‘জাবি ছাত্রলীগ নেতার গুলিতে’ সহযোগী আহত

সাভারের আশুলিয়া পানধোয়া এলাকায় আবুল হোসেন (৪০) নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে তিনি মাদক চোরাকারবারিতে জড়িত।

আজ শুক্রবার দুপুরে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, আবুল হোসেনকে পুলিশ হেফাজতে রেখে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পানধোয়া পূর্বপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক ড. মনসুর আলীর বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে পানধোয়া পূর্বপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা ডেইলি স্টারকে বলেন, আবুল হোসেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম ওসমান গণী মোল্লার সহযোগী হিসেবে পরিচিত। গতকাল শামীমের ছোড়া গুলিতেই তিনি আহত হয়েছেন।

তারা আরও জানিয়েছেন, আবুল মাদক চোরাকারবার চক্রের সক্রিয় সদস্য। তার বাড়ি আশুলিয়ার গোকুলনগর এলাকা। তারা বাবা মৃত বাদশা মিয়া৷

এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মনসুর আলী বলেন, 'আমরা একটি সোসাইটির মধ্যে বসবাস করি। আমাদের ছেলে-মেয়ে রয়েছে। বেশ কয়েক দিন ধরে এখানে মাদক চোরাকারবারিদের উপস্থিতি লক্ষ করছিলাম। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সাত জন আমার বাসার সামনে মোটরসাইকেল রেখে আড্ডা দিচ্ছিল। আমি মোটরসাইকেল অন্য রাখতে বলায় তারা আমার ওপর চড়ায় হয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। আমি প্রতিবাদ করলে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আমাকে লক্ষ করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ সময় আবুল হোসেন নামে ওই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। শুনেছি আবুল হোসেন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।'

মনসুর আলী জানান, এক বছর আগে তার প্রতিবেশী অধ্যাপক হাবিবুল্লাহর ওপর চড়াও হয়েছিলেন শামীম। হাবিবুল্লাহ বর্তমানে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) ডেপুটেশনে আছেন। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, গত এক বছর আগে শামীমের নেতৃত্বে চক্রটি আমাকে মারতে চেয়েছিল। তখন চুপ করে ছিলাম। ধারণা করেছিলাম, বিষয়টি সাডেন ইনসিডেন্ট।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

গুলি ছোড়ার অভিযোগের বিষেয়ে জানতে চাইলে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু বিস্তারিত জানতে পারিনি। বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ড. মনসুর আলীর অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন জাবি ছাত্রলীগ নেতা শামীমের গুলিতে আবুল আহত হয়েছেন। সাত জন ঘটনাস্থলে ছিলেন। আমরা পাঁচ জনের নাম জানতে পেরেছি। তাদের আটকের চেষ্টা করছি। আবুলকে আমাদের হেফাজতে রেখে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।