আ. লীগের মধ্যে মতবিরোধ থাকবে না ভাবাদের স্বর্গে বা নরকে বাস করা উচিত: আল মাহমুদ স্বপন

চলতি বছরের শেষের দিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে পারে। আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচন ও জাতীয় কাউন্সিল ঘিরে তৃণমূল পর্যায় থেকে দল গোছাতে শুরু করেছে দেশের সবচেয়ে পুরনো এই দলটি।

চলতি বছরের শেষের দিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে পারে। আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচন ও জাতীয় কাউন্সিল ঘিরে তৃণমূল পর্যায় থেকে দল গোছাতে শুরু করেছে দেশের সবচেয়ে পুরনো এই দলটি।

কাউন্সিল ও নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি কেমন এবং তাদের দলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের সঙ্গে।

আপনাদের ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে মূল আলোচনার বিষয় কী ছিল?

জাতীয় কাউন্সিল সময় মতো হবে এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মিটিংয়ে মূলত তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় কাউন্সিল নিয়ে কথা হয়েছে।

দলীয় সভানেত্রী আগামী সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে জেলা, মহানগরগুলোর কাউন্সিল শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।

আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেবো। কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামী লীগের কোনো দায়িত্বে আসতে পারবে না, এটা সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা কী?

আমরা আশাবাদী বিএনপি নির্বাচনে আসবে। ১৪ দল কোনো নির্বাচনী জোট না। এটি একটি আদর্শিক জোট। নির্বাচন নিয়ে আমরা পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছি।

নির্বাচনে বিএনপি না আসলে তখন আমরা ঠিক করব যে ১৪ দলের কৌশল কী হবে। বামদলগুলো আমাদের প্রতিপক্ষ হবে কি না, আমরা নির্বাচনের সময়-পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেব।

আমাদের আগাম কোনো কৌশল নেই।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া আরফানুল হক রিফাত মাদকের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তালিকায়ও তার নাম আছে। তিনি কীভাবে নমিনেশন পেলেন?

এটি একটি সংস্থার রিপোর্ট, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নয়। প্রাপ্ত প্রাথমিক রিপোর্ট পরবর্তীতে একাধিক সরকারি সংস্থা দিয়ে অধিকতর সরেজমিন তদন্ত করা হয়েছে। সেখানে আরফানুল হক রিফাতের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

পূর্বের রিপোর্টটি সম্ভবত স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। রিফাত তপ্ত রাজপথে লড়াই-সংগ্রাম করে উঠে আসা একজন পরীক্ষিত রাজনৈতিক ব্যক্তি। তিনি ত্যাগ ও সততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।

ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা অধিকাংশ আসনে জয়ী হয়েছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা হেরেছেন। এর কারণ কী বলে মনে করেন? দলের ভেতরে এত কোন্দল কেন? আপনাদের চেইন অব কমান্ড কি সঠিকভাবে কাজ করছে না?

পৃথিবীতে ৩ জন বাঙালি যেখানে থাকবে, সেখানেই মতভেদ থাকবে। তবে বাঙালির আপন দল হলো আওয়ামী লীগ। বাঙালির মননে-মগজে শুধুই আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ও বাঙালি এক ও অভিন্ন।

যেখানে এক মায়ের পেটের ৩ ছেলেরা এক সঙ্গে বসবাস করতে পারেন না, বাবা-ছেলে এক সঙ্গে বসবাস করতে পারেন না, সেখানে আওয়ামী লীগের মধ্যে মতবিরোধ থাকবে না—এমনটা যারা আশা করেন তাদের বসবাস করা উচিত হয় স্বর্গে বা নরকে।

আমরা কোন্দল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। এই কোন্দল যেন সহিংসতার দিকে না যায়, আমরা সে জন্য চেষ্টা করছি।

ইউপি নির্বাচনে যেহেতু প্রতিটি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করছে না, সেহেতু রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে ঐক্য তা শিথিল হচ্ছে। প্রতিটি ইউপি নির্বাচনেই সহিংসতা হয়। এটা যুগযুগ ধরে চলে আসছে। তবে এবার তুলনামূলক কম সহিংসতা হয়েছে।

আমরা যদি কঠোর হই যে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না, সেক্ষেত্রে দেখা যায় যে অনেক জায়গায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেকেই বিজয়ী হচ্ছেন। সেক্ষেত্রে নির্বাচন ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। তাই কৌশলগত কারণে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারছি না।

বিএনপির লক্ষ্যই হলো নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। এই ফাঁদে বিভিন্ন ব্যক্তি পা দিচ্ছেন। যার ফলে কিছু কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। আমরা চেষ্টা করছি এই সহিংসতা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার।

বর্তমানে দেখা যাচ্ছে দল ও সরকার একাকার হয়ে গেছে। দল হিসেবে আপনাদের কার্যক্রম কী?

সরকার একটি সিস্টেম। দল সরকার পরিচালনা করে। কিন্তু, প্রয়োগের কাজটি করেন সরকারি লোকজন। আমরা প্রায়শই সরকার ও দলকে একাকার করে ফেলি। এ কারণে সরকারি লোকজন ও রাজনৈতিক নেতারা কেউই সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারেন না।

অনেক রাজনীতিবিদ সরকারি লোকজনের কাজে হস্তক্ষেপ করেন। এটি ঠিক না। রাজনৈতিক দল বিভিন্ন নীতিমালা, নিয়মকানুন নিয়ে কাজ করবে। সেটি সরকারকে দেবে এবং সরকার তা বাস্তবায়ন করবে। এটি হলো বৈধ পন্থা। এতদিন দল ও সরকার একাকার করে যে কাজ হয়েছে, তা বৈধ ছিল না।

জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে যার যার দায়িত্ব তাকে বণ্টন করে দিয়েছেন। ফলে দেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। সব জায়গায় যদি এমপিরা নাক গলাতে যান, সেখানে সিস্টেমের ব্যাঘাত ঘটবে। এর ফলে জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই সমস্যার সমাধান করেছেন।

দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে একাকার হয়ে কাজ করছে না এবং একাকার হয়ে কাজ করাটাও ঠিক না।

অনেক সময় সরকারি কর্মকর্তারা রাজনৈতিক নেতাদের মতো কথা বলেন। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখেন?

অতিভক্তি কখনই শুভ নয়। অবশ্যই সরকারি কর্মকর্তারা ন্যায়-নীতি মেনেই বক্তব্য দেবেন, এটাই কাম্য। কোনো সরকারি কর্মকর্তার রাজনৈতিক দলের তোষামোদি করে বক্তৃতা করাটা ভুল। ন্যায় ও সত্য কথা বলতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের কথা চলে আসে। এক্ষেত্রে আবার এটা ভাবা ভুল যে সেই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের তোষামোদি করছেন।

আপনারা প্রায়শই বলে থাকেন দলে অনুপ্রবেশ ঘটেছে? কী করে এই অনুপ্রবেশ ঘটছে এবং কেন তা বন্ধ করা যাচ্ছে না?

আওয়ামী লীগ গণমানুষের রাজনৈতিক দল। দলের নীতি-আদর্শ অনুসরণ করে যে কেউ এর সদস্য হতে পারেন। স্থানীয়ভাবে কিছু অনুপ্রবেশ ঘটেছে। অনুপ্রবেশ ঘটলেই যে তারা সহিংসতা করছে, বিষয়টি এমন নয়।

আমাদের অনেক ত্যাগী কর্মীও আবেগবশত অনেক সময় সহিংসতা করে, আবার বহিরাগতরাও করে। কোনো রাজনৈতিক দল দরজা বন্ধ করে দিলে সে দল ক্ষয়িষ্ণু হয়ে যায়।

খন্দকার মোশতাক আওয়ামী লীগ করতো। সে কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর অনেক ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাকে একসঙ্গে ২টি পদন্নোতি দিয়েছিলেন। তার সংসারের সমস্যা সমাধান করেছেন। তাকে পুত্রস্নেহ দিয়েছেন। সেখানে বসে তিনি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার চক্রান্ত করেছেন। তিনি কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত।

ব্যক্তির চরিত্র, লোভ-লালসার ওপর নির্ভর করে যে তিনি ভালো কাজ করবেন, নাকি খারাপ কাজ করবেন। ত্যাগী আওয়ামী লীগার হলেই যে সবসময় তিনি ভালো কাজ করবেন, নতুন হলে ভালো কাজ করবেন না, তা আমি বিশ্বাস করি না। অনুপ্রবেশের কথা বলে অনেকেই পত্রিকা বা টিভি স্ক্রলের শিরোনাম হতে চায়।

আবার দেখা যায় তারাই অনুপ্রবেশকারী ফার্মের কিউরেটর। আমরা অনুপ্রবেশকারীদের লালন করি আবার মঞ্চে উঠে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলি। এটি সংস্কৃতির সংকট।

২০১৪ সালের বিনা ভোটে নির্বাচিত সরকার এবং ২০১৮ সালে রাতের ভোটে নির্বাচিত সরকার। আওয়ামী লীগের প্রতি এই যে অপবাদ, সেটি ঘুচবেন কীভাবে?

অনেকেই মনে করেন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধও ভুল ছিল। ২০১৪ সালে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকভাবেই চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, তারা নির্বাচনে আসেনি। বাধ্য হয়েই আমাদের নির্বাচন করতে হয়েছে। এখানে দোষের কিছু নেই।

২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে যে কথা বলা হয়, সেটি সত্যের কাছাকাছিও না।

নির্বাচন হলো যুদ্ধের মতো। এখানে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতে হয়। কিন্তু, বিএনপি মাঠে থাকেনি। তাদের উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। সেক্ষেত্রে তারা আংশিকভাবে সফল হয়েছে।

আগামী নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর করতে আওয়ামী লীগ আন্তরিকভাবে কাজ করবে।

আপনাদের নেত্রী বলছেন এলাকায় যোগাযোগ বাড়াতে। সংসদ সদস্যরা কি তাহলে এলাকায় যোগাযোগ করেন না?

জনগণ জনপ্রতিনিধিদের প্রতিনিয়তই দেখাতে চায়। কিন্তু, একজন সংসদ সদস্য চাইলেই বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে সব জায়গায় যেতে পারেন না। একজন সংসদ সদস্যকে বিভিন্ন মিটিংয়ের জন্য ঢাকায় অবস্থান করতে হয়। তার পরিবার আছে, অসুখ-বিসুখ আছে। তা ছাড়া তাকে বৈধ আয় করতে হয়।

সরকারি যে বেতন পাওয়া যায়, তা দিয়ে তাদের আসলে জীবন চলে না। ফলে অনেক সময় চাইলেও নির্বাচনী এলাকায় জনগণকে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট করা যায় না। জনগণের সঙ্গে যাতে গ্যাপ তৈরি না হয়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী সবসময় জনগণের সঙ্গে থাকতে বলেন।

জনগণ যদি কোনো কারণে অসন্তুষ্ট হন, তাহলে তা আওয়ামী লীগের জন্য সুখকর নয়। তাই তিনি সবসময় জনগণের সঙ্গে থাকতে বলেন। তিনি বারবার আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন জনগণের কাছে যেতে। জনগণকে বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে জিম্মি করে নির্বাচনে জয়লাভ করতে হবে, এটি আমাদের নেত্রী চান না।

ছাত্রলীগ যতটা না ভালো সংবাদের শিরোনাম হয়, তার চেয়ে বেশি নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হয়। এই বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন? ছাত্রলীগ কি আপনাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে?

বয়স-আবেগ-তারুণ্যের কারণে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সার্বক্ষণিক সক্রিয় থাকতে চায়। ছাত্রলীগের যতটুকু ব্যর্থতা আছে, তার দায়ভার আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের কারণে। ছাত্রলীগের নিজস্ব কোনো ব্যর্থতা নেই।

আগে সিনিয়র নেতারা ছাত্রলীগকে বঙ্গবন্ধুকে চেনাত, আদর্শ শেখাত, দেশপ্রেম শেখাত। কিন্তু, এখন আর ছাত্রলীগকে আদর্শ বা দেশপ্রেম শেখানো হয় না। তাদেরকে লাঠিয়াল হিসেবে তৈরি করা হয়। তাদেরকে আমরা বিভিন্ন বাহিনী বানাচ্ছি, আবার তাদের কাছে আদর্শ আশা করব, এটা কীভাবে সম্ভব?

ছাত্রলীগকে কাজে লাগিয়ে অনেক নেতাই গাড়ি-বাড়ির মালিক হচ্ছেন। তাদের রাজনৈতিকভাবে তৈরি করা হচ্ছে না। নিজের বাহিনী হিসেবে তৈরি করছে অনেকেই। ছাত্রলীগ যখন ভুল করে, তখন আবার তাদের খারাপ বলা হয়। কিন্তু, এই খারাপের জন্য যে সাবেক ছাত্রনেতা বা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা দায়ী, তা স্বীকার করা হয় না।

ছাত্রলীগ একটি নিষ্পাপ, দেশপ্রেমী ছাত্রসংগঠন। এই সংগঠনের দোষ নেই। দোষ সিনিয়র নেতাদের।

রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কী কী ব্যর্থতা আছে বলে আপনি মনে করেন?

যেকোনো রাজনৈতিক দলের সফলতা-ব্যর্থতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আওয়ামী লীগ একটি সফল চিরতরুণ রাজনৈতিক দল। তবে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা যারা ওপর থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে বিভিন্ন দায়িত্বে আছেন, তাদের কিছু ব্যর্থতা আছে। এর দায়ভার দলকে নিতে হয়।

ব্যক্তির কর্মকাণ্ডের দায়ভার দলকে নিতে হয়। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের তেমন কোনো ব্যর্থতা নেই।

Comments

The Daily Star  | English

Upazila Polls: AL, BNP struggle to keep a grip on grassroots

The upazila election has exposed how neither of the two major parties, the Awami League and BNP, has full control over the grassroots leaders.

8h ago