আ. লীগ বারবার গণতন্ত্র হত্যা করেছে, বিএনপি পুনরুদ্ধার করেছে: মোশাররফ
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আমেরিকার দেওয়ার নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ বারবার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে এবং বিএনপি বারবার গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছে।
তিনি আরও বলেন, অপকর্ম ধামাচাপা দিতে আওয়ামী লীগের নিয়োগ করা লবিস্টরাও ব্যর্থ হয়েছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মদিন উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুরে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন আয়োজিত আলোচনায় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগ বারবার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। বিএনপি বারবার গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছে। এটা রেকর্ডের কথা। আওয়ামী লীগ নানাভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করে বর্তমান প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করতে চায়। জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়। কিন্তু এগুলো অস্বীকার করার ক্ষমতা কারো নেই। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কেন একটি বানোয়াট মামলায় কারাগারে? কারণ তিনি গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছেন। গণতন্ত্রের আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি আজ বন্দি এবং হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তারা বারবার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের দিনের ভোট আগের রাতে ডাকাতি করেছে। এটা কারো অজানা নয়। বাংলাদেশের সব মানুষ জানে, দেশ-বিদেশে সবাই জানে। কী নির্লজ্জ হলে আজ প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী আছেন। এটা দেশের একটা মানুষও বিশ্বাস করে না। এখন দেখা গেল, আন্তর্জাতিকভাবেও কেউ বিশ্বাস করে না। কিছু দিন আগে আমেরিকায় একটি ডেমোক্র্যাটিক সামিট হয়েছে। সারা বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলো সেখানে উপস্থিত ছিল। সেই সম্মেলনে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ পায়নি। কারণ সারা বিশ্ব মনে করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। একটি স্বৈরাচারী শাসক গায়ের জোরে বাংলাদেশ পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, যে দেশে গণতন্ত্র থাকে না, সে দেশে মানবাধিকার থাকে না। আমরা গত ১২ বছর যাবৎ যে কথা বারবার বলছি, এই সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্য খুন, গুম, মামলা, নির্যাতনের স্টিম রোলার চালাচ্ছে। এই সরকার বিভিন্নভাবে মিথ্যাচার করে ধামাচাপা দেওয়ার অনেক চেষ্টা করেছে। শুধু সরকারের সমালোচনা করার দায়ে বিএনপির বিরুদ্ধে ১ লাখের বেশি মামলা। ৩৬ লাখের বেশি নেতা-কর্মী আসামি। বেগম খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে এমন কোনো নেতাকর্মী নেই বাংলাদেশে যিনি মামলার আসামি না। এটা কি গণতন্ত্রের কোনো চেহারা হতে পারে? স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে এটা সম্ভব। তারা মনে করেছিল, আমাদের এভাবে মামলা দিয়ে কারাগারে নিক্ষিপ্ত করে খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে এ দেশের জনগণের মুখকে স্তব্ধ করে রাখতে পারবে। কিন্তু তা পারেনি। তারা মনে করেছিল, আন্তর্জাতিকভাবে তাদের অপকর্মকে ধামাচাপা দিতে পারবে তাদের দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে। যখন দেখলো দূতবাসগুলো পারছে না, তখন আওয়ামী লীগ সরকার বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে। ২০০৪ সাল থেকে লবিস্ট নিয়োগ করে চেষ্টা করেছে তাদের অপকর্মকে ধামাচাপা দেওয়ার আন্তর্জাতিকভাবে। কিন্তু তারা এটাতেও ব্যর্থ হয়েছে।
লবিস্টরাও ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি থেকে র্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমাদের সামরিক ও পুলিশ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা শুনতে পাচ্ছি এই তালিকায় আওয়ামী লীগের নেতা এবং আওয়ামী অসাধু ব্যবসায়ী যারা বড় বড় ডাকাতি করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে তাদের নামও সেই তালিকায় আছে। এটা বিশাল ওয়ার্নিং বাংলাদেশের সরকারের প্রতি। কিন্তু সরকার গায়ে নিচ্ছে না। ২০১৮ সালে এই সরকারকে এ দেশের জনগণ ওয়ার্নিং দিয়েছিল। ২০১৮ সালে আমরা খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। গোয়েন্দা সংস্থা রিপোর্ট দিলো, যদি ৩০ তারিখে জনগণ ভোট দিতে পারে তাহলে আওয়ামী লীগের কোনো পাত্তা থাকবে না। বিএনপি ৮০ ভাগের বেশি আসন পেয়ে জয়ী হবে। তখন আওয়ামী লীগ ২৯ তারিখ রাতে ডাকাতি করেছে। এতে প্রমাণিত হয়, এ দেশের মানুষকে তারা বিশ্বাস করে না। কারণ ওই সময় দেশের মানুষ তাদের রেড কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। রেড কার্ড দেখিয়ে দিয়েছিল, ভোট যদি দিতে পারি তাহলে আওয়ামী লীগ বিদায়। আপনাদের দুঃশাসন বাংলাদেশে থাকবে না। আজ আন্তর্জাতিকভাবে নিষেধাজ্ঞা আসছে। এর ধারাবাহিকতায় ১২টি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মানবাধিকার সংস্থার চিঠি জাতিসংঘ আমলে নিয়েছে।
Comments