করোনাভাইরাসের প্রভাবে হুন্দাইয়ের উৎপাদন বন্ধ

চীনের মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। বিশ্বের গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ঘাটতিতে পড়তে শুরু করেছে। যন্ত্রাংশের সরবরাহ কমে যাওয়া গাড়ি উৎপাদন স্থগিত করেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
Hyundai
ছবি: হুন্দাইডটকম

চীনের মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। বিশ্বের গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ঘাটতিতে পড়তে শুরু করেছে। যন্ত্রাংশের সরবরাহ কমে যাওয়া গাড়ি উৎপাদন স্থগিত করেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হুন্দাইয়ের উৎপাদন বন্ধ ছিলো গতকাল শনিবার। করোনাভাইরাসের প্রভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে হুন্দাইয়ের উলসান কমপ্লেক্সের উৎপাদন কাজ স্থগিত রাখা হয়।

হুন্দাই প্রতিবছর ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন গাড়ি উৎপাদন করতে পারে।

বিশ্ব অর্থনীতির জন্য পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ হলেও চীনের করোনাভাইরাসের কারণে তা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভাইরাসটি সেখানে মহামারি আকার ধারণ করায় বেইজিংয়ের অনেক কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে।

ফলে, হুন্দাই দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে উৎপাদন কাজ স্থগিত করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে আংশিক বেতন দিয়ে জোর করেই ২৫ হাজার কর্মী ছুটিতে পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এ প্রসঙ্গে উলসান কমপ্লেক্সের কর্মী পার্ক বলেন, “লজ্জার বিষয় হলো, আমি কাজে আসতে পারছি না এবং আমার বেতন কাটা হচ্ছে। এটি খুবই অস্বস্তিকর ব্যাপার।”

বিশ্লেষকরা যা বলছেন

হুন্দাইয়ের কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

কারখানা বন্ধ করে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে হুন্দাই। বিশ্লেষকদের ধারণা, দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঁচদিন কারখানা বন্ধের জন্য কমপক্ষে ৬০০ বিলিয়ন ওয়ান (৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) খরচ করতে হবে তাদের।

আরও যেসব প্রতিষ্ঠান উৎপাদন বন্ধ করবে

শুধু হুন্দাই নয়, আরও কয়েকটি গাড়ি উৎপাদন প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে তাদের উৎপাদন বন্ধ রাখতে যাচ্ছে। আগামীকাল সোমবার একদিনের জন্য তিনটি প্ল্যান্ট স্থগিত করবে কিয়া। ফরাসি গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রেনাল্টও একই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি আগামী সপ্তাহে তাদের দক্ষিণ কোরিয়ান ইউনিটের বুশান কারখানা বন্ধের বিষয় বিবেচনা করছে। এছাড়াও, ফিয়াট ক্রিসলারের সিইও মাইক ম্যানলে গণমাধ্যমকে বলেছেন, তাদের একটি ইউরোপীয় কারখানা বন্ধ করা হতে পারে।

ভক্সওয়াগেনের কাজ স্থগিত

জার্মানির গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ভক্সওয়াগেন চীনের বেশিরভাগ প্ল্যান্টের কাজ আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করেছে। ভক্সওয়াগেন চীনে যৌথ উদ্যোগে বেশিরভাগ প্লান্টের কাজ করে। নববর্ষের ছুটি শেষে ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এসব প্লান্ট চালুর কথা ছিলো। ছুটির পরে কাজে ফিরতে না পারা এবং সরবরাহ জটিলতার কারণে প্লান্টগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

কেনো অটো সেক্টরে প্রভাব পড়লো?

দক্ষিণ কোরিয়ার ইনহা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক চেওং ইন-কিয়ো বলেছেন, “দক্ষিণ কোরিয়ার বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান উৎপাদনের কাঁচামালের জন্য চীনের ওপর নির্ভরশীল। এজন্য যেকোনো একটি অংশ অনুপস্থিত থাকলে, তারা কিছুই করতে পারে না।”

তিনি আরও বলেছেন, “অটো সেক্টরে যে এর প্রভাব পড়বে তা ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার শুরুতেই সতর্ক করা হয়েছিলো। এমন কোনো যন্ত্রাংশ নেই যা চীনে উৎপাদিত হয় না। তাই প্রত্যেকেই এর দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে।”

অর্থনীতিবিদ মার্ক জান্দি বলেছেন, “চীন বিশ্ব উৎপাদন সরবরাহ চেইনের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বৈশ্বিক উৎপাদন আয়ের এক-পঞ্চমাংশ তাদের দখলে।”

আরও যেসব দেশে ক্ষতিগ্রস্ত হবে

দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়াও তাইওয়ান, ভিয়েতনাম এবং মালয়েশিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানিয়েছেন মার্ক জান্দি।

Comments

The Daily Star  | English
Overview of Rooppur Nuclear Power Plant Bangladesh

Rooppur Nuclear Power Plant: First unit to start production in December

Project deadline extended by 2 years, but authorities hope to complete grid line work before scheduled commissioning

10h ago