স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ‘বিতর্কিত’ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলই যথেষ্ট নয়: টিআইবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক হাজার ৮০০ জনবল নিয়োগে ব্যাপক ঘুষ লেনদেন ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশের প্রায় ছয় মাস পর, ‘খাতায় অস্পষ্টতা পাওয়া গেছে’ এই কারণ দেখিয়ে তা বাতিল করা হয়েছে। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক হাজার ৮০০ জনবল নিয়োগে ব্যাপক ঘুষ লেনদেন ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশের প্রায় ছয় মাস পর, 'খাতায় অস্পষ্টতা পাওয়া গেছে' এই কারণ দেখিয়ে তা বাতিল করা হয়েছে। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। 

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি উদ্বেগ প্রকাশ করে। 

এ ছাড়া, বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ঘুষ লেনদেন ও অনিয়ম-দুর্নীতির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে শুধু 'খাতায় অস্পষ্টতা পাওয়া গেছে' উল্লেখ করায়, প্রকৃতপক্ষে এই ঘটনায় আদৌ দুর্নীতি হয়েছে কি না, কিংবা হয়ে থাকলে তাদের পরিচয় এবং কীভাবে জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে, তা অমীমাংসিত থেকে গেছে। 

এ বিষয়ে ড. জামান বলেছেন, 'গণমাধ্যমে প্রকাশিত যে প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হলো, সেখানে সুনির্দিষ্টভাবে পদস্থ সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোটি টাকা ঘুষ প্রস্তাব করার অভিযোগ ছিল। এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা হয়েছে কি না বা জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নগুলো অবান্তর নয়। বরং আমরা মনে করি, দুর্নীতির যে ভয়াবহ বিস্তারের ইঙ্গিত সেই প্রতিবেদনে ছিল, তার প্রেক্ষিতে গ্রহণযোগ্য তদন্তের ভিত্তিতে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপই প্রত্যাশিত ছিল।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের আশঙ্কা, অনিয়মের তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়ায় নিয়োগ বাতিল করে আপাতত বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে এবং কার্যত দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটকেই টিকিয়ে রাখা হলো। পাশাপাশি এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে কথিত 'উপরমহলের' যোগসাজশের সন্দেহটাও ঘনীভূত হলো।'

এ ছাড়া, স্বাস্থ্যখাতে বিগত বছরগুলোতে যে পরিমাণ অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ পেয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এই পুরো খাতটি ঢেলে সাজানোর জোর দাবি জানিয়েছে টিআইবি। 

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ''স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে, কেউ স্বাস্থ্য খাতে বড় কোনো দুর্নীতি দেখাতে পারেনি'- এমন সব মন্তব্য করে দায় এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ আর নেই। পক্ষ-বিপক্ষের বিবেচনার ঊর্দ্ধে উঠে প্রতিটি অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করে, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। বিশেষ করে, এ পর্যন্ত স্বাস্থ্যখাত নিয়ে যত ধরনের অভিযোগ এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর নানামুখী স্বার্থ ও সংশ্লিষ্টতার কথা আলোচিত হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে সামগ্রিক শুদ্ধাভিযান এখন সময়ের দাবি।'

টিআইবি আশা করে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঘোষিত 'শুন্য সহনশীলতা' নীতির যথাযথ বাস্তবায়নের শুরুটা হবে এই স্বাস্থ্যখাত থেকেই। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং সামগ্রিকভাবে সরকারের পাশাপাশি, দুর্নীতি দমন কমিশনকেও দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মন্তব্য করা হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে।

Comments

The Daily Star  | English
‘Farmer, RMG workers, migrants main drivers of Bangladesh economy in first 50 years’

‘Farmer, RMG workers, migrants main drivers of Bangladesh economy in first 50 years’

However, their contribution would not remain the same in the years to come, says a book published from London

52m ago