আবুল মনসুর আহমদের ‘শেরে বাংলা হইতে বঙ্গবন্ধু’

আবুল মনসুর আহমদ গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি অসংখ্য প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখেছেন। এসব লেখায় সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্ম, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ অভিমত প্রতিফলিত হয়েছে। বিশেষ করে বিভাগ-পূর্ব বাংলা, পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ক্রান্তিলগ্নে সংবাদপত্রের মাধ্যমে তিনি সুচিন্তিত পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ শতকের পঞ্চাশের দশক তিনি পাকিস্তানের রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করলে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন এবং এরপর থেকে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেন।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

আবুল মনসুর আহমদ গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি অসংখ্য প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখেছেন। এসব লেখায় সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্ম, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ অভিমত প্রতিফলিত হয়েছে। বিশেষ করে বিভাগ-পূর্ব বাংলা, পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ক্রান্তিলগ্নে সংবাদপত্রের মাধ্যমে তিনি সুচিন্তিত পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ শতকের পঞ্চাশের দশক তিনি পাকিস্তানের রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করলে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন এবং এরপর থেকে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেন।

বিশ শতকের ষাট ও সত্তর দশকে তিনি ছিলেন 'গ্যালারির একজন সচেতন দর্শক' বা 'রাজনীতির হরিঠাকুর'। এ সময় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সমকালীন বিষয়াবলী নিয়ে অনেক প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এগুলোর প্রায় সবই সংকলিত হয়েছে বিভিন্ন প্রবন্ধ-গ্রন্থে। তার প্রকাশিত প্রবন্ধ-গ্রন্থের সংখ্যা মোট ৪টি। সেগুলো হলো―বাংলাদেশ কালচার (১৯৬৬), শেরে বাংলা হইতে বঙ্গবন্ধু (১৯৭৩), End of a Betrayal and Restoration of Lahore Resolution (১৯৭৫) ও বেশি দামে কেনা কম দামে বেচা আমাদের স্বাধীনতা (১৯৮২)।

এর মধ্যে 'শেরে বাংলা হইতে বঙ্গবন্ধু' প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। লেখকের মৃত্যুর (১৯৭৯) পর ১৯৮১ সালে প্রকাশিত দ্বিতীয় সংস্করণে দুটি মূল্যবান ভূমিকা গ্রন্থিত হয়। প্রকাশকের লিখিত 'নিবেদন' এবং আবুল মনসুর আহমদের ছেলে মাহবুব আনামের লিখিত 'দ্বিতীয় সংস্করণের ব্যাপারে দুটি কথা' নামক ভূমিকা এ গ্রন্থের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ ছাড়া লেখকের স্বহস্তে লিখিত ১৯ পৃষ্ঠাব্যাপী ভূমিকা একদিকে এ গ্রন্থের সার-সংক্ষেপ হিসেবে, অন্যদিকে তা একটি স্বতন্ত্র প্রবন্ধ হিসেবেও বিবেচ্য। শেরে বাংলা হইতে বঙ্গবন্ধু গ্রন্থের নাম থেকেই গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত প্রবন্ধ-নিবন্ধের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। স্বলিখিত ভূমিকার প্রথমেই গ্রন্থের বিষয়বস্তু ও তার ঐতিহাসিক মূল্য সম্পর্কে লেখক বলেন, 'পাকিস্তান ভাঙিয়া দুই টুকরা হইয়াছে। পূর্বাঞ্চল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রে উন্নীত হইয়াছে। স্বাধীন বাংলাদেশ আজ বাস্তব সত্য। এই রূপেই সে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও লাভ করিয়াছে। গণতন্ত্রী আধুনিক রাষ্ট্র হিসাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ যে বিশ্বের দরবারে তার যথাযোগ্য মর্যাদার স্থান দখল করিবে, সে সম্বন্ধে কারও মনে দ্বিধা-সন্দেহের অবকাশ নাই। স্বাভাবিকভাবেই এটা ঘটিয়াছে। শেরে-বাংলা ফজলুল হক ১৯৪০ সালে লাহোরে যা শুরু করিয়াছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে তা সমাপ্ত করিয়াছেন। শেরে-বাংলা হইতে বঙ্গবন্ধু পর্যন্ত রাজনৈতিক ক্রমবিকাশটা এতে বুঝা যাইবে। তাই নানা দিক হইতে এসব প্রবন্ধ আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রনায়কদের কাজে লাগিবে। কেন, কীভাবে পাকিস্তানের সৃষ্টি হইয়াছিল, কেনই-বা তা ভাঙিয়া গেল, এটা জানা থাকা খুবই দরকার সকলের জন্যই। কিন্তু বাংলাদেশের জনসাধারণকে সাধারণভাবে এবং রাষ্ট্রনেতা ও বুদ্ধিজীবীদের বিশেষভাবে এ ইতিহাসের খুঁটিনাটিও জানিতে হইবে।'

এ গ্রন্থে মোট ৬০টি নিবন্ধ স্থান পেয়েছে। নিবন্ধগুলোর প্রায় সবই সমকালীন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। বিশ শতকের ষাটের দশকে আবুল মনসুর আহমদ সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নিলেও একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতাকে বিভিন্ন প্রবন্ধ-নিবন্ধের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে তিনি এ গ্রন্থের বিষয়বস্তু করেছেন। বিভাগ-পূর্ব ভারতের শেষদিক, পাকিস্তান আমলের পুরো অংশ ও সদ্য প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ―এই তিন আমলের ইতিহাসের একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ এই গ্রন্থ। গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত ৬০টি নিবন্ধই ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। লেখক মূলত একজন কলামিস্ট হিসেবেই সমকালীন রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ে এসব নিবন্ধ লিখেছেন। একজন সচেতন রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে এ সময় তার সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ববতী ও পরবর্তী ঘটনার রাজনৈতিক ইতিহাস এখানে পরিস্ফুট হয়েছে।

গ্রন্থটির প্রকাশক মেছবাহ উদ্দিন আহমদ গ্রন্থের ভূমিকায় 'আমাদের নিবেদন' অংশে লেখকের সাহিত্য-প্রতিভা ও গ্রন্থের বিষয়বস্তু সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি লিখেছেন, 'জনাব আবুল মনসুর আহমদ তাঁর দুর্লভ বিশ্লেষণধর্মী মনোভঙ্গি বিরল অভিজ্ঞতাপূর্ণ রাজনৈতিক নিরিখ এবং প্রখর দূরদৃষ্টির সাহায্যে আমাদের সত্যিকার স্বাধীনতায় উত্তরণের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক দিকের পর্যালোচনা করেছেন। তাঁর সে পর্যালোচনা একাধারে সৃষ্টিকুশলতায় শক্তিশালী এবং ভাষার প্রখরতা ও যুক্তির সংহত প্রয়োগ সমুজ্জ্বল। শেরে-বাংলার উত্থাপিত লাহোর প্রস্তাবের মর্মকথা কী ছিল, তার মধ্যে বাংলার মুসলিম মানসের কী মনস্তত্ত্ব কাজ করেছিল―এ বইতে একদিকে যেমন তার বিশ্লেষণ বিবৃত অন্যদিকে তেমনি ভারত বাঁটোয়ারার ফলে বাঙালি কতটা ত্যাগ স্বীকার করেছিল এবং কীভাবে তাকে অবলীলাক্রমে ঠকানো হয়েছিল, তার যুক্তিপূর্ণ বিশ্লেষণ ও দৃষ্টান্তবলী এ বইয়ের অন্যতম উপজীব্য হয়েছে। অতঃপর পাকিস্তানী আমলের পশ্চিমা ঔপনিবেশিক শোষণ, বৈরী ও প্রতিকূল মনোভাব জুলুম, অত্যাচার, নিপীড়ন, নিগ্রহ এবং শেষ পর্যায়ে ব্যাপক গণহত্যার মনস্তত্ত্ব এই বইয়ের আলোচ্য বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পাকিস্তানী আমলের ধর্মের নামে ধাপ্পাবাজি, একের পর এক ওয়াদা ভঙ্গ, বাংলাদেশকে ক্রমাগত পাঞ্জাবিদের পদানত করার চক্রান্ত, সামরিক শক্তির জোরে সংহতির নামে নিজেদের একাধিপত্য রক্ষার অপচেষ্টা, গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি চরম অবমাননা প্রদর্শন ইত্যাদি বিষয়ের পাশাপাশি বাঙালির সদিচ্ছা ও সহনশীলতা, বাঙালি নেতৃত্বের উদারতা, দূরদর্শিতা ও সংগ্রামশীলতা ইত্যাদি বিষয়ও আলোচনায় অঙ্গীভূত হয়েছে।'

গ্রন্থটি সম্পর্কে শেরে-বাংলা এ কে ফজলুল হকের প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিক্রিয়ার কথা জানা যায়। আবুল মনসুর আহমদের ছেলে মাহবুব আনাম সদ্য প্রকাশিত গ্রন্থটি বঙ্গবন্ধুকে উপহার দিতে গেলে তিনি এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। প্রথমে বঙ্গবন্ধু গ্রন্থটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেও এবং লেখককে তার রাজনৈতিক গুরু হিসেবে অভিহিত করলেও বইটির পৃষ্ঠা উল্টাতে গিয়ে মুহম্মদ আলী জিন্নাহকে 'কায়েদে আজম' হিসেবে লেখা দেখে বঙ্গবন্ধু বলে ওঠেন, 'হ্যাঁ মনসুর ভাই জিন্না ব্যাটাকে কায়েদে আজম লিখেছেন? তিনি কি জানেন না যে বাঙালিদের যাবতীয় সর্বনাশের মূলে ওই জিন্না শয়তানটা।'

বঙ্গবন্ধুর এই জিজ্ঞাসার উত্তরে আবুল মনসুর আহমদের বক্তব্য, 'আবুল মনসুর একজন ঐতিহাসিক। ঐতিহাসিকের কর্তব্য ঘটনার সত্যনিষ্ঠ বর্ণনা। তার সাধ্য নেই ইতিহাসের গতি পরিবর্তন, পরিবর্ধনের। জিন্না সাহেবকে তার দেশবাসী ভালবেসে কায়েদে আজম পদবি দিয়েছে। সেটা আবুল মনসুরের মতো ঐতিহাসিকের কলমের এক খোঁচায় শেষ হতে পারে না। ... পাকিস্তানী আমলের সুদীর্ঘ ২৫ বৎসর ভারতীয় নেতা গান্ধীকে চিরকাল আমি মহাত্মাজী বলে অভিহিত করে এসেছি পাকিস্তানী ভ্রুকুটি অগ্রাহ্য করে। সম্মানী লোকের সম্মান দিতে জানাটাও গৌরবের, যে দেয় তার জন্যই যে পায় তার জন্য নয়। তা ছাড়া খোদা না খাস্তা এমন দিন যদি বাংলাদেশে কোনোদিন আসে যেদিন শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু বলার কেউ থাকবে না। ঐতিহাসিক আবুল মনসুর একা হইলেও সে দিনও তাকে বঙ্গবন্ধু বলেই সম্বোধন করবে তার বইয়ে।'

স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে জিন্নাকে কায়েদে আজম বলা যায় না, কেননা তৎকালীন বাংলাদেশের (পূর্ব-পাকিস্তান) প্রতি মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ শুরুতেই যে অবিচার করেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিল পশ্চিম-পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী এবং সেদিক থেকে বাংলাদেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের কাছে তিনি একজন ঘৃণার পাত্র হিসেবে বিবেচ্য। সেদিক থেকে লেখকের প্রতি বঙ্গবন্ধুর প্রতিক্রিয়া যথার্থই ছিল। কিন্তু একজন নিরপেক্ষ ঐতিহাসিক হিসেবে দেশ-কাল-পাত্রের ঊর্ধ্বে উঠে বিবেচনা করলে লেখকের বক্তব্যকে যথার্থ বলে গ্রহণ করা যায়। রাজনৈতিক জীবনে তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বয়োজ্যেষ্ঠ। ১৯৫৬ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন, তখন আবুল মনসুর আহমদ পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী ছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু তখন ছিলেন তারই অধীন পূর্ব-পাকিস্তান প্রদেশের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী। সেই লেখকের গ্রন্থে শেখ মুজিবকে 'বঙ্গবন্ধু' হিসেবে অভিহিত করা এবং প্রতিকূল মুহূর্তেও এই উপাধির প্রতি একনিষ্ঠ থাকার ঘোষণা তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচয় বহন করে। বিশেষ করে কনিষ্ঠ রাজনৈতিক নেতার প্রতি এই সম্মান উদার মানসিকতার পরিচায়ক।

এই গ্রন্থে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রবন্ধের পাশাপাশি ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক প্রবন্ধও স্থান পেয়েছে। কেননা তিনি পূর্ব-বাংলার ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতিকে রাজনীতির একটা অবিচ্ছেদ্য অংশই মনে করতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, শুধু হিন্দু ও মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের পৃথক বাসস্থানের উদ্দেশে ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হয়নি, বরং ভূখণ্ডগত স্বতন্ত্র সংস্কৃতি ছিল এই দেশবিভাগের মূল কারণ। পূর্ব-বাংলা যেমন পশ্চিম-বাংলা থেকে পৃথক, তেমনি পশ্চিম-পাকিস্তান থেকেও পৃথক। এই বিশ্বাসকেই তিনি বিভিন্ন প্রবন্ধে-উপন্যাসে-আত্মজীবনীতে-বক্তৃতা-বিবৃতিতে যুক্তি সহকারে উপস্থাপন করেছেন।

শেরে বাংলা হইতে বঙ্গবন্ধু গ্রন্থে সংস্কৃতি-বিষয়ক প্রবন্ধের অন্তর্ভুক্তির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি আত্মকথায় বলেছেন, 'সত্তুরের দশকে "এন্ড অব এ বিট্রেয়াল" নামক ইংরেজি বই এবং "শেরে বাংলা হইতে বঙ্গবন্ধু" বইতে রাজনৈতিক প্রবন্ধসমূহের সঙ্গে সঙ্গে অনেকগুলো কালচারাল নিবন্ধও সংযোজিত হইয়াছে। রাজনৈতিক প্রবন্ধের সাথে কালচারাল প্রবন্ধগুলি একত্র করিবার কারণ ছিল। আমার প্রতিপাদ্য ছিল এই যে রাজনৈতিক কারণে ১৯৪৭ সালে যে দেশ ভাগ হইয়াছিল কালচারাল দিক হইতেও ওটা ঠিকই হইয়াছিল। পাকিস্তানী আমলে একই রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত থাকিয়া পূর্ব-পাকিস্তান শুধু ভাষায় নয়, আর্ট কালচারের ব্যাপারেও অবশিষ্ট পাকিস্তান হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ছিল। স্বাধীন হওয়ার পরও বাংলাদেশ তেমনি তার কৃষ্টি সাহিত্যের ব্যাপারে পশ্চিম-বাংলা-ভারত হইতে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও স্বতন্ত্রই আছে। চিরকাল থাকিবে।'

লেখকের এই কথাগুলোই বিভিন্ন আঙ্গিকে ঐতিহাসিক ঘটনার পরম্পরা বর্ণনা করে বিভিন্ন প্রবন্ধে যৌক্তিক ও বিশ্লেষণমূলক ব্যাখ্যা করেছেন।

ড. মো: চেঙ্গীশ খান: বাংলা বিভাগের অধ্যাপক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

Comments