এক মাসে ৮ বিদ্যালয় নদীগর্ভে, ঝুঁকিতে আরও ২৫টি
গত এক মাসে তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের ভাঙনে নদীগর্ভে চলে গেছে আটটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আরও ২৫টি।
ভাঙনকবলিত বিদ্যালয়গুলোর আসবাবপত্র সরিয়ে রাখা হয়েছে। তবে নতুন করে বিদ্যালয় নির্মাণের জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না বলে স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন।
কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে, নদী ভাঙনের কারণে কুড়িগ্রামে সাতটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে আরও ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
লালমনিরহাটে নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় আর ভাঙন হুমকিতে রয়েছে আরও পাঁচটি বিদ্যালয়।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তার বুকে ভাঙনকবলিত চিলমারীপাড়া গ্রামের সেকেন্দার আলী (৫৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিস্তার অনবরত ভাঙনে নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে দক্ষিণ সিন্দুর্না প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এটি এই চরে একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়টি এই চরে পুনর্নির্মাণ করা না হলে ছেলে-মেয়েরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়বে।'
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পশ্চিম বজরা গ্রামের আক্কাস আলী মন্ডল (৬০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিস্তার ভাঙনে পশ্চিম বজরা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে চলে গেছে। বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র রক্ষা করা হয়েছে। জায়গার অভাবে বিদ্যালয় পুনর্নির্মাণ করা যাচ্ছে না। বিদ্যালয়টি এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হলে চরের শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে।'
পশ্চিম বজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আফছার আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে চলে গেছে। বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র রক্ষা করে খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিদ্যালয়টি পুনর্নির্মাণের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না। জায়গা পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভাঙনে বিলীন স্কুলগুলো পুনর্নির্মাণের জন্য স্থানীয়ভাবে জমি নির্ধারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙনের মুখে পড়া স্কুলগুলো রক্ষায় জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।'
'নদীগর্ভে বিলীন হওয়া স্কুলগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুনর্নির্মাণ করা হবে। কিন্তু, জায়গা পাওয়া না গেলে স্কুল সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে শিক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' যোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্কুল রক্ষার্থে কয়েকটি জায়গায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ, জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। কয়েকটি স্কুল ঝুঁকিমুক্ত করাও সম্ভব হয়েছে।'
Comments