আনিসুজ্জামান : সংস্কৃতি অঙ্গনের মহীরুহ

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ছিলেন সকল কাজের কাজী। বিশেষ করে একাডেমিক কাজের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে  প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত থাকতেন। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও বাঙালি সংস্কৃতির ঝাণ্ডা উচ্চে তুলে ধরেছেন। এ কাজে তিনি হঠাৎ করে যুক্ত হননি। সেই শৈশবেই সাংস্কৃতিক নানা কর্মকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা ঘটে। এ ক্ষেত্রে নিজের আগ্রহের পাশাপাশি সাহিত্য-সংস্কৃতি-জগতের খ্যাতিমান ব্যক্তিদের সান্নিধ্যলাভ বিশেষভাবে সহায়ক হয়েছে। 
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ছিলেন বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী । বিশেষ করে একাডেমিক কাজের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে  প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত থাকতেন। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও বাঙালি সংস্কৃতির ঝাণ্ডা উচ্চতায় তুলে ধরেছেন। এ কাজে তিনি হঠাৎ করে যুক্ত হননি। সেই শৈশবেই সাংস্কৃতিক নানা কর্মকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা ঘটে। এ ক্ষেত্রে নিজের আগ্রহের পাশাপাশি সাহিত্য-সংস্কৃতি-জগতের খ্যাতিমান ব্যক্তিদের সান্নিধ্যলাভ বিশেষভাবে সহায়ক হয়েছে। 

চিকিৎসক পিতার সুবাদে কলকাতার পার্ক সার্কাসে থাকতেই পরিচিত হন ফজলুল হক সেলবর্ষী, আবুল কালাম শামসুদ্দীন, মুজিবুর রহমান খান, আবুল মনসুর আহমদ, আবু জাফর শামসুদ্দীন, মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ, মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন, আয়নুল হক খাঁ, মোহাম্মদ আকরম খাঁ, ফজলে লোহানী, রোকনুজ্জামান খান (দাদাভাই), শিল্পী আব্বাস উদ্দীন, চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদিন, ইব্রাহীম খাঁ, গোলাম মোস্তফা, জসীম উদ্দীন, কাজী আবদুল ওদুদ, আবদুল কাদির প্রমুখের সঙ্গে। 

তার পারিবারিক পরিবৃত্তও ছিল সাহিত্য-সংস্কৃতির পক্ষে অনুকূল। ১৯৪৬ সালে পিতার হাত ধরে গিয়েছিলেন কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজিত সাহিত্য-সম্মেলনে। কলকাতা থাকতেই দেখে ফেলেছিলেন বিখ্যাত অভিনয়শিল্পীদের অভিনীত নাটক-সিনেমা : 

নাটকের মধ্যে আলীবাবা, ধাত্রী-পান্না, দুই পুরুষ, চন্দ্রগুপ্ত ও সিরাজউদ্দৌলা দেখার কথা মনে পড়ে। ধাত্রীপান্না ও দুই পুরুষে ছবি বিশ্বাস ছিলেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে। ... ছবি বিশ্বাস ছাড়া মঞ্চে যাঁদের অভিনয় দেখেছি, তাঁদের মধ্যে অহীন্দ্র চৌধুরী, জহর গাঙ্গুলী, চন্দ্রাবতী, প্রভা দেবী ও সুনন্দা দেবীর নাম মনে পড়ে।

স্কুলজীবনে কলকাতা, খুলনা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার হিসেবে ঢাকায় এসে প্রবেশ করলেন বৃহত্তর সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। ১৯৪৮ সালের শেষে ঢাকার কার্জন হলে অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনে অংশ নিয়োছিলেন। এরপর দেখতে যান ১৯৪৯ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম শিল্প-প্রদর্শনী। এভাবে ক্রমে ঢাকার শিল্প-সংস্কৃতির জগতের সঙ্গে একাত্ম হন। পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনের মাধ্যমে ঢাকার সাংস্কৃতিক জগতের সঙ্গে অনিসুজ্জামানের পরিচয় ঘটলেও তার বিস্তার ঘটে লেখক-শিল্পী মজলিস (১৯৪৯)-এর অনুষ্ঠানসমূহে গিয়ে। এ সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্কের যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছিল তার বন্ধু আহমদ হোসেনের মাধ্যমে। 

লেখক-শিল্পী মজলিসের রবীন্দ্র-জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে মুনীর চৌধুরীর কণ্ঠে 'সাধারণ মেয়ে' কবিতার আবৃত্তি শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এছাড়া সোহরাব হোসেন, বেদারউদ্দীন আহমদ, অঞ্জলি রায়, লায়লা আর্জুমান্দ বানু, শেখ লুৎফর রহমান, আব্বাস উদ্দিন প্রমুখের গান শুনেছেন লেখক-শিল্পী মজলিসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। আবৃত্তি শুনেছেন মোহাম্মদ আবদুল কাইউম ও রফিকুল ইসলামের কণ্ঠে আর বাহাদুর হোসেন খাঁ, ফুলঝুরি খাঁ, ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খান, ইউসুফ খান কোরায়শী, মোহাম্মদ হোসেন খসরু, মুনশী রইসউদ্দীন ও ফুল মোহাম্মদ খানের যন্ত্রসংগীত ও উচ্চাঙ্গ সংগীতে মুগ্ধ হয়েছেন। এসবের প্রভাবে তাঁর চেতনায় জাগ্রত হয় বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও বাঙালি-সংস্কৃতির প্রতি গভীর মমত্ববোধ। ফলে, সাতচল্লিশের দেশভাগের পর পূর্ববঙ্গের সচেতন ও প্রগতিশীলমহল ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে যে-সব সংগঠন গড়ে তোলেন সেগুলোর সঙ্গে আনিসুজ্জামান স্বতঃস্ফূর্তভাবে যুক্ত হন।

 সওগাত অফিস আর বেগম পত্রিকা ঘিরেই গড়ে উঠেছিল পাকিস্তান সাহিত্য সংসদ। এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ফলে বহু প্রগতিশীল কবি-সাহিত্যিকের সঙ্গে আনিসুজ্জামানের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এখানে নিয়মিত আসরের পাশাপাশি পাকিস্তান সাহিত্য সংসদ মাঝে মাঝে বিশেষ সভার আয়োজন করতো। একবার ম্যাক্সিম গোর্কি সম্পর্কে একটি বিশেষ অধিবেশন আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে প্রবন্ধ পাঠ করেছিলেন আনিসুজ্জামান। বুলবুল ললিতকলা একাডেমির তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। ১৯৫২ সালের কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক সম্মেলনে এবং ১৯৫৭ সালে কাগমারীতে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫৬ সালে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত এশীয় লেখক সম্মেলনে যোগ দেন পাকিস্তান সাহিত্য সংসদের প্রতিনিধি হিসেবে। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র-জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপনে পালন করেন প্রত্যক্ষ ভূমিকা। 

রবীন্দ্র-জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠান আসলে রবীন্দ্রনাথের প্রতি শ্রদ্ধানিবেদন অতিক্রম করে গিয়েছিল। রবীন্দ্রনাথকে আমাদের চাই, কেন না তিনি না থাকলে আমাদের আর কি থাকে! কিন্তু তার চেয়ে বড়ো কথা, আমাদের বাঙালি সত্তাকে ধরে রাখতে হবে, পাকিস্তান সরকারকে তা গ্রাস করতে দেওয়া যাবে না। 'বাধা দিলে বাধবে লড়াই'- এই মনোভাবই কাজ করেছিল সেদিন। তখন মনে হয়েছিল, এখনো মনে হয়, সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধ আমরা সেদিন জয়ী হয়েছিলাম- ভাষা-আন্দোলনের মতো আরেকটি আন্দোলনে।

১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের উদ্যোগে ভাষা ও সাহিত্য সপ্তাহ আয়োজনে তাঁর বিশেষ অবদান ছিল। বুলবুল ললিতকলা একাডেমির নানা কাজের সঙ্গেও তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল। ১৯৬৩ সালের শেষদিকে করাচিতে অনুষ্ঠিত 'কালচারালস অব টু ওয়র্লডস' নামে তিন দিনব্যাপী যে আলোচনা-সভা অনুষ্ঠিত হয় তাতে তিনি অংশগ্রহণ করেন।  ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সরকার প্রচারমাধ্যমে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার নিষিদ্ধ করলে আনিসুজ্জামানসহ পূর্ববঙ্গের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীরা তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন।  তাঁর যে বিবৃতিটি দিয়েছিলেন তাঁর অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন আনিসুজ্জামান। ১৯৬৮ সালে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় রবীন্দ্রনাথ শিরোনামের সংকলনগ্রন্থ। এক বৈরী পরিবেশে দাঁড়িয়ে এমন একটি সংকলন প্রকাশ একদিকে তাঁর দুঃসাহসের পরিচয় যেমন পাওয়া যায়, অন্যদিকে তেমনি বাংলা সাহিত্যের প্রতিও লক্ষ করা যায় প্রগাঢ় অনুরাগ। এ বছর বাংলা একাডেমি কর্তৃক রবীন্দ্র-জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি প্রবন্ধ পাঠ করেন। ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের রিডার হিসেবে যোগদানের পর চট্টগ্রাম শহরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে প্রাণবন্ত করে তোলেন। 

ষাটের দশকে শেষভাগে স্বাধিকার-সংগ্রামের উত্তাল দিনগুলোতে তিনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। ঐ সময় চট্টগ্রামে বসবাসকালে আবুল ফজল, এ আর মল্লিকসহ অন্যান্য বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে উপস্থিত থেকেছেন। ১৯৭০ সালের ১ ও ২ জানুয়ারি বাংলা একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত সংস্কৃতি সংসদের নবীন আবাহন উপলক্ষে দুইদিনব্যাপী যে সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজন করা হয় তাতে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। ঐ সাংস্কৃতিক উৎসবে তিনি যে ভাষণ প্রদান করেন তা তরুণদের উজ্জীবিত করে। আবুল হাসনাত স্মৃতিচারণা করে লিখেছেন : 

তাঁর বক্তব্যে পূর্ব বাংলার বাঙালির স্বরূপ-চেতনা ও স্বাজাত্যবোধের উল্লেখ ছিল। সংস্কৃতির সংকট উত্তরণ ও বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে রবীন্দ্রনাথ যে অচ্ছেদ্য বন্ধনে জড়িয়ে আছেন- তিনি সে-কথাও বলেছিলেন, মনে পড়ে। এই সাংস্কৃতিক উৎসব বৃহত্তর ছাত্রসমাজের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে অস্থানকালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন এবং সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক কর্মতৎপতা অব্যাহত রেখেছেন। বাঙালি-সংস্কৃতি তথা বাঙালিত্বের ওপর যখনই আঘাত এসেছে তখনই তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। বায়ান্নোর ভাষা-আন্দোলন, ষাটের দশকের স্বাধিকার-সংগ্রাম এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে তিনি এর প্রমাণ রেখেছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সংবিধান বাংলায় রূপান্তর, পরিভাষা সৃষ্টি এবং সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ এবং জাতির ক্রান্তিলগ্নে দায়িত্ব পালনে তাঁর ভূমিকা ছিল দুঃসাহসী। 

স্বাধীন বাংলাদেশে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আনিসুজ্জামান আরও সক্রিয় থেকেছেন। ষাটের দশকে পাকিস্তান সরকারের রবীন্দ্র-সংগীত ও বাঙালি-সংস্কৃতি বিনাশী অপতরতা রুখে দিতে তিনি যে সাংস্কৃতিক তৎপরতায় যুক্ত হয়েছিলেন, জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তা ধরে রেখেছিলেন। ২০১১ সালের রবীন্দ্রনাথের সার্ধশত জন্মোৎসব পালনে তাঁকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, 'বাংলাদেশ-ভারতসহ বিশ্বজুড়ে এই জন্মোৎসব পালনের মহাযজ্ঞে তিনিই হয়ে ওঠেন মুখ্য বা সর্বাধিক আরাধ্য ব্যক্তিত্ব। ঢাকা, দিল্লি, বার্লিন, শিকাগো, মেলবোর্ন প্রভৃতি স্থানের প্রধান অনুষ্ঠানগুলোতে তাঁকে হয় মূল ভাষণ প্রদান, কিংবা সভাপতির আসন অলংকৃতকরণ বা মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন বা প্রচারমাধ্যমে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার প্রভৃতির মাধ্যমে মহাব্যস্তসময় অতিবাহিত করতে হয়েছে।' বাংলা একাডেমির সভাপতি হিসেবে বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও গৌরবের সমৃদ্ধিসাধনে কাজ করেছেন। 

সাংস্কৃতিক ও সামজিক দায়বদ্ধতা থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সভা-সমিতিতে তিনি অবাধে অংশগ্রহণ করেছেন। গণ-আদালত থেকে রাজপথ, গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ত্বকী মঞ্চ, শোকসভা থেকে সংবর্ধনাসভা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাগরিক-সমাবেশ থেকে শাহবাগের পথসভা, চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পুস্তকপ্রকাশনা-উৎসব; সর্বত্রই তাঁর উপস্থিতি। শুধু তাই নয়, দেশের বাইরেও বিস্তৃত হয়েছিলো তাঁর এই কর্মযজ্ঞ। বস্তুতপক্ষে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে তাঁর মতো সচল এবং কাঁটাতার-অতিক্রমী আর কেউ ছিলেন না। 

এসব কাজ করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের নিন্দার তীর কিংবা মামলার শিকারের পাশাপাশি হত্যার হুমকি পর্যন্ত পেয়েছেন কিন্তু কিছুতেই বিচলিত হননি; বরং কল্যাণধর্মী চিন্তা, বিশ্বাস এবং আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে এগিয়ে গেছেন। ফলে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আনিসুজ্জামানের যে অবদান, তা সমাজকে আলো দেখাবে এবং এগিয়ে চলার প্রেরণা জোগাবে। 

Comments

The Daily Star  | English

Cuet students suspend protests

Say authorities assured them of meeting their major demands

1h ago