অনুমতি না নিয়ে সরকারি অফিসের সামনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সমাবেশ
অনুমতি না নিয়েই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনের মাঠে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ওই চত্বরে থাকা ৬টি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিসের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি সেবাগ্রহীতারা ভোগান্তিতে পড়েন।
সরকারি অফিসের সামনে ঘটা করে রাজনৈতিক দলের এমন সমাবেশের আয়োজন করায় অসন্তোষ জানিয়েছেন অনেকেই। তবে এ নিয়ে সরকারি অফিসের সংশ্লিষ্টরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নিজ কার্যালয়ের সামনে এমন সমাবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে নাসিরগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হালিমা খাতুন বলেন, 'এখানে সমাবেশ করার জন্য বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও আমার নিষেধাজ্ঞা কেউ মানেননি। এই সমাবেশ করার ব্যাপারে কোনো ধরনের অনুমোদন নেই।'
তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রামকে জানিয়েছিলাম।
তাহলে তারা কীভাবে সমাবেশ করছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নাসিরনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় প্রাঙ্গণে উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস, হিসাব রক্ষণ অফিস, কৃষি অফিস, খাদ্য অফিস, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কোনো ধরনেরর পূর্বানুমতি ছাড়াই সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়গুলোর সামনে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে বিশাল আকারের প্যান্ডেল এবং মঞ্চ তৈরি করা হয়। এতে ইউএনওর কার্যালয়ের সামনের পুরো মাঠ দখল করা হয়।
দুপুর ১২টার দিকে ওই সম্মেলন মঞ্চে আসেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি বাবু নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এসময় স্থানীয় সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম সম্মানিত অতিথি হিসেবে মঞ্চে আসেন।
এদিকে অফিস খোলার দিনে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিসের সামনে রাজনৈতিক দলের সমাবেশের আয়োজন করায় ভোগান্তিতে পরেন সেবা গ্রহীতারা। নাসিরনগর উপজেলার প্রত্যন্ত গোয়ালনগর থেকে উপজেলা কৃষি অফিসে আসা ফরিদ মিয়া বলেন, 'বীজ ও সারের বিষয়ে খোঁজ নেয়ার জন্য কৃষি অফিসে এসেছিলাম। এসে দেখি মিটিং চলছে। মানুষের ভিড়ের কারণে অফিসে ঢুকতে পারিনি। এত দূর থেকে এসেও ফিরে যেতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, অফিস খোলার দিনে সরকারি অফিসের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করে পূর্ব-অনুমোদন ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দলের সমাবেশ করার সুযোগ নেই। তবে সেখানে কীভাবে এই রাজনৈতিক দলের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে এটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। এ বিষয়ে তিনি খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. বদরুদ্দোজা ফরহাদ হোসেন সংগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উপজেলা ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলতে পারবেন তারা কীভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছেন।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি লোকমান হোসেন বলেন, 'আমরা অন্য জায়গায় সমাবেশটি করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে সরকারি অফিসের সামনে সমাবেশ করেছি। এজন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে ক্ষমা চান তিনি।
Comments