৭৭ শতাংশ ফিলিস্তিনির বিশ্বাস গাজা যুদ্ধে হামাস জয়ী: জরিপ

গত ১০ মে শুরু হওয়া ১১ দিনের যুদ্ধে ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামী সংগঠন হামাস-শাসিত গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও অধিকাংশের বেশি ফিলিস্তিনি বিশ্বাস করেন ইসরায়েলের সঙ্গে সেই যুদ্ধে হামাস জয়ী হয়েছে।
gaza
গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

গত ১০ মে শুরু হওয়া ১১ দিনের যুদ্ধে ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামী সংগঠন হামাস-শাসিত গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও অধিকাংশের বেশি ফিলিস্তিনি বিশ্বাস করেন ইসরায়েলের সঙ্গে সেই যুদ্ধে হামাস জয়ী হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গতকাল প্রকাশিত রামাল্লাহ-ভিত্তিক প্যালেস্টাইন সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চের জরিপে দেখা গেছে, ৭৭ শতাংশ ফিলিস্তিনির বিশ্বাস ইসরায়েলের সঙ্গে গত মে মাসের যুদ্ধে হামাস বিজয়ী হয়েছে।

জরিপ মতে, ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হামাসের জনপ্রিয়তা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। একইসঙ্গে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহ দলের প্রতি ফিলিস্তিনিদের সমর্থন।

অধিকাংশ ফিলিস্তিনিরা মনে করেন, তাদের প্রতিনিধিত্ব করা বা নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য দল হচ্ছে হামাস। খুবই অল্প সংখ্যক ফিলিস্তিনি মনে করেন ফাতাহ-ই যোগ্য।

জরিপে অংশ নেওয়া ৬৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, ইসরায়েলে রকেট ছুড়ে হামাস তার ঘোষিত লক্ষ্যে পৌঁছেছে। পূর্ব জেরুসালেমের শেখ জারাহ এলাকায় আরব বসতি উচ্ছেদের যে পাঁয়তারা ইসরায়েল করছিল, হামাস তা বন্ধ করে দিয়েছে। এ ছাড়াও, আল-আকসা মসজিদে মুসলমানদের প্রবেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ‘বিধিনিষেধ’ তুলে নিতে ইসরায়েলকে বাধ্য করেছে এই সংগঠনটি।

সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত এক হাজার ২০০ ফিলিস্তিনির ওপর এই জরিপ চালানো হয়।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৭২ শতাংশ জানিয়েছেন যে তারা মনে করেন, জেরুসালেম ও আল-আকসা মসজিদ রক্ষা করতে হামাস ইসরায়েলে রকেট ছুড়েছে।

তাদের মাত্র নয় শতাংশ মনে করেন, ফিলিস্তিনের সাধারণ নির্বাচন বাতিলের প্রতিবাদে হামাস এই হামলা চালিয়েছে।

জরিপে আরও উঠে এসেছে, এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াহ পাবেন ৫৯ শতাংশ ভোট আর বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস পাবেন ২৭ শতাংশ ভোট।

তবে, কারাবন্দি ফাতাহ নেতা মারওয়ান বারঘোতি ও ইসমাইল হানিয়াহর মধ্যে প্রতিযোগিতা হলে বারঘোতি পাবেন ৫১ শতাংশ ভোট ও হানিয়াহ পাবেন ২৬ শতাংশ ভোট।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৪০ শতাংশ বলেছেন, ফিলিস্তিনের পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তারা হামাসকে ভোট দেবেন এবং ৩০ শতাংশ মত দিয়েছেন ফাতাহ’র পক্ষে।

দুই-তৃতীয়াংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন, প্রেসিডেন্ট আব্বাস হেরে যাওয়ার ভয়ে সেখানকার প্রেসিডেন্সিয়াল ও পার্লামেন্টারি নির্বাচন পিছিয়ে দিয়েছেন।

তাদের ২৫ শতাংশ মনে করেন, ইসরায়েল পূর্ব জেরুসালেমে ভোট আয়োজন করতে না দেওয়ায় আব্বাস ভোটগ্রহণ বাতিল করেছেন।

যে কারণেই মাহমুদ আব্বাস ভোট বাতিল করুক না কেন, জরিপ মতে— ৬৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি তার এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। এই নির্বাচন গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

জরিপে অংশ নেওয়া ৫৮ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা মনে করেন— অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের কারণে দুই-রাষ্ট্র সমাধান-নীতি আর বাস্তবসম্মত নয়।

তাদের ৬৭ শতাংশ মনে করেন, আগামী পাঁচ বছরে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৪০ শতাংশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘সশস্ত্র সংগ্রাম’র পক্ষে মত দিয়েছেন। মাত্র ২৭ শতাংশ বলেছেন, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানোকে পছন্দ করছেন।

জরিপে ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে নিঃর্শতভাবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা শুরুর বিরোধিতা করেছেন।

এ ছাড়াও, ইসরায়েলে নাফতালি বেনেটের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার সম্পর্কে আশাবাদ প্রকাশ করেননি জরিপে অংশ নেওয়া ৬৯ শতাংশ ফিলিস্তিনি।

আরও পড়ুন:

আবারও ইসরায়েলি হামলায় রক্তাক্ত গাজা উপত্যকা

ইসরায়েলি বোমার আঘাতে গাজায় ভবনধস, তেল আবিবে হামাসের রকেট হামলা

গাজায় ইসরায়েলের অবিরাম বোমা হামলা, গোলাবর্ষণ

গাজায় এপি ও আল জাজিরার অফিস গুঁড়িয়ে দিলো ইসরায়েল

গাজায় ইসরায়েলি হামলা যুদ্ধাপরাধ হতে পারে: জাতিসংঘ

ইসরায়েলি বোমায় গাজায় প্রতি ঘণ্টায় আহত ৩ শিশু: সেভ দ্য চিলড্রেন

যুগে যুগে যেভাবে ইসরায়েলকে রক্ষা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট

ইসরায়েলের কাছে ৭৩ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাবে বাইডেনের অনুমোদন

সন্ত্রাস মানে ইসরায়েল

হামাসের রকেট হামলার বিরোধিতায় ভারত

Comments

The Daily Star  | English

High Temperature Days: Barring miracle, record of 76yrs breaks today

At least 23 days of this month were heatwave days, which equals the record set in 2019 for the entire year.

10h ago