অনুগত ইসি গঠনের আইনি রূপ ‘যেই লাউ সেই কদু’: বিএনপি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, অনুগত ও অপদার্থ নির্বাচন কমিশন গঠনের চলমান প্রক্রিয়াকে দলীয় স্বার্থে আইনি রূপ দেওয়ার সরকারি অপপ্রয়াসের ফলাফল হবে যে লাউ সেই কদু। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, অনুগত ও অপদার্থ নির্বাচন কমিশন গঠনের চলমান প্রক্রিয়াকে দলীয় স্বার্থে আইনি রূপ দেওয়ার সরকারি অপপ্রয়াসের ফলাফল হবে যে লাউ সেই কদু। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, আগামী ২৫ জানুয়ারি দেশব্যাপী সব মহানগর ও জেলায় মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ ফসল গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় অগণতান্ত্রিক স্বৈরশাসন দেওয়ার দিনটিকে বাকশাল দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটি ওই দিন সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত দলমত নির্বিশেষে গণতন্ত্রমনা বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

তিনি জানান, গত রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, গত প্রায় ১ যুগ ধরে আমাদের দলের যেসব নেতা-কর্মী গুম ও খুন হয়েছেন—তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছেন এই মর্মে নিখোঁজ ও মৃত নেতা-কর্মীদের স্বজনদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি লিখে নেওয়ার সরকারি নির্মম অপপ্রয়াসে সভ্যতা, মানবতা এবং ন্যায় বিচারের সব মর্মবাণী ও মূল্যবোধকে অগ্রাহ্য এবং রাষ্ট্রক্ষমতার অপপ্রয়োগের এক নতুন কলঙ্কময় দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে। বিএনপি এই ঘৃণ্য ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এমন ঘৃণ্য অপচেষ্টা সরকারের আত্মরক্ষার হাতিয়ার নয়। বরং তার দানবিক পরিচয় স্পষ্টতর করেছে।

জনগণের প্রতিবাদ তীব্রতর করার লক্ষ্যে চলমান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার জন্য দেশের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, অনুগত ও অপদার্থ নির্বাচন কমিশন গঠনের চলমান প্রক্রিয়াকে দলীয় স্বার্থে আইনি রূপ দেওয়ার সরকারি অপপ্রয়াসের ফলাফল হবে যে লাউ সেই কদু। এবার সম্ভবত হতে যাচ্ছে একটি পচা কদু। বিনা ভোটে অনির্বাচিত একটি অবৈধ সরকারের কাছ থেকে জনগণ এর চেয়ে বেশি প্রত্যাশা করে না বলে তারা মনে করে যে একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন, যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের নৈতিক যোগ্যতা এবং সামর্থ আছে শুধু একটি নির্বাচিত সরকারের।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পচা কদু এই কারণে বলছি কারণ এই আইনে আরেকটা প্রস্তাব করা হয়েছে, সরকারি চাকরির দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ছাড়া কেউ এটার সদস্য হতে পারবে না। অর্থাৎ সিভিল সোসাইটির কেউ বা শিক্ষাবিদ, কোনো আইনোজ্ঞ এখানে সদস্য হতে পারবে না। দুনিয়ার কোথায় এ রকম বিধি-নিষেধ আছে। সারা জীবন সরকারি আদেশ মেনে চলা যাদের অভ্যাস সেই সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন হবে এ রকম আইন করা, এটা সম্ভবত পচা কদু হতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের আইনমন্ত্রীর কথা স্থির থাকে না। একেক সময় একেক কথা বলেন এবং পরস্পর বিরোধী কথাও বলেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এই সরকার এবং সরকারের প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন করতে রাজি না। এই সরকার যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত না, যারা গণবিরোধী এবং তাদের সাজানো প্রশাসন তার অধীনে আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না। তাদের গড়া যে নির্বাচন কমিশন তা অযোগ্য, অপদার্থ হিসেবে সারা দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত। তাদের অধীনে তো নয়ই। তারা এবার যেটা করতে যাচ্ছে সেটা একই জিনিস দাঁড়াবে। আমাদের সংবিধানে পরিষ্কার বলা আছে, সমস্ত ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে। যে আইনই করেন, তার চূড়ান্ত অনুমোদন ছাড়া কিছু হবে না। উনি এতদিন ধরে যা করে আসছেন তার বাইরে কিছু করবেন সেটা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। ফলে এই সরকার, সরকারি প্রশাসন এবং এই সরকার কর্তৃপক্ষ নিয়োজিত কোনো নির্বাচন কমিশনের অধীনে আমাদের নির্বাচনে যাওয়ার কথা পরে, জনগণ সেই নির্বাচন করতে দেবে কি না সেটাই দেখা যাক।

সংলাপ হয় দুটি পক্ষের মধ্যে এবং সমকক্ষ পক্ষের মধ্যে হয় সংলাপ। একদিক থেকে সমকক্ষ এই কারণে যে, রাষ্ট্রপতির কোনো ক্ষমতা নেই, যারা গেছেন তাদেরও কোনো ক্ষমতা নেই। এই সংলাপে কোনো কিছুই অর্জিত হয়নি। এবার রাষ্ট্রপতি সংলাপ আহ্বান করলেন, অনেকে গেল, নানা প্রস্তাব করল তার কাছে। আমরা কি জানি রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে সুপারিশ করেছে আপনি আইন করেন? সংলাপের জায়গায় সংলাপ, সিদ্ধান্তের জায়গায় সিদ্ধান্ত। উনাকে সংলাপ করতে দিয়ে মন্ত্রিসভা আইন প্রণয়নের কাজ করেছে, বলেন নজরুল ইসলাম।

Comments

The Daily Star  | English

Create right conditions for Rohingya repatriation: G7

Foreign ministers from the Group of Seven (G7) countries have stressed the need to create conditions for the voluntary, safe, dignified, and sustainable return of all Rohingya refugees and displaced persons to Myanmar

7h ago