মঞ্চ ও সংগীত

অন্যদের না গাওয়া গান গেয়েই আশা ভোসলে

হিন্দি সিনেমায় তখন লতা মঙ্গেশকর, নূরজাহান ও গীতা দত্তদের প্রচণ্ড দাপট। তাদের গাওয়ার পর কোনো গান থেকে গেলে সেগুলো গাইতেন আশা ভোসলে।
আশা ভোসলে। ছবি: সংগৃহীত

হিন্দি সিনেমায় তখন লতা মঙ্গেশকর, নূরজাহান ও গীতা দত্তদের প্রচণ্ড দাপট। তাদের গাওয়ার পর কোনো গান থেকে গেলে সেগুলো গাইতেন আশা ভোসলে।

পণ্ডিত যশরাজ একবার আশাকে বলেছিলেন, বাণিজ্যিক সিনেমার গান ছেড়ে ধ্রুপদী গাওয়া শুরু করুন। বাস্তবতা হলো, আশা তা করলে তার তিন সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে সমস্যায় পড়তেন। তিনি মূলত গান গাইতেন সেই কারণেই।

লতা, নূরজাহান, শামসাদ বেগম ও গীতা দত্তদের থেকে অন্যরকম গান গাওয়ার চেষ্টা করতেন আশা। তার হাতে উল্লেখযোগ্য গান আসতে সময় লেগেছিল প্রায় ১৪ বছর।

খ্যাতিমান পরিচালক বিমল রায় পরিচালিত 'পরিণীতা' ও রাজ কাপুরের 'বুট পালিশ'-এ কণ্ঠশিল্পী মোহাম্মদ রফির সঙ্গে 'নানহে মুন্নে বাচ্চে' গেয়ে শ্রোতাদের মন জয় করেন তিনি।

শ্রোতারা আশা ভোসলের নামের সঙ্গে পরিচিত হন দিলীপ কুমার অভিনীত 'নয়া দৌড়' সিনেমায় 'মাঙ্গকে সাথ তুমহারা' গানের পর।

সেসময়ে পারিবারিক জীবনে অশান্তির কারণে ধীরে ধীরে সংগীত থেকে দূরে সরে যান গীতা দত্ত। তখন আশা ভোসলের সুযোগ তৈরি হয়।

আশা নিজের প্রতিভার প্রমাণ করেছিলেন 'কালা পানি', 'কালা বাজার', 'ইনসান জাগ উঠা', 'লাজবন্তি' ও 'সুজাতা' সিনেমায় প্লেব্যাক করে।

'নয়া দৌড়'-এ সাহির লুধিয়ানভির গীত-রচনায় মোহাম্মদ রফির সঙ্গে গাওয়া 'মাঙ্গকে সাথ তুমহারা', 'সাথী হাত বাড়হানা' ও 'উড়ে যব যব জুলফে তেরি' গান তিনটি গাওয়ার পর আশা ভোসলেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী আশা ভোসলের জন্মদিন আজ। তিনি ৮৮ বছরে পা রাখলেন। ১৯৩৩ সালের আজকের দিনে মহারাষ্ট্রের সাংলিতে জন্মগ্রহণ করেন আশা। মাত্র নয় বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে পরিবারের সঙ্গে পুনে থেকে চলে আসেন কোলহাপুরে, পরে মুম্বাইয়ে।

১৯৪৩ সালে প্রথমবার সিনেমায় গান করেন আশা ভোসলে। মারাঠি সিনেমা 'মাঝা বাল'র 'চালা চালা নভ বালা' গানটি শোনা যায় তার কণ্ঠে। ১৯৪৮ সালে হিন্দি সিনেমায় পা রাখেন হংসরাজ বেহলের 'চুনারিয়া' দিয়ে। তবে হিন্দি সিনেমায় আশার প্রথম একক গান শোনা যায় ১৯৪৯ সালে মুক্তি পাওয়া 'রাত কি রানি'-তে।

ক্যাবারে, রক, ডিসকো, গজল ও ভারতীয় ধ্রুপদীতে খ্যাতিমান তিনি। হিন্দি সিনেমার গানে তাকে 'মেহবুবা-কন্যা' বলা হয়। সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ড করার জন্যে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে তার নাম আছে। পেয়েছেন দাদাসাহেব ফালকে ও পদ্মবিভূষণসহ অনেক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার।

তথ্য: আশা ভোসলের টেলিভিশন সাক্ষাতকার ও টাইমস অব ইন্ডিয়া

Comments