পথে নামুন অথবা পদ ছাড়ুন

বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের সতর্ক করে বলেছে, আসন্ন সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাস্তায় নেমে আসতে, না হলে তারা পদ হারাতে পারেন।
তৃতীয় দিনের রুদ্ধদার বৈঠকে অংশগ্রহণকারী বিএনপি নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের সতর্ক করে বলেছে, আসন্ন সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাস্তায় নেমে আসতে, না হলে তারা পদ হারাতে পারেন।

এ ছাড়াও, দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যারা পথে নামবেন, তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে পুরস্কৃত করা হবে।

উল্লেখ্য, আন্দোলনের সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ এখনও ঘোষিত হয়নি।

গতকাল রাতে দলের চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতাদের এই বার্তা দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের সাধারণ নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণের উদ্দেশ্যে আয়োজিত তিনটি বৈঠকের সর্বশেষ বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র।

সর্বমোট ৯৫ জন নেতাকে এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। লন্ডন থেকে তারেক রহমান ভার্চুয়ালি এসব বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

সূত্রের বরাতে জানা গেছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠকে জানান, আগামীকাল (শুক্রবার) দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আরও বৈঠকের প্রয়োজন আছে কিনা, কারণ নেতৃবৃন্দ এখনও দলের জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেনি।

সূত্র আরও জানান, দলের মধ্যমসারির নেতারা বৈঠকে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ খুবই বিরক্ত হয়েছে।

একজন বিএনপি নেতার বরাত দিয়ে সূত্র জানায়, 'আপনারা সবাই আন্দোলনের কথা বলছেন। আপনারা সংগঠনকে বলিষ্ঠ করার কথা বলছেন। কারা এটা করবে? আপনাদেরই এই কাজ করতে হবে।'

আরেকজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, তারা একসময় দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে ছিলেন, কিন্তু কখনও জ্যেষ্ঠ নেতাদের প্রতি অপমানসূচক কোনো বক্তব্য রাখেননি।

বৈঠকের আরেকটি সূত্র উল্লিখিত জ্যেষ্ঠ নেতার উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, 'দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আপনাদের ২ বছর সময় দিয়েছেন, কিন্তু আপনারা এই পুরো সময় জুড়ে কী করেছেন?'

যুবদলের এক নেতা জানতে চান কেন সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনগুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ কমিটি গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছে। উত্তরে অন্য একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, 'যখনই কোনো সমস্যা দেখা দেয়, আপনারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে দোষারোপ করেন। আপনারা ভুল করেন আর দোষ চাপান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ওপর, কেন?'

যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব জানান, বিএনপি আন্দোলনকারীর সংকটে ভুগছে এবং এই সংকট নিরসনে ছাত্রদল ও শ্রমিক দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

শ্রমিক দলের নেতারা শিগগির সংগঠনের সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দলের প্রতি আহ্বান জানান।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার পর এবারই প্রথম এ ধরনের বেশ কিছু বড় ধরনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।

একইসঙ্গে, তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার পর এটিই বিএনপি আয়োজিত সবচেয়ে বড় আকারের বৈঠক।

খালেদা জিয়া বর্তমানে জামিনে জেল থেকে মুক্ত আছেন এবং একাধিক মামলার আসামি তারেক রহমান লন্ডনে পলাতক।

প্রতিবেদনটি অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments