অপরাধ ও বিচার

কলাপাড়ায় জেলের মৃত্যুর ঘটনায় ৪ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নৌ-পুলিশের নির্যাতনে চরবালিয়াতলী গ্রামের জেলে সুজন হাওলাদারের (৩০) মৃত্যুর অভিযোগে বানাতিবাজার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি থেকে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নৌ-পুলিশের নির্যাতনে চরবালিয়াতলী গ্রামের জেলে সুজন হাওলাদারের (৩০) মৃত্যুর অভিযোগে বানাতিবাজার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি থেকে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আজ বুধবার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শহিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ খবর নিশ্চিত করেন। 

ওই ঘটনার পটুয়াখালী জেলা পুলিশ ও নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিগুলোকে দুদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

প্রত্যাহার হওয়া এএসআই মামুন-উর-রশীদ, কনেস্টবল সাজ্জাদ, সুমন ও রিয়াজ বর্তমানে কলাপাড়া থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

এ ছাড়া, ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে লাশের সুরতহাল শেষে নিহত জেলে সুজনের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে পটুয়াখালী পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া, নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।' 

জানা গেছে, বানাতিবাজার নৌপুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা এএসআই মামুনের নেতৃত্বে ট্রলারে করে রামনাবাদ নদীতে একটি ট্রলারে থাকা পাঁচ জেলেকে ধাওয়া করলে তারা ট্রলারটি তীরে ভিড়িয়ে চার জন দৌড়ে পালায় এবং ট্রলারে থাকা জেলে সুজনকে মারধর করে নৌপুলিশ। এক পর্যায়ে সুজন ট্রলারের জালের ওপর অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর খবর ছড়িয়ে পড়ে সুজন মারা গেছেন। 

এই ঘটনায় জেলেসহ বিক্ষুব্ধ শতাধিক মানুষ ট্রলারসহ নৌপুলিশের সদস্যদের অবরুদ্ধ করেন। অচেতন সুজনকে স্বজনরা প্রথমে বাবলাতলা বাজারে নিয়ে যান। পরে তাকে কলাপাড়া উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

পুলিশের মারধরে সুজনের মৃত্যু হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। জেলেসহ শতাধিক স্থানীয় জনতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এ ঘটনায় পুলিশের বিচার দাবি করে শ্লোগান দেয় এবং ট্রলারসহ পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। 

পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পুলিশের কর্মকর্তারা বিচারের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা শান্ত হয় এবং ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর চার পুলিশ সদস্যকে বিকেল ৪টার দিকে উদ্ধার করে কলাপাড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে কলাপাড়া থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে জেলে সুজনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

The contradiction of comfort

How comfortable is it to not have clean air to breathe?

6h ago