লালমনিরহাটে পুলিশের নির্যাতনে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ

লালমনিরহাটে বৈশাখী মেলা থেকে জুয়াড়ি সন্দেহে এক যুবককে আটকের পর পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
৮ মাসের সন্তান কোলে নিহত রবিউলের স্ত্রী মনিরা বেগমের আহাজারি। ইনসেটে রবিউল। ছবি: স্টার

লালমনিরহাটে বৈশাখী মেলা থেকে জুয়াড়ি সন্দেহে এক যুবককে আটকের পর পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

নিহত যুবকের নাম রবিউল ইসলাম (২৬)। তিনি লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের কাজীর চওড়া গ্রামের বাসিন্দা। এই ঘটনার পর মধ্যরাতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে জনতা।

নিহতের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কাজীর চওড়া গ্রামে বৈশাখী মেলা থেকে রবিউলকে জুয়াড়ি সন্দেহে আটক করে পুলিশ। আটকের পর তাকে বেদম প্রহার করা হয়। এতে রবিউল সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবশ্য লালমনিরহাট জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলামের দাবি, নিহত রবিউল একজন চিহ্নিত জুয়াড়ি। তিনি অসুস্থ ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, 'পুলিশ যদি তাকে (রবিউল) নির্যাতন করে থাকে, আর সে কারনে যদি তার মৃত্যূ হয়, তাহলে আমরা এটা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করব। দোষী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।'

ময়নাতদন্তের পর রবিউলের মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

স্থানীয়রা বলছেন, নিহত রবিউল পেশায় কাঠ ব্যবসায়ী ছিলেন। তার ৮ মাস বয়সী একটি মেয়ে আছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষর্শীদের ভাষ্য, বৈশাখী মেলায় আসা রবিউলকে জুয়াড়ি সন্দেহে আটক করলে পুলিশের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। সে সময়েই পুলিশ তাকে মারতে থাকে। ঘটনাস্থলেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তিনি।

নিহত যুবকের ছোট ভাই সোহাগ খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার কখনোই জুয়া খেলত না। সে তার বাচ্চার জন্য খেলনা কিনতে মেলায় গিয়েছিল।'

সোহাগ খানের দাবি, পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হালিমুর রহমানের নির্যাতনেই তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, 'আমরা এখন দোষী পু্লিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।'

নিহতের স্ত্রী মনিরা বেগম ও মা সাফিয়া বেগম জানান, রবিউল ছিলেন তাদের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তারা ২ জনই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হালিমুর রহমানের বিচার দাবি করেন।

এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে অভিযুক্ত হালিমুর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) কামরুল হাসান প্রিন্স সাংবাদিকদের বলেন, 'কীভাবে রবিউললের মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতন্ত প্রতিবেদন ছাড়া বলা যাচ্ছে না।'

Comments

The Daily Star  | English
Effects of global warming on Dhaka's temperature rise

Dhaka getting hotter

Dhaka is now one of the fastest-warming cities in the world, as it has seen a staggering 97 percent rise in the number of days with temperature above 35 degrees Celsius over the last three decades.

10h ago