মুক্তিযুদ্ধ

খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা: চিত্তরঞ্জন দত্ত, বীর উত্তম

মুক্তিযুদ্ধে চিত্তরঞ্জন দত্ত ছিলেন ৪ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার। যুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়। তার খেতাবের সনদ নম্বর ৪।
চিত্তরঞ্জন দত্ত,বীর উত্তম। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধে চিত্তরঞ্জন দত্ত ছিলেন ৪ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার। যুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়। তার খেতাবের সনদ নম্বর ৪।

২৫ মার্চ দেশব্যাপী নৃশংস গণহত্যার সময় হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামের পৈত্রিক বাড়িতে ছুটিতে ছিলেন মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত। ২৬ মার্চ তিনি আগের রাতের গণহত্যার কথা শুনতে পেলেন। গ্রামের ছাত্ররা গিয়ে তাকে বলল, 'দাদা, আমরা আপনার নির্দেশের অপেক্ষায়। আমরা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চাই।' তখন চিত্তরঞ্জন দত্ত বললেন, `আমি আগে লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ  রবের সঙ্গে কথা বলি।'

২৭ মার্চ দুপুর ২টার দিকে এম এ রব চিত্তরঞ্জন দত্তকে তার বাড়িতে ডেকে পাঠালেন। গিয়ে চিত্তরঞ্জন দত্ত দেখলেন বাড়িতে আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে ১৫০ জন অস্ত্র হাতে লড়াই করতে তৈরি। আরও অনেকে উপস্থিত সেখানে। মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত ঘরে ঢুকতেই লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ রব বললেন, 'এখানে যারা আছে সবাইকে নিয়েই বিকেল ৫টার দিকে সিলেট মুক্ত করার জন্য যাত্রা শুরু করব।' এ সময় মেজর চিত্তরঞ্জন দত্তকে সিলেট মুক্ত করার ভার অর্পণ করলেন এম এ রব।

সেদিন বিকেল ৫টার দিকে চিত্তরঞ্জন দত্তের বাড়ির সামনে একটি জিপ, ৫টি বাস ও ট্রাক এসে থামল। বাস-ট্রাকে সবার গলায় জয় বাংলা স্লোগান। চিত্তরঞ্জন দত্ত তার স্ত্রীকে বললেন, 'স্বাধীনতার ডাক এসেছে, দেশকে স্বাধীন করার জন্য আমি চললাম।' তারা চললেন শায়েস্তাগঞ্জের দিকে। প্রথমে তাদের গন্তব্য ছিল রশিদপুর চা বাগান। কারণ, তারা জেনেছিলেন শ্রীমঙ্গলের অপর পাশে পাকিস্তানি বাহিনীর সেনারা পৌঁছে গেছে। তারা পথ চলতে চলতে রাস্তায় অসংখ্য ব্যারিকেড দেখলেন। কোথাও গাছের গুঁড়ি ফেলে, কোথাও কাঁটাতার ফেলে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে।

রশিদপুর চা বাগানে পৌঁছে তারা এক রাত সেখানে থাকেন। তারা জানতেন,  শমসেরনগরে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি কোম্পানি মেজর খালেদ মোশাররফের অধীনে আছে। কিন্তু হবিগঞ্জ থেকে পাইকপাড়া পৌঁছানোর পর তারা জানলেন, মেজর খালেদ মোশাররফ শমসেরনগর ছেড়ে কুমিল্লার দিকে রওনা দিয়েছেন। এ খবর শুনে মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ রবকে বললেন, 'মেজর খালেদ মোশাররফ কেন কুমিল্লার দিকে গেছেন কিছুই বুঝতে পারছি না। আমাদের ওদের নিয়েই সম্মিলিত চেষ্টায় কুমিল্লা মুক্ত করতে হবে।'

তারা দ্রুত রওনা দিয়ে মীরপুরের পুলে আসার পরে জানতে পারলেন গত রাতেই মেজর খালেদ মোশাররফ সেনা নিয়ে চলে গেছেন।  খানিকটা আশাহত হলেন মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত। কারণ খালেদ মোশাররফের সঙ্গে এক কোম্পানি সেনা ছিলেন। আর চিত্তরঞ্জন দত্তের সঙ্গে ১৫০ জন। তাদের বেশিরভাগ আবার জীবনেও অস্ত্র স্পর্শ করেননি। অস্ত্র বলতে কেবল ৩০৩ রাইফেল এবং ১০ রাউন্ড করে গুলি ছিল। কিন্তু লড়াই তো করতে হবে। সবাই মেজর দত্তকে বললেন, 'আমরা সবাই তৈরি, স্যার।' আশেপাশের গ্রাম থেকেও অসংখ্য যুবক-কিশোর ছুটে এসে বলল, 'আমরাও যুদ্ধে যেতে চাই।'

তখন চিত্তরঞ্জন দত্ত দারুণ এক পরিকল্পনা করলেন। তিনি বললেন, 'তোমরা জয় বাংলা স্লোগান দিতে পারবে তো?  চিৎকার করতে করতে জয় বাংলা বলবে। চিৎকার শুনে যেন পাকিস্তানিরা মনে করে আমরা সংখ্যায় অনেক।' এ সময় চিত্তরঞ্জন দত্ত কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরীকে যেভাবেই হোক অস্ত্রের ব্যবস্থা করতে বলেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রসদের ব্যবস্থা করতে বলেন।

২৮ ও ২৯ তারিখে মেজর চিত্তরঞ্জন দাশ সেনাদের সংগঠিত করলেন। ২ প্লাটুন সেনা সাতগাঁ পাহাড়ে পাঠিয়ে দিলেন। কারণ শ্রীমঙ্গল থেকে চুনারুঘাট বা হবিগঞ্জে যেতে হলে পাকিস্তানিদের সাতগাঁ পাহাড়ের মধ্য দিয়েই যেতে হবে।

রশিদপুরে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প বানানো হলো। এ সময় তারা খবর পেলেন, পাকিস্তানি বাহিনী চুনারুঘাট যাওয়ার জন্য আমরুল চা বাগানের দিকে আসছে। মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত সেনাদের আমরুল চা বাগানের দিকে পাঠালেন। তারা গিয়ে খবর পাঠালেন, পাকিস্তানিরা আবার শ্রীমঙ্গলের দিকে চলে গেছে। তখন চিত্তরঞ্জন দত্ত ঠিক করলেন, তাদের প্রথম লক্ষ্য সিলেটে যাত্রা করা। ৩০ ও ৩১ মার্চ রাতে শ্রীমঙ্গলের প্রায় ২ মাইল দূরে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুললেন চিত্তরঞ্জন দত্ত।  ৩১ মার্চ সকালে শ্রীমঙ্গল আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিলেন তারা। পরে পাকিস্তানিরা শ্রীমঙ্গল ছেড়ে মৌলভীবাজারের দিকে চলে গেছে জানতে পেরে মেজর দত্ত সেনাদের নিয়ে মৌলভীবাজারের দিকে রওনা দিলেন। মৌলভীবাজার যাওয়ার পর তারা শুনলেন নয়নপুর বাজারে পাকিস্তানি বাহিনী আছে। তখন মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত তার পিছনের ২ প্লাটুনকে বললেন নয়নপুরের দিকে এগোতে। কিছুক্ষণের মধ্যে নয়নপুর দখল হয়ে গেল। মুক্তিবাহিনী রশিদপুর থেকে উঠিয়ে মৌলভীবাজারে ক্যাম্প করল। শত্রুদের অবস্থান বিবেচনা করে পরিকল্পনা করা হলো। ধীরে ধীরে মুক্তিবাহিনীর সদস্য বাড়ল। মানিক চৌধুরী অস্ত্রের ব্যবস্থা করলেন। লেফটেন্যান্ট কর্নেল রবের উদ্যোগে ইপিআরের সদস্যরা যোগ দিলে সেনার সংখ্যা ৪৫০ জনের মতো হলো।

৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ম্যানেজার বাংলোয় অনুষ্ঠিত স্বাধীন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক প্রথম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত।  ৫ ও ৬ এপ্রিল মেজর চিত্তরঞ্জন দত্তের বাহিনীর সঙ্গে সিলেটের নানা জায়গায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয় পাকিস্তানি বাহিনীর। এক পর্যায়ে পাকিস্তানি বাহিনী ট্রাকে করে সিলেট শহরের দিকে পালিয়ে যায়। ৭ এপ্রিল সম্পূর্ণ সিলেট জেলা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে যায়।

৮ এপ্রিল অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত। এদিন আসামের শিলচর  থেকে ওয়্যারলেস যন্ত্রপাতি আনার সময়ে পিচ্ছিল রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তার গাড়ি উল্টে যায়। আহত হয়ে খোঁড়া পা নিয়েই যুদ্ধ করেন চিত্তরঞ্জন দত্ত। গোপালগঞ্জ, শেওলা, সুত্রাকান্দিসহ অসংখ্য যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন তিনি।

১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তে মেজর চিত্তরঞ্জন দত্তকে ৪ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের মে মাসে চিত্তরঞ্জন দত্তের নেতৃত্বে খোলা হয় ২টি সাব সেক্টর। এই সেক্টরগুলোতে সেনা পাঠানোর জন্য গড়ে উঠল গণবাহিনী। ৪ নম্বর সেক্টরের অধীনে ছিল মোট ৬টি সাব সেক্টর। এগুলো হলো জামালপুর, বারাপুঞ্জি, আমলসিদ, কুকিতল, কৈলাশহর ও কমলাপুর সাব সেক্টর। লোহারবন্দে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। মেজর চিত্তরঞ্জন দত্তের নেতৃত্বে ৪ নম্বর সেক্টরের সঙ্গে যোগ করা হয় সেক্টর ট্রুপসকে। মে-জুন মাসে ৪ নম্বর সেক্টর ট্রুপস এবং গণবাহিনী মেজর সি আর দত্তের নির্দেশে শেওলা সাদা খাল, বারইগ্রাম, এবং কাংলি নদীতে পাকিস্তানি বাহিনীর উপর দুর্ধর্ষ আক্রমণ চালায়। প্রথমদিকে সিআর দত্ত তার সেক্টরকে গেরিলা পদ্ধতিতে আক্রমণের জন্য সাজিয়েছিলেন। পাকিস্তানি বাহিনীর লাটু, বড়লেখ, ফুলতলা, আটগ্রাম অবস্থানের ওপর আক্রমণ করে মুক্তিবাহিনী। চা বাগানগুলো থেকেও পাকিস্তাান বাহিনীকে হটিয়ে দেয়। মেজর সি আর দত্তের পরিচালনা ও নেতৃত্বে একে একে রাজকী, ফুলতলা, শেওলা, পৃথিমপাশা, সমনভোগ, সোনারুপা, হাসনাবাদ, গাহেরা, সাগরনাম চা বাগানগুলো দখল করে নেয় মুক্তিবাহিনী।

আগস্ট মাসের মধ্যে লুবাছড়া, কাড়াবালা, মোকাটিলা, আমলসিদ, ন মৌজা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আটগ্রামের যুদ্ধে লুবাছড়াতে ক্যাপ্টেন নিজামউদ্দিন শহীদ হন। কিন্তু লুবাছড়া ও কাড়াবালা আর পাকিস্তানি বাহিনীর দখলে যায়নি।

অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে মেজর জিয়াউর রহমান ১ম ও ৮ম ইস্ট বেঙ্গল নিয়ে মেজর চিত্তরঞ্জন দত্তের অধীনে থাকা ৪ নম্বর সেক্টরের সঙ্গে যোগ দেন। অন্যদিকে মেজর জিয়াউদ্দিনের অধীনে থাকা ১ম ইস্ট বেঙ্গল ও মেজর আমীন আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে থাকা ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে চা বাগান আক্রমণ করেন। মেজর সি আর দত্তের তত্ত্বাবধানেই ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদের অধীনে থাকা ১০৫ মিলিমিটার আর্টিলারি ব্যবহারের প্রশিক্ষণ হয়েছিল। পরে ১০৫ মিলিমিটার আর্টিলারির নাম রাখা হয় মুজিব ব্যাটারি।  

নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে আটগ্রাম ও জকিগঞ্জ দখল করা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। চিত্তরঞ্জন দত্তের পরিকল্পনায় সফলভাবে এই ২টি অঞ্চল মুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে মেজর সি আর দত্ত পরিচালিত কানাইঘাট যুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ। ৪ ডিসেম্বর মুক্ত হয় কানাইঘাট। এই যুদ্ধের পর জেনারেল ওসমানী সি আর দত্তের কাছে বিশেষ প্রশংসাবার্তা ও অভিনন্দন পাঠিয়েছিলেন। কানাইঘাট মুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে সিলেটের একাংশ মুক্ত হয়ে যায়।

এরপর সি আর দত্তকে দরবস্ত হয়ে সিলেটের দিকে যেতে বলা হয়। দরবস্ত জায়গাটা ছিল তামাবিল ও সিলেটের মাঝামাঝি। এখানে ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর এক কোম্পানি সেনা ছিল। তাদের সরাতে না পারলে সিলেট শত্রুমুক্ত করা ছিল এক রকম অসম্ভব ছিল। মেজর সিআর দত্ত প্রথমে লেফটেন্যান্ট জহিরকে জেড ফোর্সের ১ম ইস্ট বেঙ্গলকে সাহায্য করার নির্দেশ দিলেন। ৬ ডিসেম্বর  দরবস্ত দখল হয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনারা হরিপুরের দিকে পালিয়ে যায়।

১০ ডিসেম্বর সি আর দত্তের অধীনে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা লারা নামের একটি গ্রামে পৌঁছান। সেখানে ব্রিগেডিয়ার ওয়াদকের সঙ্গে দেখা হয় সি আর দত্তের। তখন পাকিস্তানিদের শক্ত অবস্থান ছিল হিমু চা বাগানের ভিতরে। নদী-খালবিল হয়ে ভিন্ন এক রাস্তা দিয়ে বহুদূর ঘুরে ১২ ডিসেম্বর বিকেলে চিকনাগুল চা বাগানের কাছাকাছি পৌঁছান সি আর দত্ত এবং তার অধীনে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা। অনেকটা বিনা বাধায় তারা চিকনাগুল চা বাগান দখল করেন। ১৫ ডিসেম্বর লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ রব এবং মেজর চিত্তরঞ্জন দত্তের নেতৃত্বে সিলেট হানাদারমুক্ত হয়।

মেজর চিত্তরঞ্জন দত্তের জন্ম ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি আসামের শিলংয়ে। তার বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামে। শিলংয়ের লাবান গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর তাকে ভর্তি করা হয় হবিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে। এই স্কুল থেকে ১৯৪৪ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন তিনি। এরপর  কলকাতার আশুতোষ কলেজে ভর্তি হলেও পরে ভর্তি হন খুলনার দৌলতপুর কলেজে। এই কলেজ থেকে বিএসসি পাশ করেন তিনি।

১৯৫১ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ৷ ১৯৫২ সালে কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে আসালংয়ে একটা কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধে বীরত্বসূচক পদক পেয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে তিনি ছিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বী একমাত্র বাঙালি অফিসার।  মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার আগে তিনি মেজর পদে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।  

মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে রংপুরে ব্রিগেড কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত হন চিত্তরঞ্জন দত্ত। একই বছর তার পরিকল্পনায় গড়ে উঠে বাংলাদেশ রাইফেলস (বর্তমানে বিজিবি)। তাকে মহাপরিচালক পদে নিযুক্ত করা হয়। পরে পদোন্নতি পেয়ে মেজর জেনারেল হয়েছিলেন চিত্তরঞ্জন দত্ত। ১৯৭৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান এবং ১৯৭৯ সালে বিআরটিসির চেয়ারম্যান হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালনের পর ১৯৮২ সালে তিনি আবারও মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন৷ ১৯৮৪ সালে অবসর গ্রহণ করেন চিত্তরঞ্জন দত্ত। ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

তথ্যসূত্র:

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র দশম খণ্ড

৪ নম্বর সেক্টর সংগঠিত যুদ্ধের বিবরণ, বাংলা একাডেমীর দলিলপত্র

বাংলাপিডিয়া

আহমাদ ইশতিয়াক

[email protected]

Comments

The Daily Star  | English

Freedom Index: Bangladesh ranks 141 out of 164 countries

Bangladesh’s ranking of 141 out of 164 on the Freedom Index places it within the "mostly unfree" category

51m ago