দশম শ্রেণির ছাত্রের সঙ্গে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে দিলেন শিক্ষক

চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত নিজের ছেলের বিয়ে দিয়েছেন তার স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত এক ছাত্রীর সঙ্গে।
বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত নিজের ছেলের বিয়ে দিয়েছেন তার স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত এক ছাত্রীর সঙ্গে।

বিষয়টি কয়েকদিন গোপন থাকলেও জানাজানি হয়ে যায়, যখন নতুন বর শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যায়।

বিষয়টি স্বীকারও করেছেন ওই শিক্ষক শামসুন্নাহার।

তার ছেলে যদুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে।

আজ সোমবার সকালে জেলা সদরের বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরে জমিনে দেখা যায়, পঞ্চম শ্রেণির কক্ষে প্রথম বেঞ্চে বসে ক্লাস করছে 'নববধূ' ওই ছাত্রী। তার হাতে এখনও রয়েছে বিয়ের মেহেদির রঙ।

বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই সে জানান, ৮ দিন আগে তার বিয়ে হয়েছে।

সে বলে, 'এখন আমার বর আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। আর আমি ক্লাস করতে এসেছি।'

ওই ছাত্রী জানায়, বিয়ের দিন স্কুলের ম্যাডাম (তার শাশুড়ি) তাদের বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন। পরিবারের সব সদস্যের উপস্থিতিতেই বিয়ে হয়েছে।

সে কোনো প্রতিবাদ করেছিল কি না জানতে চাইলে মেয়েটি বলে, প্রতিবাদ করেছিল, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

ওই ছাত্রীর সঙ্গে আলাপকালে ক্লাসেই উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক শামসুন্নাহার। তিনি প্রথমে বেশ ঘাবড়ে গেলেও পরে নিজেকে সামলে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি জানান, তার মা খুব অসুস্থ। মায়ের ইচ্ছা নাতির বউ দেখবেন। মূলত সেই ইচ্ছা পূরণ করতেই ছেলের বিয়ে দিয়েছেন তিনি।

গত ২০ মার্চ এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, 'ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে হয়েছে। ছেলে ও মেয়ের বয়স কম হওয়ায় রেজিস্ট্রি হয়নি।'

একজন শিক্ষক হয়ে কীভাবে তিনি একটি বাল্যবিয়ের আয়োজন করলেন জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

এই বিয়ে পড়িয়েছেন বেগমপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ও বেগমপুর ইউনিয়নের কাজি মফিজুল ইসলাম।

তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বাল্য বিয়ে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, 'আমি কোনো বাল্য বিয়ে পড়াইনি। সব কাগজপত্র যাচাই করে তবেই বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেছি।'

ছেলের মায়ের মন্তব্য উদ্ধৃত করে কোন কোন কাগজ যাচাই করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমার আর কিছু বলার নেই।'

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়ার মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি অবাক হয়ে বলেন, 'একজন শিক্ষক হিসেবে তিনি কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
Impact of poverty on child marriages in Rasulpur

The child brides of Rasulpur

As Meem tended to the child, a group of girls around her age strolled past the yard.

13h ago