১ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ ঘোষণার দাবি নির্মূল কমিটির

১ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। আজ বুধবার সংগঠনটির চট্টগ্রাম শাখা আয়োজিত ‘বাঙালির অবিস্মরণীয় বিজয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এ দাবি জানানো হয়।
Nirmul_Commity.jpg
ছবি: সংগৃহীত

১ ডিসেম্বরকে 'জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা দিবস' ঘোষণার দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। আজ বুধবার সংগঠনটির চট্টগ্রাম শাখা আয়োজিত 'বাঙালির অবিস্মরণীয় বিজয়' শীর্ষক ওয়েবিনারে এ দাবি জানানো হয়।

ওয়েবিনারে প্রধান বক্তার ভাষণে লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, 'যে মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করে আমরা বিজয় অর্জন করেছি, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রদ্ধা জানাতে ১ ডিসেম্বরকে "জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা দিবস" ঘোষণার জন্য নির্মূল কমিটি এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকরা দীর্ঘকাল ধরে দাবি করছেন। মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালে আজও এই দাবি পুনর্ব্যক্ত করছি।'

মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধকালে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক দোসররা ইসলাম ও পাকিস্তান রক্ষার কথা বলে স্মরণকালের নৃশংসতম গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করেছিল। মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় বিজয়ের এক বছরেরও কম সময়ে বঙ্গবন্ধু এবং তার সহযোগীরা আমাদের উপহার দিয়েছিলেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান। সেখানে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে রাষ্ট্রের ৪ মূলনীতি হিসেবে গ্রহণের পাশাপাশি তারা ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন।'

শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, '১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার প্রধান সহযোগীদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া সংবিধান থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা মুছে ফেলার পাশাপাশি ধর্মের নামে রাজনীতি, হত্যা ও সন্ত্রাসের যে বিষবৃক্ষের চারা রোপণ করেছিলেন, তার বিষফল আজও আমাদের ভোগ করতে হচ্ছে।'

'মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিনাশী অপশক্তিকে বাংলার মাটি থেকে চিরতরে নির্মূল করার শপথ নিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত আমাদের বিজয় অসম্পূর্ণ থেকে যাবে,' যোগ করেন তিনি।

ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধে ক্র্যাক প্ল্যাটুনের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, 'ডিসেম্বর মাস যেমন আনন্দের মাস, তেমনি বেদনারও মাস। ১৯৭১ এর ডিসেম্বরে আমরা যেমন বিজয় অর্জন করেছি, তেমনি হারিয়েছি আমাদের সূর্যসন্তান ও বুদ্ধিজীবীদের।'

পহেলা ডিসেম্বরকে 'মুক্তিযোদ্ধা দিবস' হিসেবে ঘোষণা করার জন্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে মায়া বলেন, 'মুক্তিযোদ্ধারা কখনো মারা যান না। তাদের অর্জন কখনো ম্লান হতে পারে না। বাংলাদেশের বিজয় ৫০ বছর অতিক্রম করলেও এই পুরো সময়টি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্বপক্ষের মানুষেরা স্বাধীন ছিল না। কেননা, গত ৫০ বছরে অধিকাংশ সময় স্বাধীনতার বিরোধী চক্র বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিল।'

এতে আরও বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক আবেদ খান, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, মানবাধিকার নেত্রী মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবির, নির্মূল কমিটির চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English
High temperature days record in Bangladesh

High Temperature Days: Barring miracle, record of 76yrs breaks today

At least 23 days of this month were heatwave days, which equals the record set in 2019 for the entire year.

13h ago