কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মেসেঞ্জারের তর্ক’ থেকে ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের মারামারি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ফেসবুক ‘মেসেঞ্জারে তর্ক’ ছাত্রলীগের ২ হলের কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ফেসবুক 'মেসেঞ্জারে তর্ক' ছাত্রলীগের ২ হলের কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত প্রায় সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল ছাত্রলীগের নবীন কর্মীদের মধ্যে মারামারি হয়।

কয়েকটি সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মেসেঞ্জার গ্রুপে কাউসার হোসেন আপনের সঙ্গে এক নারী সহপাঠীর তর্ক হয়। ওই সহপাঠীর স্বামী অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল ছাত্রলীগের কর্মী। আপনের সঙ্গে তর্কের ব্যাপারে সেই নারী শিক্ষার্থী তার স্বামীকে জানালে তিনি তার হলের বন্ধুদের জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টরা ডেইলি স্টারকে জানান, 'তর্ক' হওয়ার ব্যাপারটি জেনে আপনকে থাপ্পড় দেয় আইসিটি বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রবিন হোসেন ও রসায়ন বিভাগের একই ব্যাচের আলভির ভূঁইয়া। তারা ২ জনই শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল ছাত্রলীগের নবীন কর্মী।

এ প্রসঙ্গে কাউসার হোসেন আপন গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমরা গেটে দাঁড়িয়ে ছিলাম। দত্ত হলের ২ ছেলে এসে আমাকে থাপ্পড় মারে। পরে আমি বন্ধু গালিব ও সিনিয়রদের ঘটনাটি জানাই। তারা গিয়ে আমাকে মারার কারণ জানতে চাইলে দত্ত হলের ১৫-২০ জন গালিব, মুজাহিদসহ আমাদের আবার মারে।'

এ দিকে, আপনের ডেকে আনা বন্ধু গালিব ও অন্যান্যরা থাকেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে। ফলে, ঘটনাটি ২ হলের ছাত্রলীগ কর্মীদের মারামারিতে রূপ নেয়।

তবে যে নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে মেসেঞ্জারে 'তর্ক'র জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, 'মেসেঞ্জার গ্রুপের কথা কাটাকাটির সূত্র ধরে যে মারামারির কথা বলা হচ্ছে তার সঙ্গে আমার ও আমার স্বামীর কোনো সম্পৃক্ততা নাই। যারা এসব বলছে আমি তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিবো।'

এ ছাড়া, আপনকে মারধরে অভিযুক্ত আলভীরও মেসেঞ্জার গ্রুপের সূত্র ধরে মারধরের ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন।

সূত্র আরও জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ এই মারামারির মীমাংসা করতে 'দলীয় কার্যালয়ে' গেলে ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। সেখানে ২ হলের নেতৃবৃন্দ বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে হলের দিকে ফিরে গেলে হলগুলোতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

দত্ত হল ও বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা খাটের মশারি টানানোর রড, লাঠিসোটা ইত্যাদি নিয়ে হল থেকে দলবেঁধে নেমে এলে শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ তাদের নিবৃত করেন।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনা কী নিয়ে ঘটেছে এর প্রকৃত কারণ এখনও আমি জানি না। উত্তেজনা কমলে আমরা বসে মিটমাট করবো।'

সম্প্রতি নানা তুচ্ছ ঘটনা কুবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে জড়ানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'হলগুলোর দায়িত্বে যারা আছেন তারা হলের সবকিছু ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে হল ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে দেবো।'

সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমরা ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়েছি। উভয়পক্ষকে শান্ত করে হলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল (আজ) প্রক্টরিয়াল বডি এ নিয়ে বসবে, কারো দোষ থাকলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
national election

US sanctions against Rab to stay: US State Department

The United States has said the sanctions imposed against Bangladesh's elite force Rab are not being withdrawn

1h ago