রাজনীতি

৮০ দিন পর হাসপাতাল ছাড়লেন খালেদা জিয়া

দীর্ঘ ৮১ দিন রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতাল ভর্তি থাকার পর গুলশানের বাসভবন ফিরোজার পথে রওয়ানা হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ৮০ দিন রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতাল ভর্তি থাকার পর গুলশানের বাসভবন ফিরোজার পথে রওয়ানা হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে এভার কেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অন্যতম চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী (এফ এম সিদ্দিকী) আজ সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তার ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়টি জানান। 

এফ এম সিদ্দিকী বলেন, 'উনি এখন যদিও স্বাভাবিক আছে। তারপরও আমরা দেখেতে পেয়েছি সারাদেশে এবং এভার কেয়ার হাসপাতালে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জানুয়ারি মাসে এই হাসাপাতালে ৩৮০ জনের বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে উনার স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই মুহূর্তে উনার কন্ডিশন যেহেতু কিছুটা স্ট্যাবল আছে তাই উনাকে বাসায় রেখে আমাদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা করা হবে। এই অবস্থায় উনি আবারও করোনায় আক্রান্ত হলে সেই সংক্রমণ যদি কোনো জটিলতা সৃষ্টি করে তাহলে সেটার ম্যানেজমেন্টটা অনেক জটিল ও কঠিন হয়ে যাবে। সে কারণে উনাকে আজ আমরা হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'  

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, আপাতদৃষ্টিতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও আবারও যে ব্লিডিং হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। 

উল্লেখ, গত ১৩ নভেম্বর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ২৮ নভেম্বর মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছিল খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে ভুগছেন। বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী বলেন, 'যেহেতু বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে ভুগছেন, তাই তাকে অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে।'

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাগারে থাকার পর গত বছরের ২৫ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসন সরকারের নির্বাহী আদেশে কারাগার থেকে মুক্তি পান। ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৪০১(১) ধারা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড স্থগিত করা হয়।

সিআরপিসির ৪০১(১) ধারায় বলা হয়েছে, 'যখন কোনো ব্যক্তিকে অপরাধের জন্য শাস্তি প্রদান করা হয়, তখন সরকার যে কোনো সময় শর্ত ছাড়াই অথবা শর্তের বিনিময়ে (দণ্ডিত ব্যক্তি গ্রহণ করে) শাস্তি কার্যকর স্থগিত করতে পারে। অথবা তাকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তার পুরো বা যে কোনো অংশ স্থগিত করতে পারে।'

পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

২০০৭ সালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। অভিযোগে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সরকারে থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতা অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা সুবিধা পাইয়ে দেন। তৎকালীন আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমেদ, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, ভারপ্রাপ্ত জ্বালানি সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, নাইকো রিসোর্সেস বাংলাদেশ লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট (দক্ষিণ এশিয়া) খন্দকার শহীদুল ইসলামকেও ওই মামলায় আসামি করা হয়।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার মহানগর হাকিমের আদালতে বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী বাদী হয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। পরের বছরের ১২ নভেম্বর আদালত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন।

এ ছাড়া, মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ভুয়া জন্মদিন পালন করার অভিযোগ এনে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ১৭ নভেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Prolonged Middle East conflict to affect Bangladesh: PM

Prime Minister Sheikh Hasina today told parliament that the ongoing conflict in the Middle East, if escalates and gets prolonged, will affect Bangladesh socially, politically, and economically

2h ago