দুটি রেকর্ডের ম্যাচে কেনিয়াকে বিধ্বস্ত করল বাংলাদেশের মেয়েরা
বিপর্যয়ে পড়া দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিলেন সালমা খাতুন ও রিতু মণি। সপ্তম উইকেট জুটিতে তারা গড়লেন বিশ্বরেকর্ড। পরে নাহিদা আক্তার বল হাতে তৈরি করলেন আরেক কীর্তি। তার তোপে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল কেনিয়ার ব্যাটিং। কমনওয়েলথ গেমসে মেয়েদের ক্রিকেটের বাছাই পর্বে টানা দ্বিতীয় জয় পেল বাংলাদেশ।
বুধবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে কেনিয়াকে ৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেছে টাইগ্রেসরা। কিনরারা একাডেমি ওভালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৬ উইকেটে ১২৫ রান। জবাবে ৪৪ বল বাকি থাকতে কেনিয়া গুঁড়িয়ে যায় কেবল ৪৫ রানে।
সপ্তম উইকেটে ৬৬ বলে ৭৫ রানের জুটি গড়েন সালমা ও রিতু। মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে আগের রেকর্ড ছিল তানজানিয়ার মনিকা প্যাসকেল ও নাসরা সাইদির দখলে। ২০১৯ সালে রুয়ান্ডার মাটিতে উগান্ডার বিপক্ষে সপ্তম উইকেটে তারা যোগ করেছিলেন ৭২ রান।
কেনিয়াকে ধসিয়ে দেওয়া নাহিদা জেতেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। এই বাঁহাতি স্পিনার ৩.৪ ওভারে ৫ উইকেট নেন ১২ রানে। মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড এটি। আগের কীর্তি ছিল পান্না ঘোষের দখলে। ২০১৮ সালে নেদারল্যান্ডসের মাটিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি ৫ উইকেট পেয়েছিলেন ১৬ রানে।
তৃতীয় ওভারে ওপেনার শামিমা সুলতানার উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আরেক ওপেনার মুর্শিদা খাতুন শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। তার কল্যাণে ৫ ওভারে ৪০ রান ওঠে স্কোরবোর্ডে। কিন্তু এরপরই ঘটে ছন্দপতন। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম ডেলিভারিতে মার্সিলিন ওচিয়েং এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানাকে। তিন বলের ব্যবধানে রুমানা আহমেদকেও ফেরান তিনি।
উইকেট উৎসবে এরপর যোগ দেন কুইন্টর অ্যাবেল। ১৯ বলে ৪ চারে ২৬ করা মুর্শিদাকে ফিরতি ক্যাচে বিদায় করেন তিনি। নিজের পরের ওভারে পরপর দুই বলে অ্যাবেল শিকার করেন সোবহানা মোস্তারি ও ফারজানা হকের উইকেট। ফলে ৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে মহাবিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।
৯ ওভার শেষে দলের সংগ্রহ যখন ৬ উইকেটে ৫০ রান, তখন জুটি বাঁধেন সালমা ও রিতু। তাদেরকে আর আলাদা করতে পারেনি কেনিয়ার বোলাররা। বিপর্যয় সামলানোর পর রানের চাকা সচল রেখে বিশ্বরেকর্ড গড়েন তারা। সালমা ৩২ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন। রিতু খেলেন টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ারসেরা ৩৪ বলে ৩৯ রানের অপরাজিত ইনিংস।
লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় কেনিয়া। ভেরোনিকা আবুগাকে রানের খাতা খুলতে দেননি সালমা। এই আঘাত সামলে কার্যকর কোনো জুটি গড়তে পারেনি দলটি। মাত্র ১২.৪ ওভারে শেষ হয় তাদের ইনিংস।
কেনিয়ার হয়ে দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন কেবল শ্যারন জুমা। ২০ বলে ২৪ রান করে তিনি হন সানজিদা আক্তার মেঘলার শিকার। দলটির মিডল ও লোয়ার অর্ডার একাই ভেঙে দেন নাহিদা। একে একে তিনি সাজঘরে পাঠান অধিনায়ক মার্গারেট এনগোচে, ইস্টার ওয়াচিরা, ওচিয়েং, ভেনেসা ওকো ও ল্যাভেন্ডা ইডাম্বোকে।
আগামী ২৩ জানুয়ারি বাছাই পর্বের তৃতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। পরদিন শেষ ম্যাচের তাদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। পাঁচ দলের বাছাইয়ে কেবল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দল পাবে মূল পর্বের টিকেট।
Comments