বিতর্ক তৈরি করতে চাইনি: মিচেল

দুজনের গতিপথ একই হয়ে যাওয়ায় রশিদের পক্ষে বলটি ধরা সম্ভব হয়নি। সেখানে মিচেলের প্রকৃত অর্থে কোনো দায় নেই। কিন্তু তিনি অনুভব করেন যে বল থামাতে বাধা দিয়েছেন।
ছবি: টুইটার

বলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় রানের ব্যবধান তখন ছিল প্রায় দ্বিগুণ। সেসময় ইংল্যান্ডের স্পিনার আদিল রশিদের গতিপথে বাধা দিয়েছেন অনুভূত হওয়ায় সিঙ্গেল নেওয়ার সুযোগ ফিরিয়ে দেন ড্যারিল মিচেল। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে স্পোর্টসম্যানশিপের এমন বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ভক্ত-সমর্থক থেকে শুরু করে ক্রিকেটবোদ্ধাদের প্রশংসায় ভাসছেন নিউজিল্যান্ডের জয়ের নায়ক। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে দলকে ফাইনালে তোলার পর তিনি জানান, বিতর্ক এড়াতেই রান নেননি।

আলোচিত ঘটনাটি ঘটে বুধবার, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালের ১৮তম ওভারে। হাতে ৬ উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডের সেসময় জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৮ বলে ৩৪ রান। ওভারের প্রথম ডেলিভারিটি লং-অনের দিকে ঠেলে দেন স্ট্রাইকে থাকা জিমি নিশাম। রশিদ বল আটকাতে চেয়েছিলেন, নন-স্ট্রাইকে থাকা মিচেল দৌড় দিয়েছিলেন রানের জন্য। দুজনের গতিপথ একই হয়ে যাওয়ায় রশিদের পক্ষে বলটি ধরা সম্ভব হয়নি। সেখানে মিচেলের প্রকৃত অর্থে কোনো দায় নেই। কিন্তু তিনি অনুভব করেন যে বল থামাতে বাধা দিয়েছেন। তাই সিঙ্গেল নেওয়ার সুযোগ থাকলেও সতীর্থকে ফিরিয়ে দেন। অথচ নিশাম ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছিলেন ক্রিজের মাঝপথে।

মিচেলের এই রান না নেওয়া অবশ্য নিউজিল্যান্ডের জয়ের পথে কাঁটা হতে পারেনি। আবুধাবিতে ৬ বল বাকি থাকতে ১৬৭ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে ৫ উইকেটে জিতেছে কেন উইলিয়ামসনের দল। প্রথমবারের মতো তারা উঠে গেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে।

চলমান বিশ্বকাপের আগে কখনোই ওপেন না করা মিচেলই কিউইদের ইংল্যান্ড বধের রাতে ম্যাচসেরা। সমান ৪টি করে চার ও ছয়ে ৪৭ বলে ৭২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৪১ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করার পর নিজের শেষ ২০ রান তিনি আনেন মাত্র ৬ বলে। কিউইদের উইনিং শটটিও আসে মিচেলের ব্যাট থেকে। ইংলিশ পেসার ক্রিস ওকসের ফুলটস ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মারেন তিনি।

রুদ্ধশ্বাস জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ার পর সিঙ্গেল না নেওয়ার ব্যাখ্যায় ৩০ বছর বয়সী মিচেল বলেন, 'আমার মনে হয়েছে, আমি সম্ভবত কিছুটা হলেও রশিদের গতিপথে বাধা হয়ে গিয়েছিলাম। আমি এমন কেউ হতে চাইনি যে কিনা অল্পস্বল্প হলেও বিতর্ক তৈরি করতে পারে। তাই আমি (সিঙ্গেল নেওয়া সুযোগ ফিরিয়ে দিয়েও) খুশি ছিলাম।'

নিউজিল্যান্ড যদি ম্যাচটা হেরে যেত, তাহলে মিচেলের সিদ্ধান্ত নিয়ে জমতে পারত আলোচনা-সমালোচনা। তেমনটা না ঘটায় খুশি তিনি, 'আমরা সবাই উদার মনোভাবে সঙ্গে এই খেলাটা খেলি এবং আমি অনুভব করেছি যে এটা সম্ভবত আমারই দোষ ছিল। তাই রান নেওয়ার চেষ্টা করিনি। (সেটা পেছনে ফেলে) নতুন করে শুরু করা এবং চালিয়ে যাওয়াটা আরও দারুণ ছিল। আমি খুশি যে এটা (রান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত) কোনো পার্থক্য তৈরি করেনি (ম্যাচের ফলে)।'

Comments

The Daily Star  | English

The contradiction of comfort

How comfortable is it to not have clean air to breathe?

6h ago