উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বিশ্বে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ তৈরি হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ জাতীয় সংসদে বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের কারণে সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে ব্রান্ডিং করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ জাতীয় সংসদে বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের কারণে সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে ব্রান্ডিং করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, 'সব বাধাবিপত্তি ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই গতি যেন আর কেউ রোধ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক রকম চক্রান্ত ষড়যন্ত্র থাকবে। সেইগুলো মাথায় নিয়ে আমাদের চলতে হবে। যতই সমালোচনা হোক বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং করে যাবো। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।'

আজ রোববার একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন। বক্তব্যের প্রায় পুরো অংশ জুড়েই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সার্বিক প্রেক্ষাপট এবং এক্ষেত্রে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, 'উন্নয়নশীল দেশে যাওয়ার কারণে আমরা সুবিধা যেমন পাবো তেমনি, স্বল্পোন্নত দেশের সুযোগগুলো পাবো না। অবশ্য আমরা ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছি করোনাকালের সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য।'

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে গ্রাজুয়েশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য এটি সম্ভব হয়েছে। জনগণের সার্বিক উন্নয়নে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীতে এই অর্জন আমাদের জন্য অনেক গৌরবের। এটি বাঙালি জাতির বিরল সম্মান ও অনন্য অর্জন। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগিয়েছি বলেই আমরা অর্জন করতে পেরেছি। অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সমালোচনায় আমরা কান না দিয়ে অভীষ্ঠ লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছি। সঠিক দিক নির্দেশনা নিয়েই আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করি।'

বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, 'জনগণ প্রতিটি নির্বাচনে বিজয়ী করার কারণে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। এই কাজ আমরা সহজভাবে করতে পেরেছি কিন্তু তা নয়। এই যাত্রাপথ কখনো সুগম ছিল না। আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছে। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, গাড়িতে আগুন, অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধ- সেই অবরোধ বিএনপি এখনো প্রত্যাহার করেনি।'

তিনি বলেন, উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টির জন্য নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলা করতে করেছে। এরপরে এই কোভিড-১৯ ও আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। বিশ্বের অর্থনীতির চাকা যখন স্থবির তখন আমরা চাকা সহজ রেখেছি। এর ফলাফল দেশের অর্থনীতি গতিশীল রেখে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। এজন্য আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি। এটা বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাবে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হতো। জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ বা বেগম জিয়ার কথা বলেন তারা তো কেউ দেশকে উন্নত করতে চাননি। ক্ষমতা তাদের কাছে ছিল ভোগের বস্তু ও বিলাসবহুল জীবন। সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কেউ এগিয়ে আসেনি।'

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এসময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, 'যাদের জন্য জাতির পিতা সারাটা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেছেন সেই বাঙালী জাতির হাতে তার জীবন দিতে হলো। এ সময় দলের দায়িত্ব নেয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সব কিছু জেনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি দেশে ফিরে আসি। সেই লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছি। বার বার আঘাত এসেছে কিন্তু কেন জানি না আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন বার বার বাঁচিয়েছেন। সেবা করার সুযোগ পেয়েছি বলেই একটা মর্যাদায় বাংলাদেশকে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি।'

Comments

The Daily Star  | English
IMF suggestions for Bangladesh

IMF suggests raising power, gas and fertiliser prices

The International Monetary Fund yesterday recommended reducing government subsidies by hiking prices of power, gas and fertiliser, and spending the saved money on society safety net programmes.

17h ago