বাংলাদেশ

শরীয়তপুরে শ্রমিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বাস ধর্মঘট

শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের বালাখানায় বাস শ্রমিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘট ডেকেছে জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস মালিক সমিতি। 
ছবি: স্টার

শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের বালাখানায় বাস শ্রমিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘট ডেকেছে জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস মালিক সমিতি। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের বালাখানা এলাকায় বাসশ্রমিকদের ওপর ককটেলবোমা হামলা করেন সন্ত্রাসীরা। 

এর প্রতিবাদে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়ে তখনই পুরোপুরি বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলী মাদবর দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে।' 

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বালাখানায় কয়েকজন সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা তুলছিল। বাস শ্রমিকরা তার প্রতিবাদ জানালে সন্ত্রাসীরা তাদের বোমা হামলা চালিয়েছে। দা, রড, চাকু ও বাশঁসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। শ্রমিকদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের শ্রমিকরা বাস চালাবেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হবে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে। আমরা শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাব।' 

তিনি আরও বলেন, 'মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু ব্যাপারী ও আমি ঘটনাস্থলে গেলে আমাদের ওপরও চড়াও হয় সন্ত্রাসীরা। একপর্যায়ে পালং ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আশ্রয় নেই। সন্ত্রাসীরা সেখানেও বোমা হামলা চালায়। পুলিশ আসলে তারা পালিয়ে যায়।'

চর পালং গ্রামের খোরশেদ আলম বেপারির ছেলে শহীদুল ইসলাম (৩৪) পেশায় গাড়ি চালক। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস মালিক সমিতির নেতাদের নিয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর ককটেল হামলা চালায়। কোনভাবে জীবন নিয়ে বেঁচে ফিরেছি। আমাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা ধর্মঘট চালিয়ে যাব।' 

অন্যদিকে এই ধর্মঘটে বিপাকে পরেছেন যাত্রীরা। বাস টার্মিনালগুলোতে এসে ফিরে যাচ্ছেন তারা। অনেকে বাড়তি টাকায় বিকল্প যান ইজিবাইক, সিএনজি ও মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা হয় কক্সবাজারগামী যাত্রী মোহাইমেন আলী সাগরের সঙ্গে। তিনি কক্সবাজার মহেশখালীতে একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে ইঞ্জিনিয়ারিং সাইটে কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি জানান, ৪ দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলাম এখন ছুটি শেষ। অফিসের একটি গাড়ি ঢাকা থেকে ককক্সবাজার যাবে। আমার জন্য ঢাকায় অপেক্ষা করছে। যদি বিকেল ৪টার মধ্যে সায়দাবাদ পৌঁছাতে না পারি, তাহলে আমাকে রেখেই গাড়িটি চলে যাবে। তাহলে টিকেট কেটে আমাকে, যেতে হবে। সেক্ষেত্রে বড় ধরনের ঝামেলায় পরে যাব। সময়মতো যেতে না পারলে আমার জন্য অফিস বিপদে পড়ে যাবে। অনেক কস্টে ঢাকার উদ্দেশে যাওয়ার জন্য মাঝিরঘাট পর্যন্ত একটা মোটরসাইকেল ঠিক করেছিলাম। কিন্তু বাস শ্রমিকদের ভয়ে এখন আর যেতে চাচ্ছে না। বুঝতে পারছি না এখন কি করব।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, 'হামলার ঘটনা জানার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। সেখানে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগও করেনি। কেউ যদি কোন অভিযোগ করেন তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ধর্মঘটে যেহেতু যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন তাই যাত্রীভোগান্তি বন্ধে দ্রুত বাস চলাচল শুরুর জন্য পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করি খুব শিগগির তারা তাদের বাস ধর্মঘট তুলে নেবেন।'
 

Comments

The Daily Star  | English
IMF suggestions for Bangladesh

IMF suggests raising power, gas and fertiliser prices

The International Monetary Fund yesterday recommended reducing government subsidies by hiking prices of power, gas and fertiliser, and spending the saved money on society safety net programmes.

17h ago