শাবিপ্রবির ছাত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের পদত্যাগ
ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ (লিজা)। তার জায়গায় নতুন প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরীকে।
আজ রোববার রাতে সিন্ডিকেটের জরুরি বৈঠকে শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এ কথা জানান।
এর আগে শাবিপ্রবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেছেন উপাচার্য। আগামীকাল সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে হলটির আবাসিক এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে ফোনে আলাপকালে হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজা খারাপ ব্যাবহার করেছেন—এমন অভিযোগে তার ও সহকারী প্রাধ্যক্ষ রাবেয়া তোড়ার পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলনে নামেন ছাত্রীরা।
শুক্রবার দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠক শেষে উপাচার্য বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানালেও শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি মানা হয়নি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান।
ওইদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দাবি ৩টি মানার জন্য শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সময় দিয়ে আন্দোলন আপাতত স্থগিত করেন ছাত্রীরা।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তাদের এ ৩ দফা দাবি না মানায় শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে নামেন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে 'এক কিলোমিটার সড়ক' অবরোধ করেন।
৭টার দিকে অবরোধ চলাকালীন সময়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরীয় কমিটির সামনে ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা।
আজ রোববার বেলা ৩টার দিকে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে ডিনদের এক সভায় যাওয়ার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়লে তার সঙ্গে থাকা শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে আশ্রয় নেন। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ওই ভবনের প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
অবরুদ্ধ উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে মুক্ত করতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। পরে উপাচার্জকে তালা ভেঙে ভবন থেকে বের করে নিরাপদে তার বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জে অন্তত ৩০ জন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
আন্দোকারী শিক্ষার্থীরা জানান, সাউন্ড গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
Comments