বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস

গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় চ্যালেঞ্জ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: সম্পাদক পরিষদ

আজ ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে বা বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘জার্নালিজম আন্ডার ডিজিটাল সিজ’ বা ‘ডিজিটাল নজরদারিতে সাংবাদিকতা’।

আজ ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে বা বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য 'জার্নালিজম আন্ডার ডিজিটাল সিজ' বা 'ডিজিটাল নজরদারিতে সাংবাদিকতা'।

দিবসটি উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আজ এক বিবৃতিতে বলেছে, ডিজিটাল যুগে বাংলাদেশে সাংবাদিকতা নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এর মধ্যে যেটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে তা হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।

সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ বিবৃতিতে বলেন, অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে এবং অনেকে গ্রেপ্তারও হয়েছেন। শুধু সাংবাদিক নন, বিভিন্ন ক্ষেত্রের অ্যাক্টিভিস্ট, শিল্পী, লেখকরাও এ আইনে মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। শুরু থেকেই সম্পাদক পরিষদ এবং সাংবাদিকরা এ আইনের বিষয়ে উদ্বেগ, আপত্তি জানিয়েছেন। কিছুদিন আগে আইনমন্ত্রীও বলেছেন, এ আইনের বিভিন্ন রকম অপব্যবহার হয়েছে এবং তিনি আইনটি সংশোধনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। মন্ত্রীর বক্তব্য সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগকে যথার্থ বলে প্রমাণ করেছে।

ফ্রান্সভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের তৈরি করা ২০২১ সালের বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বিশ্বে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৫২তম। সম্পাদক পরিষদ বলেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ আরও অনেক প্রতিবন্ধকতা ও হুমকি মোকাবিলা করে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে অ্যাজোলে বলেছেন, ডিজিটাল যুগের সুযোগ ও ঝুঁকি বিষয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে। তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিকতা ও সাংবাদিকদের রক্ষা করবে এমন একটি ডিজিটাল ব্যবস্থার রূপরেখা তৈরির জন্য।

ইউনেস্কোর 'থ্রেটস দ্যাট সাইলেন্স: ট্রেন্ডস ইন দ্য সেফটি অব জার্নালিজম' শীর্ষক পেপার থেকে দেখা যায়, দুনিয়াজুড়ে ডিজিটাল নজরদারি ও হ্যাকিং সাংবাদিকতাকে বিপদগ্রস্ত করছে। ডিজিটাল নজরদারি সাংবাদিকের সংগ্রহ করা তথ্যকে প্রকাশ করে দিতে পারে। এতে তার সোর্সের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। এমন নজরদারি সাংবাদিকের ব্যক্তিগত তথ্যকে উন্মুক্ত করে দিতে পারে, যা তার নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করবে। এ পেপারে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে অনলাইনে নিগ্রহ, নজরদারি, হ্যাকিংয়ের মতো ডিজিটাল অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে সাংবাদিকের নিরাপত্তা ও পেশাগত স্বাধীনতা বিঘ্নিত করা হচ্ছে। রাষ্ট্র এবং নন-স্টেট প্রতিষ্ঠান উভয়ই সাংবাদিকদের চাপে ফেলতে এসব ডিজিটাল কৌশল ব্যবহার করছে। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের ওপর ডিজিটাল হুমকির ঘটনা বাড়ছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রে নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক ডিজিটাল নজরদারির পরিধি বৃদ্ধি স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করছে। কোভিড মহামারিকাল থেকে সাংবাদিকতায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। এ কারণে ডিজিটাল হুমকি থেকে সাংবাদিকদের সুরক্ষা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এ বছর ২ থেকে ৫ মে উরুগুয়ের পুন্টা ডেল এস্টে শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে গ্লোবাল কনফারেন্স। 'জার্নালিজম আন্ডার ডিজিটাল সিজ' প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এ সম্মেলনে ডিজিটাল যুগে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্যের অধিকার ও গোপনীয়তা বিষয়ে আলোচনা হবে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নীতিনির্ধারক, সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট, ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোর নীতিনির্ধারক, সাইবার নিরাপত্তা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ, আইনজীবীরা ডিজিটাল দুনিয়ায় সংবাদিকদের নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের কাজের সক্ষমতা ও জনগণের আস্থা বিষয়ে আলোচনা করছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladeshi students terrified over attack on foreigners in Kyrgyzstan

Mobs attacked medical students, including Bangladeshis and Indians, in Kyrgyzstani capital Bishkek on Friday and now they are staying indoors fearing further attacks

25m ago