শাবিপ্রবি শিক্ষককে ফেনসিডিল ‘পৌঁছে দিতে গিয়ে’ নিরাপত্তাকর্মী আটক
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের বাসভবনের পাশে অবস্থিত গেস্ট হাউসে অবস্থানরত একজন 'শিক্ষকের' জন্য ফেনসিডিল নিয়ে প্রবেশ করার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাতে আটক হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিরাপত্তাকর্মী।
আটকের পর সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিরাপত্তাকর্মী জাহিদুর রহমানকে কর্তব্যরত পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ দ্য ডেইলি স্টারকে এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পুলিশ এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী ডেইলি স্টারকে জানান, উপাচার্যের বাসভবনে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর থেকে ফটকের সামনের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ওই নিরাপত্তাকর্মীকে আটক করেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউসে অবস্থানরত ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদারের জন্য ফেনসিডিলের বোতলটি নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে শিক্ষার্থীদের কাছে বলেছেন।
উল্লেখ্য, উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটক একইসাথে গেস্ট হাউস ও শিক্ষকদের ডরমেটরিরও প্রধান ফটক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভুক্ত যমুনা সিকিউরিটি এজেন্সির ওই নিরাপত্তাকর্মী বের হওয়ার আগে বাসভবনের প্রধান ফটকের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীদের বলেন যে তিনি শিক্ষকের জন্য ওষুধ আনতে যাচ্ছেন। পরে ওষুধ নিয়ে ফিরে আসার সময় শিক্ষার্থীরা ওষুধ পরীক্ষা করতে গেলে ওষুধের বাক্সে একটি ফেনসিডিলের বোতল দেখতে পান।
পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের জেরার মুখে ওই নিরাপত্তাকর্মী জানান, একজন শিক্ষক গেস্ট হাউসের সামনের খালের ওপারে কিলো সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা এক লোককে দেখিয়ে দেয় এবং তার কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে আসতে বলেন। তখন তিনি বের হয়ে ওষুধ নিয়ে ফেরত আসছিলেন।
তবে নিরাপত্তাকর্মী জাহিদুর রহমান ওই শিক্ষকের পরিচয় জানেন না বলে দাবি করেন।
পরে পুলিশ সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে গেস্ট হাউসে গিয়ে রেজিস্ট্রার খাতা চেক করে ওই নিরাপত্তাকর্মী নিশ্চিত করেন যে অধ্যাপক মাজহারুল হাসান মজুমদার তাকে ওষুধ আনতে পাঠিয়েছিলেন এবং বাক্সের মধ্যে যে ফেনসিডিল আছে তা তিনি জানতেন না।
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, 'অধ্যাপক মাজহার উপাচার্যের অত্যন্ত আস্থাভাজন ব্যক্তি। এই উপাচার্য শাবিপ্রবির সব শিক্ষার্থীর ডোপ টেস্ট করান। এছাড়াও ক্যাম্পাসে চায়ের টং থাকলে তাতে মাদকের ব্যবসা হয় ঘোষণা দিয়ে সব টং দোকান অপসারণ করেছেন। অথচ সেই উপাচার্যের আস্থাভাজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজে বসে মাদক সেবন করেন।'
এ বিষয়ে জানতে অধ্যাপক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনে কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
Comments