‘ভালো কাজে পুরস্কার পাবেন, খারাপ কাজে সম্পৃক্ত হলে ক্ষমা নেই’

দেশের বয়স্ক কেউ যাতে টিকা থেকে বাদ না যায়, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা জনগণের শাসক নয়, সেবক হিসেবে কাজ করবে। তাদেরকে ভালো কাজের জন্য যেমন পুরস্কৃত করা হবে, তেমনি মন্দ কাজের জন্যও শাস্তি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
PM.jpg
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি ফাইল ফটো

দেশের বয়স্ক কেউ যাতে টিকা থেকে বাদ না যায়, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা জনগণের শাসক নয়, সেবক হিসেবে কাজ করবে। তাদেরকে ভালো কাজের জন্য যেমন পুরস্কৃত করা হবে, তেমনি মন্দ কাজের জন্যও শাস্তি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন কেনা এবং দেওয়া শুরু হয়েছে। ব্যাপকভাবে ভ্যাকসিন দিয়ে দিতে হবে, যাতে দেশের সকলেই সুরক্ষিত থাকে। ইতোমধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের পরিবার শুধু নয়, তাদের বাড়িতে যারা কাজ করে তাদেরকেও ভ্যাকসিন দিয়ে দেওয়া হয়। তাতে সবাই সুরক্ষিত থাকতে পারবে।'

তিনি বলেন, 'এর জন্য যত টাকা লাগবে, যত ভ্যাকসিন দরকার হয় কিনব এবং বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আমরা তৈরি করব, যাতে মানুষের কোনো অসুবিধা না হয়।'

শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার সকালে 'জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস' উদযাপন এবং 'জনপ্রশাসন পদক ২০২০ ও ২০২১' প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ গ্রহণ করেন।

সরকার প্রধান বলেন, 'ইতোমধ্যে প্রায় ১ কোটি ৮৭ লাখ মানুষ টিকা পেয়েছে। বাংলাদেশের বয়স্ক কোনো মানুষ টিকা প্রাপ্তি থেকে বাদ যাবে না। ছাত্র-শিক্ষক থেকে শুরু করে সকলের জন্যই আমরা এই টিকা ক্রয় করতে থাকব। সবাই যাতে টিকা পায় সেই ব্যবস্থাও আমরা অবশ্যই করব।'

তিনি বলেন, 'আজকে অল্প সময়ের মধ্যে যে উন্নয়ন এবং বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হলো, এটা আমাদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রত্যেকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন বলেই হয়েছে। আমরা যে পরিকল্পনাগুলো নিয়েছি সেগুলো সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছেন এবং মানুষ তার সুফলটা পেয়েছে বলেই দেশের উন্নতি সম্ভব হয়েছে।' তিনি এজন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী এসময় ১৯৭৫ সালের ১০ জানুয়ারি পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে জাতির পিতার ভাষণের উদ্ধৃতি তুলে ধরে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মানুষের সেবা করার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের আমি অনুরোধ করি, যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে তাদের সেবা করুন, যাদের অর্থে আজকে আমরা চলছি, তাদের যাতে কষ্ট না হয় তার দিকে খেয়াল রাখুন। যারা অন্যায় করবে তাদের অবশ্যই আপনারা কঠোর হস্তে দমন করবেন। কিন্তু সাবধান একটা নিরপরাধ লোকের ওপর যেন অত্যাচার না হয়। তাহলে আল্লাহর আরশ পর্যন্ত কেঁপে উঠবে। আপনারা সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। আপনারা যদি অত্যাচার করেন শেষ পর্যন্ত আমাকেও আল্লাহর কাছে তার জবাবদিহি করতে হবে। কারণ আমি আপনাদের নেতা আমারও সেখানে দায়িত্ব রয়েছে। আপনাদের প্রত্যেকটি কাজের দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত আমার ঘাড়ে চাপে। আমার সহকর্মীদের ঘাড়েও চাপে। এজন্য আপনাদের কাছে আমার আবেদন রইল, অনুরোধ রইল, আদেশ রইল- আপনারা মানুষের সেবা করুন। মানুষের সেবার মতো শান্তি দুনিয়ার আর কিছুতে হয় না। একজন গরিব যদি হাত তুলে আপনার জন্য দোয়া করেন আল্লাহ সেটা কবুল করে নেন।'

তিনি করোনার মধ্যেও বাংলাদেশের অগ্রগতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি করোনা আক্রান্তদের সেবা করতে গিয়ে গত এক দেড় বছরে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্য এবং তার দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

প্রধানমন্ত্রী এসময় কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, 'ভালো কাজের যেমন পুরস্কার পাবেন, তেমনি কেউ যদি খারাপ কাজে সম্পৃক্ত হন তাহলে তাদের ক্ষমা নেই। তাদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে। এই শৃঙ্খলাটা থাকতে হবে। এই নিয়মটা থাকতে হবে এবং সেটাও আমরা করব। ইতোমধ্যে সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের পরিবার ও তাদের বাড়ির লোকজনকেও দিতে বলেছি।'

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে প্রশাসনের উন্নয়নের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গৃহীত উদ্যোগের বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের লেখা দুটি স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক ২০২০ এবং ২০২১ সালের জনপ্রশাসন পদক বিজয়ীদের মাঝে স্বর্ণ পদক, চেক, ক্রেস্ট এবং সনদ বিতরণ করেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলি আজম স্বাগত বক্তৃতা করেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডের ওপর অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রচার করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Mercury hits 42.7°C in Chuadanga, season's highest

Chuadanga today recorded the highest temperature of this season at 42.7 degree Celsius

1h ago