‘আমিও চেয়েছি আমার মায়ের কথাগুলো মানুষ জানুক’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার মা আমার বাবাকে সব সময় প্রেরণা দিয়ে গেছেন। তার সময়োপযোগী উদ্যোগ আমাদের দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং বাস্তবায়ন করতে যথেষ্ট অবদান রেখে গেছে। অনেক কথাই আমি ইতোমধ্যে বলেছি-লিখেছি। আমিও চেয়েছি আমার মায়ের কথাগুলো মানুষ জানুক।
ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার মা আমার বাবাকে সব সময় প্রেরণা দিয়ে গেছেন। তার সময়োপযোগী উদ্যোগ আমাদের দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং বাস্তবায়ন করতে যথেষ্ট অবদান রেখে গেছে। অনেক কথাই আমি ইতোমধ্যে বলেছি-লিখেছি। আমিও চেয়েছি আমার মায়ের কথাগুলো মানুষ জানুক।

আজ রোববার সকালে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও 'বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদক-২০২১ প্রদান' অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

গণভবন থেকে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ভার্চুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, 'আমি আমার মায়ের সব থেকে কাছের এবং তার সুখ-দুঃখের সাথী। তার জীবনের অনেক কাহিনী আমি যতটা শুনেছি এ রকম আর কারো শোনার সুযোগ হয়নি। তার যে ধৈর্য্য, সাহস এবং সময়োপযোগী উদ্যোগ নেওয়া যা আমাদের দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং বাস্তবায়ন করতে যথেষ্ট অবদান রেখে গেছে। আর পাঁচটা নারীর মতো বা সংসারের কত্রীর মতো আমার মায়ের যদি নানা রকমের চাহিদা থাকতো— স্বামীর কাছে মানুষের অনেক আকাঙ্ক্ষা থাকে, অনেক কিছু পাওয়ার থাকে। কত মানুষ কত কিছুই তো চায়, শাড়ি চায়, বাড়ি চায়, গহনা চায়; আমার মা কিন্তু কোনো দিন সংসারে বা নিজের ব্যক্তিগত জীবনে বা আমাদের জন্য কখনো কোনো ব্যাপারে আমার বাবার কাছে কোনো চাহিদা তার ছিল না।'

'বরং সব সময় তিনি এটাই বলতেন, সংসার নিয়ে ভাবতে হবে না, চিন্তা করতে হবে না, আমাদের কথা ভাবতে হবে না। তুমি দেশের কাজ করছো, দেশের কাজেই করো। দেশের কথাই চিন্তা করো। তাই বারবার যখনই আমার বাবা কারাগারে গেছেন, আমার মা কিন্তু সব সময় তাকে উৎসাহ দিয়েছেন। একটা জিনিসের যে প্রেরণা দেওয়া, ঠিক সে প্রেরণাটাই তিনি দিয়ে গেছেন সারাটা জীবন। অনেক কথাই আমি ইতোমধ্যে বলেছি-লিখেছি। আমিও চেয়েছি আমার মায়ের কথাগুলো মানুষ জানুক', বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, 'আজকে একটি দিবস যেদিন আমাদের মায়ের জন্ম। তার জন্মদিনটি আমরা পেলাম কীভাবে তার পেছনে একটি ইতিহাস আছে। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটি খুব ধীরে ধীরে তৈরি করা হয়েছে। একবারে করা সম্ভব হয়নি। আব্বা আজকে জেলে কালকে বাইরে, আমার মা-ই উদ্যোগ নিয়ে শুরু করেছিলেন। সোহরাওয়ার্দী সাহেব ঢাকায় এসে আমাদের বাড়ি দেখতে আসেন। তিনি যখন ফিরে যান, ফিরে যাওয়ার সময় প্লেনে কয়েকটা সিঁড়ি উঠে আবার নেমে আসেন। আব্বাকে বলেন, মুজিব তোমার বাড়িটা হেবা করে তোমার স্ত্রীর নামে লিখে দাও। পকেট থেকে কিছু টাকাও বের করে দেন, কারণ রেজিস্ট্রি করতে ট্যাক্স দিতে হবে। ১৯৬২ সালের কথা। হেবা করতে বিয়ের কাবিননামা দরকার। কাবিননামা ছিল আমার দাদার কাছে। আমাদের খুব আগ্রহ ছিল কী লেখা আছে পড়ে দেখবো। আমরা সেখান থেকেই মায়ের জন্ম তারিখটা পাই।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'পাকিস্তান রাষ্ট্র হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আমার বাবা শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে সব সময় রিপোর্ট দিতো। সেই রিপোর্টগুলো যে আমি প্রকাশ করেছি, আমি খুঁজে বেরিয়েছি কোথাও আমার মায়ের কথা লেখা আছে কি না। সেখানে তারা আমার মায়ের বিরুদ্ধে কিছুই লিখতে পারেনি। অথচ আমার মা রাজনীতিতে এত সক্রিয় ছিলেন— গোপনে দলের লোকজনের সঙ্গে দেখা করা, ছাত্রলীগের সাথে যোগাযোগ রাখা, তাদের নির্দেশনা দেওয়া। গেরিলা যুদ্ধে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমি সব সময় বলি আমার মা ছিলেন সব চেয়ে বড় গেরিলা।'

Comments

The Daily Star  | English

Three difficult choices to heal economy

Bangladesh yesterday made three major decisions to cushion the economy against critical risks such as stubborn inflation and depletion of foreign currency reserves.

1h ago