বাংলাদেশ

‘যুক্তরাষ্ট্রের লবিস্ট ফার্মে বিএনপির দেওয়া অর্থের উৎস তদন্ত করবে সরকার’

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বিএনপি গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে যে অর্থ ব্যয় করেছে, তার উৎস সম্পর্কে সরকার তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম। ছবি: সংগৃহীত

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বিএনপি গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে যে অর্থ ব্যয় করেছে, তার উৎস সম্পর্কে সরকার তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার বলে জানান তিনি।

আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকার যুক্তরাষ্ট্রে কোনো লবিস্ট নিয়োগ করেনি বরং বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার পাশাপাশি দেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণার বিরুদ্ধে লড়াই করতে পিআর ফার্ম নিয়োগ করেছে।'

তিনি বলেন, 'গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে বিএনপি ৩টি চুক্তি করেছে। আমরা হিসাব করে দেখেছি এ খাতে বিএনপি অন্তত ৩৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার ব্যয় করেছে।'

'জামায়াতে ইসলামীও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে বিশেষ করে ২০১৩-১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে নিউইয়র্কভিত্তিক অর্গানাইজেশন ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসসহ কিছু মার্কিন লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছিল,' যোগ করেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, 'জামায়াতে ইসলামী তাদের নাম ব্যবহার না করলেও লক্ষ্য অর্জনে অন্যান্য সংগঠনকে ব্যবহার করতে পারে।'

এ সময় তিনি বেশ কিছু নথি উপস্থাপন করেন। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হাউস কমিটি অন ফরেন অ্যাফেয়ার্স, সিনেট অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন সাবকমিটি অন স্টেট, ফরেন অপারেশনস অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের লেখা চিঠি দেখান তিনি।

এ প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, 'বাংলাদেশে বিদেশি সহায়তা বন্ধ করতে এবং মানবাধিকার প্রসঙ্গে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের চাপ বাড়াতে বিএনপি লবিং করেছে।'

তিনি বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি, বিএনপি-জামায়াত গোপনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'লবিংয়ের জন্য বিএনপি যে অর্থ ব্যয় করেছে তা বৈধ কি না এবং নির্বাচন কমিশনে ওই অর্থের ঘোষণা দেওয়া আছে কি না, তা জানতে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকে নথি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'

সে অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'মার্কিন আইনে লবিস্ট নিয়োগ বৈধ । তবে এ জন্য ব্যয় করা অর্থের উৎস বৈধ কি না তা নিশ্চিত করতে তাদেরও ভূমিকা আছে।'

'যারা গণতন্ত্র ও বিবেকবোধে বিশ্বাস করেন তাদের দেখা উচিত যে এই রাজনৈতিক দলগুলো যে অর্থ ব্যয় করেছে তার উৎস ঠিক আছে কি না,' যোগ করেন শাহরিয়ার আলম।

যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগের লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, 'বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা ঠেকাতে বাংলাদেশ একটি পিআর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করেছিল। সেটি ২০১৩-১৪ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচারের সময় শুরু হয়েছিল। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ আছে।'

তিনি বলেন, 'এসডিজি, নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে হবে। এটা কোনোভাবেই লবির জন্য নয়, বাংলাদেশকে তুলে ধরার জন্য।'

র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর সরকার কোনো লবিস্ট ফার্ম নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে এমন কিছু করা হয়নি।

তিনি বলেন, 'নগদ অর্থের সঙ্গে সম্পর্কিত পথ ব্যবহার করে আমরা রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিশ্বাসী নই। আমরা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করব এবং আশা করি তার ফল আসবে।'

Comments

The Daily Star  | English
High temperature days record in Bangladesh

High Temperature Days: Barring miracle, record of 76yrs breaks today

At least 23 days of this month were heatwave days, which equals the record set in 2019 for the entire year.

14h ago