অঙ্কুরিত হতে শুরু করেছে খেতে কেটে রাখা ধান, কৃষকের মাথায় হাত
ঘূর্ণিঝড় অশনির কারণে টানা কয়েকদিন বৃষ্টিতে ভিজে খেতে কেটে রাখা ধান রোদ না পেয়ে অঙ্কুরিত হতে শুরু করেছে। ফলে কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে। তাদের সকল শ্রম ও চেষ্টা বিফলে যেতে বসেছে। এতে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা। খেতের ফসল ঘড়ে তুলতে না পেরে চরম হতাশা ও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
গত সোমবার থেকে টানা বৃষ্টির কারণে মাঠে কৃষকের কেটে রাখা ধান ভিজে গেছে। ৪ দিনের হালকা, মাঝারি ও ভারী বর্ষণে কৃষকের সোনালী ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে চরম হতাশায় পড়েছেন কৃষক। অনেকে ধান বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করে পানি থেকে তুলে উঁচু জায়গায় নিয়ে আসেন। কিন্তু রোদ না পেয়ে ধান অঙ্কুরিত হতে শুরু করেছে। ধান অঙ্কুরিত হওয়ার মারাত্মকভাবে ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন কৃষকরা।
বিশেষ করে যশোর উপজেলার সোনাকুড়, নিশ্চিন্তপুর, কানাইরালী, দিঘড়ী, শিওরদাহ, সাদিপুর, বল্লা, হাজিরবাগ গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। রাস্তার ওপর উঁচু জায়গায় স্থান পেয়েছে কৃষকের ধান। কিন্তু রোদ না পেয়ে সব ধান অঙ্কুরিত হয়েছে। অঙ্কুরিত ধানে কৃষক ন্যায্যমূল্য পাবেন না এবং খাওয়ার জন্য ভালো চালও তৈরি করতে পারবেন না।
কৃষক হারুন অর রশিদের দেড় বিঘা, হাফিজা বেগমের ১২ কাঠা, ইজাজুল হকের ২ বিঘা, সাইফুল ইসলাম বিল্লুর ১ বিঘা, আব্দুস সাত্তারের দেড় বিঘা, আক্তারুল ইসলামের ৫ বিঘা, মুরাদ হোসেনের ৩ বিঘা, সালিম হোসেনের ৬ বিঘা, মুকুল হোসেনের ২ বিঘা, হাসানুর রহমানের ৫ বিঘা, মনিরুজ্জামান মিন্টুর ১৮ কাঠা, আনারুল ইসলামের ২৪ কাঠা, মুজিবর রহমানের ২ বিঘা, মন্টু মিয়ার দেড় বিঘা, গাজী গোলাম মোস্তফার ১০ কাটা, মিলন হোসেনের ২ বিঘা এবং আবু বক্কর ছিদ্দিকের ৫ বিঘা জমির ধান অঙ্কুরিত হয়ে গেছে।
কৃষক মনিরুজ্জামান মিন্টু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানি থেকে ধান ডাঙায় তুলেছি খুব কষ্ট করে, কিন্তু ধান বাড়ি নিতে পারলাম না। বৃষ্টির কারণে ধান শুকায়নি, ফলে ধানে গাছ বেরিয়ে গেছে। এখন ধান বাড়ি নিয়ে গরুকে খাওয়ানো ছাড়া উপায় নেই।'
কৃষক আনোয়ার হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রায় ৮০ ভাগ কৃষকের ধান ভিজেছে। শুকাতে না পেরে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। ধান, বিচালি সবই হারালো কৃষক।'
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আবহাওয়া এখনো ঝুঁকির মধ্যে। প্রথমে কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বিচালির জন্য তখন ধান কাটেননি তারা। বৈরি আবহাওয়ায় ধান কাটতে নিষেধ করা হয়েছিল। আর যারা ধান কেটেছেন তাদেরকে কাটা ধানে স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, যাতে ধান অঙ্কুরিত না হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাহায্যের চেষ্টা করব।'
Comments