতিল করে দেন তিনি। তাতে অ্যালিসন যেমন মাঠে টিকে যান, তেমনি ইকুয়েডর হারায় জয়ের সুযোগ।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে সবার আগে কাতার বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করা ব্রাজিল ধরে রেখেছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান। ১৪ ম্যাচে ১১ জয় ও ৩ ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৩৬। অন্যদিকে, ১৫ ম্যাচে ৭ জয় ও ৩ ড্রয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে ইকুয়েডরের অবস্থান তিনে।
Comments