‘আমি মনে করেছিলাম আল্লাহর পরে আমার নেত্রী আছেন’

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘আমি মনে করেছিলাম আল্লাহর পরে আমার নেত্রী আছেন। ভেবেছিলাম, যেকোনো বিপদে-আপদে ওনাকে স্মরণ করলে আল্লাহর তরফ থেকে ওনাকে পাবো। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়…।’
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, 'আমি মনে করেছিলাম আল্লাহর পরে আমার নেত্রী আছেন। ভেবেছিলাম, যেকোনো বিপদে-আপদে ওনাকে স্মরণ করলে আল্লাহর তরফ থেকে ওনাকে পাবো। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়…।'

আজ শনিবার গাজীপুরে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের উদ্দেশে কথাগুলো বলার সময় এখানেই থেমে যান জাহাঙ্গীর আলম। দুঃখের বিষয়টা ঠিক কি, তা আর পরিষ্কার করে বলেননি।

তিনি বলেন, 'করোনাকালে আমরা আমাদের জীবন বাজি রেখে কাজ করেছি।'

প্রতিপক্ষের প্রতি ইঙ্গিত করে মেয়র বলেন, 'তারা যেকোনো মূল্যে আমাকে, আমার পরিবারকে এবং আমার সমর্থকদের ক্ষতি করার জন্য বিভিন্নভাবে পাঁয়তারা করছে। তারা কোনো সময় চেয়েছে আমাকে হত্যা করতে, কোনো সময় চেয়েছে আমাকে পরিকল্পিতভাবে এখান থেকে সরিয়ে দিতে।'

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী তাকে গাজীপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। ২০১৩ সালে মেয়র পদে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল তার পক্ষে কাজ করেছেন।

২০১৮ সালে তাকে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, 'জন্মের পর যেদিন থেকে তিনি বুঝতে শিখেছি সেইদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি।'

তার অস্তিত্বের সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জড়িত জানিয়ে তিনি বলেন, 'গত নির্বাচন থেকে এ পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে বহু ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।'

নগরবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা

'আমি নগরবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য এখানে দাঁড়িয়েছি। আমি এই নগর বাসীদের জন্য রাস্তা করতে ৮ হাজার বিঘা জায়গা চেয়ে নিয়েছি, ৮০০ কিলোমিটার রাস্তা প্রায় সমাপ্তির পথে নিয়ে এসেছি। ৩২ হাজার বাড়ি-ঘর ও দোকান তারা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নিয়েছিলেন। সেজন্য আমি নগরবাসীর কাছে ক্ষমা চাই। এ রাস্তাগুলো আমার ব্যবহারের জন্য নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করতে। সেই উদ্যোগে আমি কাজটি শুরু করেছিলাম,' বলেন জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি উদাহরণ টেনে দাবি করেন, 'পৃথিবীর কোনো দেশ বা নগর নেই যেখানে রাস্তার জন্য ৩২ হাজার বাড়ি-ঘর ও দোকান ছেড়ে দেয়। আমি সেটা করেছিলাম। মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করেছিলাম রাস্তার জন্য। রাস্তার জন্য ঘর-বাড়ি ভাঙার জন্য জনগণকে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো টাকা দিতে হয়নি। জনগণ আমার কথায়, কাউন্সিলরদের কথায় ও আওয়ামী লীগের কথায় জায়গা থেকে বাড়ি-ঘর, দোকান সরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু তারা আমার এ কাজটিকে সহ্য করতে না পেরে ভিন্ন পথে সরে গেছে।'

তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি আদর্শের জায়গা। গাজীপুর মহানগরে ২ হাজার ৮০০ কারখানা রয়েছে। ছাত্রজীবন ও রাজনীতির জীবনে কখনোই কোনো কারখানার মালিকের কাছ থেকে ১ হাজার, ৫০ হাজার, ১ লাখ—কোনো পরিমাণ টাকা নেইনি। কিছু মিথ্যাবাদীরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলেছে, আমার দল এবং সিটি করপোরেশন চালানোর জন্য আমরা নাকি ইন্ডাস্ট্রি থেকে টাকা উঠাই। দ্বিতীয় বলেছে, আমরা মানুষের জমি নিয়েছি।'

তিনি আরও বলেন, 'এখানে ৫৭টি ওয়ার্ড আছে, কাউন্সিলর, সাধারণ মানুষ, দলের নেতা রয়েছেন। আমরা কোনো মানুষ জমি নিয়ে সমস্যায় পড়লে তাকে সমাধান করে দিয়েছি। কিন্তু কোনো মানুষের জমি আমরা আত্মসাৎ বা অসদ্ব্যবহারে ছিলাম না। কিন্তু মিথ্যাবাদীরা সেই সব তথ্য দিয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Foreign airlines’ $323m stuck in Bangladesh

The amount of foreign airlines’ money stuck in Bangladesh has increased to $323 million from $214 million in less than a year, according to the International Air Transport Association (IATA).

14h ago