খুলনায় বিএনপির ৮০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা, গ্রেপ্তার ৩৭
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ ৯২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও প্রায় ৮০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ১৪ জনকে আহত করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়।
খুলনা সদর থানার এসআই বিশ্বজিত কুমার বোস বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ মামলা করেন।
পুলিশ ইতোমধ্যে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের ৩৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
গতকাল সংঘর্ষের সময় ২ পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ১২৭ রাউন্ড শটগান, ৪৩ রাউন্ড গ্যাসগান ছোড়ে। সেসময় কর্মরত ১৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গতকাল বিকেলে খুলনায় একইদিনে পাশাপাশি স্থানে ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন এই ২ দলের নেতাকর্মীরা।
সংঘাতে বিএনপি প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হন, অন্যদিকে ছাত্রলীগের প্রায় ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হওয়ার দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।
বিএনপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংঘর্ষের ফলে অর্ধশতাধিকের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়াও, ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'
খুলনা বিএনপি'র দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর কেডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিং করা হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এতে উপস্থিত থাকবেন।
বিএনপির মহানগরের কমপক্ষে ৮ নেতাকর্মী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গ্রেপ্তার এড়াতে অনেকেই গতকাল সন্ধ্যার পর বাসায় ফেরেননি। অনেকের বাসায় পুলিশি অভিযান হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।
খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন ডেইলি স্টারকে বলছেন, 'এ সংঘর্ষের ফলে তাদের দলের অন্তত ১৫ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।'
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুলিশ-ছাত্রলীগ এক হয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা করেছে। তারা নির্বিচারে সমাবেশের চেয়ার, স্টেজ ভাংচুর করেছে। অন্তত ৫০ নেতাকর্মীকে আহত করেছে। এরপর দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে নেতাকর্মীদের পিটিয়েছে।'
'কার্যালয়ের ভেতর থেকে বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক রেহেনা ঈসাসহ ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দিয়েছে,' যোগ করেন তিনি।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃহস্পতিবার বিকেলে সংঘর্ষস্থল থেকে আটক করা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ ৩৭ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বিএনপির নেতাকর্মীদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে, তারা পুলিশের কাজে বাধা দেওয়াসহ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।'
'তখন সরকারি অস্ত্র-গুলি ও জানমাল রক্ষার্থে ঘটনাস্থলে থাকা কেএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের নির্দেশে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার সেল নিক্ষেপ এবং শটগানের গুলি করা হয়। ১২৭ রাউন্ড শটগান, ৪৩ রাউন্ড গ্যাসগান ফায়ার করা হয়। এ ঘটনায় দায়িত্বরত ১৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।'
Comments