রুয়েটে গাছ কাটা বন্ধের আহ্বান পরিবেশ আন্দোলন ঐক্য পরিষদের
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে 'উন্নয়ন প্রকল্পের' নামে অর্ধ শতাব্দীরও বেশি পুরনো গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে পরিবেশ আন্দোলন ঐক্য পরিষদ।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করে তারা।
মানববন্ধনে পরিবেশ আন্দোলন ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সচিব রেজাউল করিম মহব্বত বলেন, 'আমরা সুনির্দিষ্টভাবে অর্ধ শতাব্দীর বেশি পুরনো এই গাছ কাটার ব্যাখা চাই। এসব গাছ থেকে রুয়েট ক্যাম্পাস যা পেয়েছে তা অপূরনীয়। অথচ এগুলো নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'রাজশাহী একটি চরমভাবাপন্ন এলাকা। আবহাওয়া অনুকূলে রাখার জন্য যেখানে পরিকল্পিতভাবে পুরো রাজশাহী জুড়ে গাছ লাগানো হচ্ছে, সেখানে রুয়েটের মতো জায়গায় স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গাছ কেটে রাজশাহীকে শঙ্কায় ফেলে দেওয়া হচ্ছে।'
অনতিবিলম্বে গাছ কাটার এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দাবি জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক পর্যটক তানভীর অপু বলেন, 'রুয়েট এতো ছোট জায়গা নয় যে, কয়েকটা ভবন নির্মাণের জন্য এভাবে নির্বিচারে পুরানো গাছ কেটে ফেলার প্রয়োজন পড়ে। আরও অনেক জায়গা আছে। সেখানে ভবন নির্মাণ করা যেতে পারে।'
সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গাছ কাটা হচ্ছে না।
গাছ কাটার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, `'আমরাও চাই রাজশাহীর আবহাওয়া ও পরিবেশ ভালো থাকুক। তবে, রুয়েটের শিক্ষার্থীদের আবাসন ও একাডেমিক ক্লাসরুমের সংকট নিরসন করতেই এই উন্নয়ন প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গাছ কাটার কোনো প্রয়োজন নেই। হাতেগোনা কয়েকটি ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে নিরুপায় হয়েই আমাদেরকে গাছগুলো কাটতে হচ্ছে।'
এ ছাড়া, গাছ কাটার ক্ষতিপূরণের লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ গত এক বছর ধরে ক্যাম্পাসে প্রায় এক হাজার গাছ রোপণ করছে এবং প্রয়োজনে আরও এক হাজার গাছ রোপণ করা হবে বলে জানান তিনি।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এএইচএম মাহবুবুর রহমান বলেন, 'গাছ লাগালেও পুরনো গাছ কাটার ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব হয় না।'
সম্প্রতি সরকার রুয়েটের ৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ১০টি ১০ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। সেজন্য মোট ৫০টি গাছ কাটা হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে ১৫টি গাছ কাটা শেষ হয়েছে। তবে, বন বিভাগ থেকে এ বিষয়ে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বন কর্মকর্তারা।
Comments