পেছাল খালেদা জিয়ার গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার চার্জ গঠন শুনানি
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির পরবর্তী তারিখ আগামী বছরের ২৩ জানুয়ারি নির্ধারণ করেছেন আদালত।
আজ বুধবার ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মুহাম্মদ আলী হোসেন পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে বিচার কাজ মুলতবি ঘোষণা করেন।
বিভিন্ন কারণে আদালত এই মামলার শুনানি ৩৬ বারের মতো মুলতবি ঘোষণা করলেন। এর আগে বিচারিক আদালত আসামি জুলফিকার আলীর জামিন আবেদন খারিজ করেন এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন।
আদালত সূত্র জানায়, জুলফিকার আলী আজ আদালতে উপস্থিত হননি। এমনকী হাজিরা খাতাও আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার এটি দুটি পৃথক আবেদন করেন। আবেদনে আসামির অনুপস্থিতির অনুমোদন এবং শুনানি স্থগিত চেয়ে আদালতের আদেশ প্রার্থনা করা হয়।
আবেদনপত্রে মাসুদ উল্লেখ করেছেন, বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা নিয়ে গত ১৪ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যে কারণে তিনি আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারের বাইরে রয়েছেন।
বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং এই মামলার বাকি ১০ আসামি বর্তমানে জামিনে আছেন। তারা আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও ২ আসামি আজ আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তাদের পক্ষে আইনজীবী আদালতে অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেন।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী ৪ দলীয় জোট সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেন। মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।
মামলার ২৪ আসামির মধ্যে ৫ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন এবং একজনের যুদ্ধাপরাধ মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয়। তারা হলেন—সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, এম কে আনোয়ার, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী, চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম ও বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো।
অন্য আসামিরা হলেন—বিএনপির সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক চেয়ারম্যান কমোডোর জুলফিকার আলী, প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল (অব.) আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আকবর, ২ ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল অ্যাগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, গ্যাটকোর পরিচালক সৈয়দ তানভীর আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এ এস এম শাহাদত হোসেন, বন্দরের সাবেক পরিচালক (পরিবহন) এ এম সানোয়ার হোসেন এবং বন্দরের সাবেক সদস্য লুৎফুল কবীর।
Comments