রাজনীতি

কক্সবাজারে ইউপি নির্বাচনী সহিংসতায় ‘গুলিবিদ্ধ’ হয়ে নিহত ২

কক্সবাজারে ইউনিয়ন পরিষষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে সংঘর্ষে দুজন নিহত ও প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এছাড়া মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। 

কক্সবাজারে ইউনিয়ন পরিষষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে সংঘর্ষে দুজন নিহত ও প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এছাড়া মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। 

আজ সোমবার সকালে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দুটি ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। 

সকাল সাড়ে ৯টায় কুতুবজোম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে গোলাগুলির ঘটনায় আবুল কালাম (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হন। তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোশাররফ হোসেন খোকনের সমর্থক। 

আবুল কালামকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

সকাল ১০টার দিকে একই ইউনিয়নের জামিউস সুন্নাহ মাদ্রাসা কেন্দ্রেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে, খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। 

এ বিষয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কুতুবজোম ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে গোলাগুলির ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও চার জন।' 

এ ছাড়া, দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন সদর বড়ঘোপ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্ট আবু হালিম (৪০)। তিনি ইউনিয়ন শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতব্বর। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে আকস্মিকভাবে পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা চালায়। এ সময় কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। এ সময় আবু হালিম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হন আরও চার জন আওয়ামী লীগ কর্মী। 
 
আহতরা হলেন, আবু শামা (৪০), মুন্না (২৫), ইমু (৩০) ও মোহাম্মদ মুনীর মাস্টার (৩৫)। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ইমুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  
 
তবে, কুতুবদিয়া থানার ওসি মো. ওমর হায়াত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুলিশের গুলিতে নয়, দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন।'

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা রেজাউল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, 'গোটা উপজেলায় নির্বাচনী সহিংসতায় আহত প্রায় ৪০ জনকে আজ তারা চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছেন।'  

ওই উপজেলার লেমশীখালী ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম ও বিএনপি নেতা বর্তমান চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বেলা আড়াইটার দিকে সদরুদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে দুপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের আলী আছিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দুপুর ১২টায় দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে, কেউ আহত হয়নি। 

একই ইউনিয়নের উনচিপ্রাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও লম্বাবিল এমদাদিয়া মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এতে দুই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী।
 
এ ঘটনায় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সদস্য প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে যানবাহনে ভাঙচুর চালায় উশৃঙ্খল জনতা। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
 

Comments

The Daily Star  | English

Cuet students suspend protests

Say authorities assured them of meeting their major demands

32m ago