ইনডোর প্লান্টের যত্ন

ইট-পাথরের নাগরিক জীবনে আমরা এক টুকরো সবুজের ছোঁয়া পেতে চাই। এ কারণে অনেকেই ব্যালকনিতে কিংবা ঘরের ড্রয়িং রুমের কোণায় টবে বিভিন্ন গাছের চারা লাগান।
ছবি: সংগৃহীত

ইট-পাথরের নাগরিক জীবনে আমরা এক টুকরো সবুজের ছোঁয়া পেতে চাই। এ কারণে অনেকেই ব্যালকনিতে কিংবা ঘরের ড্রয়িং রুমের কোণায় টবে বিভিন্ন গাছের চারা লাগান।

বর্তমানে এটা অনেকের শখ কিংবা রুচিশীলতার পরিচয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু শুধু চারা লাগালেই হবে না, সেগুলোর জন্য প্রয়োজন যথাযথ যত্ন।

ছবি: সংগৃহীত

ইনডোর প্লান্ট সতেজ রাখার উপায়

অনেক পাতার আগার অংশ খয়েরি বা নিচের অংশ হলুদ হয়ে যায়। এমন হলে বুঝতে হবে, গাছে অতিরিক্ত পানি দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় প্রথমে টবের সম্পূর্ণ মাটি শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর গাছের সব জায়গায় পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। তবে, গাছের গোঁড়ায় ঘন ঘন পানি দেওয়া যাবে না।

অতিরিক্ত পানি দিলে যেমন গাছের ক্ষতি হয়, একইভাবে কম পানি দিলে গাছের সজীবতা নষ্ট হয়ে যায়। এমন হলে গাছের পাতার সামনের দিকটা হলুদ হয়ে যায় এবং পরে পাতা শুকিয়ে ঝরে যায়। তখন গাছের টবের অংশ একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পানিতে ডুবিয়ে রাখুন এবং কিছু সময় পরে সেটা তুলে ফেলুন। এই সময়ে কয়েকদিন গাছে ঘন ঘন পানি দিন।

গাছের ফুল বা পাতার রং হালকা হয়ে গেলে গাছটি ঠাণ্ডা বা আলো কম পৌঁছায় এমন জায়গায় রাখুন। কারণ অতিরিক্ত আলো ও তাপের সংস্পর্শে এসে গাছের পাতা ও ফুলের রং হালকা হয়ে যায়। তবে গাছের নতুন চারা ঠিক মতো না বাড়লে টব বারান্দায় রাখুন। আলো-বাতাস পেলে গাছ ঠিক মতো বড় হবে এবং ফাঙ্গাস জন্মাবে না।

ইনডোর প্লান্টে গাছের চারা অনেক সময় ঠিক মতো বাড়লেও কাণ্ড হলুদ হয়ে যায়। সাধারণ গাছের গোঁড়ায় অতিরিক্ত সার দেওয়ার কারণে এমনটা হয়ে থাকে। তাই এমন কিছু হলে বেশ সময় নিয়ে গাছের গোঁড়ায় বেশি করে পানি দিন। পানিতে সার ধুয়ে গেলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

পাতার আগার অংশ অনেক সময় কুঁকড়ে শুকিয়ে যায়। রুমের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে এই সমস্যা হয়। তাই এমন হলে সঙ্গে সঙ্গে গাছ সরিয়ে ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন।

সারারাত গাছের গোঁড়ায় পানি জমে থাকতে দেবেন না। তাহলে গাছের গোঁড়া পঁচে যেতে পারে। প্রতিদিন পানি না দিলেও চলবে। খেয়াল রাখতে হবে টবের পানি যেন একেবারে শুকিয়ে না যায়। গাছে পানি দেওয়ার আগে টবের মাটি হাত দিয়ে চেপে চেপে দেখুন। ভেজা ভাব থাকলে পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। গরমকালে বেশি পানি দেবেন, শীতকালে কম। ধীরে ধীরে পানি দিতে হবে। একবার পানি দেওয়ার পর মাটি শুকিয়ে গেলে তবেই পরের বার পানি দিতে হবে।

পোকামাকড়ের হাত থেকে গাছ রক্ষা করতে মাঝে মাঝে জীবাণুনাশক স্প্রে করতে হবে।

বেশি রোদে গাছে রেখে দেবেন না। গাছের পাতায় পানি ছিটিয়ে দেওয়ার পর রোদের তাপে পাতায় স্পট তৈরি হতে পারে। এমন হলে গাছটি কিছু সময় ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন, স্পট মিলিয়ে যাবে। গাছ ভালো থাকবে।

ছবি: সংগৃহীত

টুকিটাকি

১. গাছের পাতায় ধুলা বা ঝুল জমলে শুকনো নরম সুতি কাপড় বা হালকা স্পঞ্জ দিয়ে গাছের পাতা মুছতে পারেন। দুধ ও সমপরিমাণ পানির মিশ্রণ দিয়ে গাছের পাতা পরিষ্কার পারেন। তুলি দিয়েও পরিষ্কার করতে পারেন।

২. মাটি ভেজা থাকলে লিকুইড প্লান্ট ফুড দিন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্লান্ট ফুড দেবেন না। গাছের জন্য তা ক্ষতিকারক। নাইট্রোজেন, ফসফেট ও পটাশ আছে এমন লিকুইড প্লান্ট ফুডই ইনডোর প্লান্টের জন্য আদর্শ।

৩. একসঙ্গে অনেক গাছে পরিষ্কার করতে চাইলে শাওয়ারের নিচে গাছগুলো রাখুন। তবে, হালকা পানি ব্যবহার করবেন। গাছের গোঁড়ার অংশ ও তার চারদিক প্লাস্টিক বা পলিথিন দিয়ে র‌্যাপ করে দেবেন। এতে গাছের সব মাটি ধুয়ে নষ্ট হয়ে যাবে না।

৪. ঝরে পড়া ফুল বা শুকনো পাতা টবের ভেতর থেকে ফেলে দেবেন। তাহলে গাছ ভালো থাকবে। গাছে কুঁড়ি দেখা দিলে গাছ ঘরের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে রাখবেন না। এসময় টব বারবার এদিক-ওদিক সরালে গাছের কুঁড়ি ঝরে পড়তে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

The contradiction of comfort

How comfortable is it to not have clean air to breathe?

5h ago