৩০ ঘণ্টা পর নিভল সুন্দরবনের আগুন

প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে চেষ্টার পর সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় লাগা আগুন নিভেছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় গতকাল সোমবার আগুন লাগে। ছবি: সংগৃহীত

প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে চেষ্টার পর সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় লাগা আগুন নিভেছে।

আজ মঙ্গলবার আনুমানিক বিকেল ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ, কমিউনিটি প্যাট্রোলিং গ্রুপের (সিপিজি) সদস্য এবং স্থানীয়রা মিলে আগুন নেভাতে সক্ষম হন।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর গোলাম সারোয়ার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সব রকম ভাবেই আমরা দাসের ভারানি এলাকায় লাগা দৃশ্যমান আগুন নিভিয়েছি। এখন আর কোথাও আগুন নেই। তবে, বেশ কিছু স্থানে শুকনো পাতার ঘন স্তুপ পড়ে আছে। যেহেতু আর কোথাও কোনো আগুন দেখা যাচ্ছে না, তাই আমাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছি। এরপরও যদি কোথাও আগুন দেখা যায়, বন বিভাগ আমাদের জানালে কাল গিয়ে সেটা নিভিয়ে আসব।’

গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে সুন্দরবনের দাসের ভারানি এলাকায় আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে বন বিভাগ এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলতে পারেনি, গত ৩০ ঘণ্টার আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

তবে স্থানীয়রা বলছেন, গত ৩০ ঘণ্টার আগুনে দাসের ভারানিতে অন্তত পাঁচ একরের মতো বন পুড়ে গেছে।

এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চলীয় বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর এলাকায় লাগা আগুনে অন্তত তিন শতাংশ বনভূমি পুড়ে যায়। এ নিয়ে, গত ২০ বছরে সুন্দরবনে ২৫ বার আগুন লাগল।

সুন্দরবনে বারবার আগুন লাগার কারণে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা ফজলু শেখসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ‘সোমবার আগুনের ধোঁয়া দেখতে পেয়ে আমরা বন বিভাগকে খবর দেই। লোকালয় থেকে গভীর জঙ্গলে আগুন লাগার কারণে খবর পেতে অনেক বেশি সময় লেগে যায়। এরপর আমরা বনরক্ষী ও ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নেভাতে একসঙ্গে কাজ করি। ক্লান্তিহীনভাবে দুদিন চেষ্টার পর অবশেষে আজ আমরা আগুন নেভাতে পেরেছি। তবে, তার আগেই পাঁচ একরের মতো বন পুড়ে গেছে।’ 

সিপিজি সদস্য ফিরোজ বলেন, ‘আগুনের খবর পেয়ে আমরা বন বিভাগের সঙ্গে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। এ সময় আমরা আগুন ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে গাছের ডালপালা কেটে, ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের যন্ত্রপাতি বহন করে এবং আগুনের চারপাশে পানির নালা কেটে তাদের সাহায্য করি।’

বনের পাশ্ববর্তী রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা আফজাল বলেন, ‘সুন্দরবন আমাদের কাছে মায়ের মতো। এই বনের ওপর নির্ভর করেই আমরা বেঁচে আছি। কিন্তু, একের পর এক আগুন লাগার কারণে আমাদের খুব খারাপ লাগছে। আগুন লেগে শুধু গাছপালা পুড়ছে না, সঙ্গে বিভিন্ন পশুপাখির জীবনও হুমকির মুখে পড়ছে।’

সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় ফরেস্ট অফিসার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আমরা আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছি। এর পরও যদি কোথাও সুপ্ত অবস্থায় আগুন থেকে থাকে সেটাও নেভানো হবে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আবারও ফায়ার সার্ভিসের সাহায্য নেওয়া হবে। যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখানে বনরক্ষীদের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কীভাবে আগুনের সূত্রপাত ও কী পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা জানার জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে যদি দেখা যায়, কেউ আগুন লাগিয়েছিল, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Avoid heat stroke amid heatwave: DGHS issues eight directives

The Directorate General of Health Services (DGHS) released an eight-point recommendation today to reduce the risk of heat stroke in the midst of the current mild to severe heatwave sweeping the country

1h ago