লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করছে ক্যাবল অপারেটররা: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১৭টি টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনমুক্ত (ক্লিনফিড) সম্প্রচার হয়। এই চ্যানেলগুলো সম্প্রচারে কোনো আইনগত বাধা নেই। কিন্তু ক্যাবল অপারেটররা লাইসেন্সের শর্তভঙ্গ করে এগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করেছেন।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১৭টি টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনমুক্ত (ক্লিনফিড) সম্প্রচার হয়। এই চ্যানেলগুলো সম্প্রচারে কোনো আইনগত বাধা নেই। কিন্তু ক্যাবল অপারেটররা লাইসেন্সের শর্তভঙ্গ করে এগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করেছেন।

আজ রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'আমরা কোনো চ্যানেল বন্ধ করিনি, বন্ধ করার জন্যও বলিনি। বাংলাদেশের আকাশ উন্মুক্ত। এখানে যে কোনো চ্যানেল সম্প্রচার করতে পারে, কিন্তু দেশের আইন মেনে করতে হয়।'

মন্ত্রী বলেন, 'আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে যে কোনো বিদেশি চ্যানেল বিজ্ঞাপন মুক্তভাবে সম্প্রচার করতে হয়। সব দেশে আইন মেনে চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করে থাকে। শুধু আমাদের দেশে আইনকে বছরের পর বছর ধরে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করা হচ্ছিল। আমরা আইন বাস্তবায়নের কথা দুই বছর আগে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলেছিলাম। বেশ কয়েকবার তাগাদা দেয়া হয়েছে, নোটিশ করা হয়েছে। গত মাসের শুরুতে তাদের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো বসে সিদ্ধান্ত হয় ১ অক্টোবর থেকে আইন কার্যকর করা হবে।'

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, 'কেউ কেউ বলছে ডিজিটালাইজড না হওয়া পর্যন্ত আইন শিথিল রাখতে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার পুরোটা ডিজিটালাইজড হয়নি। সেখানে আইন কার্যকর আছে। আমাদের দেশে এ ধরনের অজুহাত তোলার কোনো যুক্তি নেই।'

তিনি বলেন, 'ক্লিনফিড যেহেতু পায়নি সেজন্য তারা সরকারের নির্দেশনা মেনে বন্ধ রেখেছে। সেটাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তাদের আগেই সময় দেওয়া হয়েছিল যাতে তারা সংশ্লিষ্ট চ্যানেলগুলোকে ক্লিন ফিড পাঠানোর জন্য বলে এবং তারাও প্রস্তুতি নেয়। যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে, ২ বছর সময় দেওয়া হয়েছে। আমি ২ বছর আগ থেকে তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। এর আগেও এই আইন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম।'

মন্ত্রী বলেন, 'বিসিবি, সিএনএন, আল জাজিরা, ফ্রান্স টিভি, রাশান টিভি, ইউরো টিভি, অ্যানিমেল প্ল্যানেটসহ ১৭ টিভি বাংলাদেশে ক্লিনফিডে আসে। সেগুলোও তারা চালাচ্ছেন না। যেটি ক্যাবল অপারেটর লাইসেন্সের শর্তভঙ্গ। কেউ শর্তভঙ্গ করলে শর্তভঙ্গের অপরাধে অভিযুক্ত হবেন। যেসব চ্যানেল ক্লিনফিড পাঠায় না তাদের এজেন্ট আছে। এই দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট চ্যানেল ও এজেন্টের। এটি ক্যাবল অপারেটরদের দায়িত্ব নয়। কিন্তু কোনো কোনো ক্যাবল অপারেটর এজেন্টেদের পাশ কাটিয়ে তারা সরাসরি স্যাটেলাইট থেকে পাইরেসি করে ডাউনলোড করে। সেটি কিন্তু তারা করতে পারেন না। এটি আইন বহির্ভুত।'

'৪ অক্টোবরের পর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে কোয়াব—এই ধরনের আন্দোলনের কথা বলা অযৌক্তিক' বলে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, 'যেসব চ্যানেল দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছে, সংস্কৃতিকে চোখ রাঙাচ্ছে, সেগুলোর পক্ষে ওকালতি করা দেশের স্বার্থ ও আইন বিরোধী। আমি আশা করবো দেশের স্বার্থ বিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত হবেন না। সরকার কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। সরকার দেশের স্বার্থ ঊর্ধ্বে তুলে ধরার জন্য, আইন বাস্তবায়ন করার জন্য বদ্ধ পরিকর।'

তিনি বলেন, 'তারা যদি আলোচনা করতে চায় আলোচনা হতেই পারে। তারা আমাদের সহযোগী। তবে আলোচনার ভিত্তি হবে আইন মানা, দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ।'

মন্ত্রী বলেন, 'এই ব্যাপারে সরকার কয়েকশ কোটি টাকার রাজস্ব হারায়। এই বিনিয়োগ বঞ্চিত হওয়ার কারণে মিডিয়া থেকে অনেকে ছাঁটাই হচ্ছেন। যখন এই বিনিয়োগটা দেশি মিডিয়ার হবে তখন মিডিয়া থেকে ছাঁটাই হওয়াটা বন্ধ হয়ে যাবে বা সেই অজুহাতে ছাঁটাই করা যাবে না। এভাবে পুরো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।'

Comments