'ভাগ্যের উপর ছেড়ে দেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই'

মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে আজ ১ অক্টোবর থেকে থেকে শুরু হচ্ছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ত্রয়োদশ আসর। সাম্প্রতিক সময়ে এ আসরে বাংলাদেশের সাফল্য বলতে গেলে শূন্য। তাই মাঠে নামার আগে বাংলাদেশের প্রত্যাশা এবারও যেন অধরা ফাইনাল খেলার ইচ্ছাটা আবার হতাশায় পরিণত না হয়।

মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে আজ ১ অক্টোবর থেকে থেকে শুরু হচ্ছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ত্রয়োদশ আসর। সাম্প্রতিক সময়ে এ আসরে বাংলাদেশের সাফল্য বলতে গেলে শূন্য। তাই মাঠে নামার আগে বাংলাদেশের প্রত্যাশা এবারও যেন অধরা ফাইনাল খেলার ইচ্ছাটা আবার হতাশায় পরিণত না হয়।

অথচ ২০০০-এর দশকের শেষভাগ পর্যন্ত এ আঞ্চলিক উৎসবে বাংলাদেশকে ফেভারিট হিসেবে বিবেচনা করা হতো। সেই ট্যাগটি এখন বাংলাদেশের প্রায় ভুলে যাওয়ার দশা। টানা চারবার গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া দলটি এবারও ভুগছে একই শঙ্কায়। তবে গৌরবময় অতীতের স্মৃতি, বিশেষ করে ২০০৩ সালে প্রথম বিজয়, কেবল দীর্ঘশ্বাসই বাড়ায়।

'আমরা সবসময়ই ফেভারিট ট্যাগ নিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সবকিছু ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিতে হয়।' - ডেইলিস্টারের সঙ্গে একান্ত আলাপে ঘরের মাটিতে ২০০৩ সালে বাংলাদেশের হয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের অন্যতম নায়ক স্ট্রাইকার আলফাজ আহমেদ আক্ষেপ করে বললেন এমনটাই।

১৯৯৯, ২০০৩ এবং ২০০৫ সালে পরপর তিনটি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। সেখানে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন আলফাজ।

তৎকালীন কোচ জর্জ কোটান খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেরাটাই বের করে আনতে পেরেছিলেন বলেই জানালেন এ সাবেক স্ট্রাইকার, '২০০৩ সালে জর্জ কোটান দুই বছরে আমাদের স্কোয়াডটি তৈরি করেছিলেন এবং সকল খেলোয়াড়ের মান একই রকম ছিল। তিনি আনুগত্যকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন এবং আমাদের সেরাটা বের করে এনেছিলেন। এমনকি খেলোয়াড়রা তখন সেমি-ফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচে ড্রেসিং রুম থেকে মাঠে যাওয়ার সময় কেঁদে দিয়েছিল।'

রোকনুজ্জামান কাঞ্চন এবং আরিফুল কবির ফরহাদের সঙ্গে আক্রমণভাগের নেতা ছিলেন আলফাজ। আরমান মিয়া, মতিউর রহমান মুন্না এবং আরিফ খান জয়কে নিয়ে গড়া মিডফিল্ড ছিল অসাধারণ। আর রজনী কান্ত বর্মণ, মোহাম্মদ সুজন, নজরুল ইসলাম, হাসান আল মামুন এবং ফিরোজ মাহমুদ টিটুদের নিয়ে গড়া রক-সলিড ডিফেন্স পাঁচ ম্যাচে মাত্র দুটি গোল হজম করেছিল।

'গোলরক্ষক (আমিনুল হক) থেকে ফরোয়ার্ড লাইন-আপ পর্যন্ত প্রতিটি বিভাগে আমাদের সম্পূর্ণ পরিপক্ব স্কোয়াড ছিল। সবকিছু ভারসাম্যপূর্ণ ছিল এবং কোটান তখন আরমান মিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং মতিউর মুন্নার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য ফেডারেশনকে প্রভাবিত করে।' - বলেন এ ৫০ বছর বয়সী সাবেক ফুটবলার।

২০০৩ সালের সেই টুর্নামেন্টের আগে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব এবং এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে অংশগ্রহণের পাশাপাশি ভুটানে একটি আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টের অংশগ্রহণের ব্যাপারটিও নিশ্চিত করেন কোটান। 

'আমরা ভুটানে একটি আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টেও ভালো ফলাফল করি, যা ঘরের মাঠে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের আগে আমাদের আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তুলেছিল, - বলেন আলফাজ, যিনি নেপালের বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেছিলেন, তাতে ২০০৩ সালের সে আসরে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিল জয়ের সূচনা।

সেই বিজয়ী দলের সঙ্গে বর্তমান স্কোয়াডের সাথে তুলনা করতে চাইলে আলফাজ বলেন, 'আমাদের প্রত্যেক পজিশনেই ভালো বিকল্প ছিল। বর্তমান স্কোয়াডে কি কোন ম্যাচ উইনার আছে? যদি না হয়, তাহলে আমরা কিভাবে বিশ্বাস করতে পারি যে তারা ফাইনাল খেলবে? এখন ভাগ্যের উপর ছেড়ে দেওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।'

স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজনকে জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং প্রস্তুতির জন্য মাত্র দুই সপ্তাহ সময় পেয়েছেন তিনি। তবে সাবেক প্রধান কোচ জেমি ডে'কে এভাবে বিদায় দেওয়ার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নিন্দা জানান বাংলাদেশকে ভাগ্যের উপর ছেড়ে দেওয়া আলফাজ।

'সত্যি কথা বলতে কি, জেমি ডে তিন বছর কাজ করেও একটি শক্ত দল তৈরি করতে পারেনি। অবশ্যই, আমি মানি যে এখানে মানসম্পন্ন খেলোয়াড়দের অভাব রয়েছে। নেপালে তিন জাতি কাপে ব্যর্থ হওয়ার পরই জেমিকে সরিয়ে দেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু ফেডারেশন তা করেনি। যেহেতু নেপালে তিন জাতি কাপের পর তারা তাকে ছাঁটাই করেনি, তাই আমি মনে করি ফেডারেশন তাকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শেষ সুযোগ দিতে পারত।'

Comments

The Daily Star  | English

Today AL is the strongest party: PM Hasina on homecoming day

Prime Minister Sheikh Hasina today said her party – Bangladesh Awami League (AL) is the strongest, largest and the most credible political party in the country now

16m ago