শীর্ষ খবর
তৃণমূলে তোলপাড়

পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের পূর্ণ সমর্থন তৃণমূলের বাইচুং ভুটিয়ার

ভারতের জাতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বাইচুং ভুটিয়া পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ভেঙ্গে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের স্বপক্ষে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। আর এ নিয়েই পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস চরম অস্বস্তিতে পড়েছে।
Bhaichung Bhutia
ভারতের জাতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বাইচুং ভুটিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের জাতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বাইচুং ভুটিয়া পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ভেঙ্গে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের স্বপক্ষে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। আর এ নিয়েই পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস চরম অস্বস্তিতে পড়েছে।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর পার্বত্য এলাকা থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকায় দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাইচুং বলেছেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমিও চাই পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য হোক।”

ইতিহাসের উদ্ধৃতি দিয়ে তাঁর বক্তব্য, দার্জিলিং ও কালিম্পং কোনও দিনই পশ্চিমবঙ্গের অংশ ছিল না। জিটিএর মতোই আন্দোলনের ফলে এক সময় পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিও মেনে নেওয়া হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

এমন কী বাইচুং এও মন্তব্য করেন যে দীর্ঘ তিন দশক পাহাড়ের মানুষের এই দাবির সঙ্গে রাজ্য সরকারের অনেক আমলা, শাসক দলের অনেক নেতৃত্বও সহ-মত আছেন। কিন্তু, দলের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির প্রশংসা করলেও গোর্খাল্যান্ড নিয়ে মমতার নীতি বাইচুং সমর্থন করছেন না বলেও সাফ জানিয়েছেন সেই একান্ত সাক্ষাৎকারে।

ভুটিয়া ২০১৪ সালে লোকসভা এবং ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছেন। যদিও কোন নির্বাচনেই জয়ের মুকুট পড়তে পারেননি নেপালি ভাষাভাষী দার্জিলিংয়ের ভূমিপুত্র ওই ফুটবলার।

তবুও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা এবং তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে খুবই প্রিয় মুখ হিসাবে পরিচিত বাইচুং। তাঁর এই মন্তব্যকে বিস্ফোরক বলে মনে করছে ভারতীয় গণমাধ্যম, এমন কী তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও।

যদিও বিষয়টি নিয়ে মমতা ব্যানার্জি কোনও মন্তব্য করেননি।

তবে দলটির উত্তরাঞ্চলের শীর্ষ নেতা ও মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, এতোদিন নীরব থাকার পর হঠাৎ কেন বাইচুং এই ধরণের কথা বললেন সেটি ওর সঙ্গে কথা বলে জেনে নিতে হবে।

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় কলকাতা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, বিষয়টি তিনি গণমাধ্যমের সৌজন্যে জানতে পেরেছেন। খতিয়ে দেখে পরে তিনি এই বিষয়ে কথা বলবেন। 

উল্লেখ্য, ১২ জুন থেকে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের শৈল শহর দার্জিলিংয়ে লাগাতার ধর্মঘট চলছে। প্রায় তিন মাসের এই আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে পার্বত্য অঞ্চল। এখনও পর্যন্ত আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে চারজন আন্দোলনকারী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সদস্য ছাড়াও নিহত হয়েছেন দুজন পুলিশ কর্মীও। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ছয়শো কোটি রুপি। পর্যটন অঞ্চলে আন্দোলনের জেরে বন্ধ পর্যটকদের পদচারণাও।

পাহাড়ের চলমান অচলাবস্থা নিরসনে ইতোমধ্যে ২৯ আগস্ট এবং ১২ সেপ্টেম্বর দুই দফায় বৈঠক হয়েছে। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর কলকাতার নবান্নে তৃতীয় দফা বৈঠকের সূচিও জানানো হয়েছে। ঠিক এমন একটি প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বাইচুং ভুটিয়ার গোর্খাল্যান্ডের প্রতি সমর্থন জানানোর বিষয়টি শান্তি আলোচনাকে বড় ধরণের ধাক্কা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Comments

The Daily Star  | English

Upazila Polls: AL, BNP struggle to keep a grip on grassroots

The upazila election has exposed how neither of the two major parties, the Awami League and BNP, has full control over the grassroots leaders.

11m ago