পটুয়াখালী-বরগুনা মালিক সমিতির দ্বন্দ্বে ৪ দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ, জনভোগান্তি

পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার মালিক সমিতির দ্বন্দ্বের কারণে ৪ দিন ধরে কুয়াকাটাসহ কয়েকটি আঞ্চলিক সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওইসব রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা।
পটুয়াখালী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল। চবি: সোহরাব হোসেন/ স্টার

পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার মালিক সমিতির দ্বন্দ্বের কারণে ৪ দিন ধরে কুয়াকাটাসহ কয়েকটি আঞ্চলিক সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওইসব রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা।

গত বুধবার সকাল থেকে পটুয়াখালী- কুয়াকাটা, পটুয়াখালী-আমতলী, বরিশাল-বরগুনা ভায়া চান্দুখালী রুটে ওই ২ জেলা সমিতির মালিকানাধীন সব বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। কুয়াকাটা থেকে দূরপাল্লার বাস ও বরিশাল মালিক সমিতির মাত্র ৭টি বাস চলাচল করছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।

স্থানীয়রা জানান, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে আনুপাতিক হারে বাস চলাচল নিয়ে বাস মালিক সমিতির মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এ নিয়ে ২০১৯ সালে বরিশালে এবং ২০২১ সালে ঢাকায় বাসমালিক সমন্বয় পরিষদের এক সভায় দুই জেলার বাস মালিক সমিতির মধ্যে সমঝোতাও হয়। সমঝোতা অনুযায়ী বরিশাল-কুয়াকাটা-পটুয়াখালী-আমতলী-তালতলী, বরিশাল-বরগুনা ভায়া চান্দুখালী রুটে আনুপাতিক হারে দুই জেলার বাস মালিক সমিতি বাস পরিচালনা করার কথা ছিল। গত ১৮ মে থেকে এসব রুটে  বাস চলাচলে বরগুনা সমিতির লোকজন বাধা সৃষ্টি করে বলে পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির অভিযোগ। পটুয়াখালী থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো বরগুনা সমিতির লোকজন আমতীসহ বিভিন্ন স্থানে আটকে রাখে বলে অভিযোগ করেন পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা।

এ দ্বন্দ্বের কারণে বুধবার সকাল থেকে বরগুনা বাস মালিক সমিতির লোকজন এবং শ্রমিকরা বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা-তালতলী রুটে চলাচলকারী পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির বাসগুলো আমতলী হাসপাতাল সড়কের সামনে আটকে রাখে।

বাস মালিকদের দ্বন্দ্বের কারণে বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা, পটুয়াকালী-তালতলী ও বরিশাল-বরগুনা ভায়া চান্দুখালী রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে এই রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা। নিরুপায় হয়ে বাস যাত্রীরা অটো রিকসাসহ বিভিন্ন যানবাহনে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন।

পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বলেন, বরগুনা বাসমালিক সমিতি এসব রুটে আনুপাতিকহারের চেয়ে বেশি সংখ্যক বাস পরিচালনা করছেন। আমরা আনুপাতিকহারে বাস পরিচালনা করতে চাই আর এতে বরগুনার মালিক সমিতের লোকজন বাধা দিচ্ছেন। তারা আমাদের বাসগুলো বিভিন্ন স্থানে আটকিয়ে রাখছেন।

বরগুনা বাস মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা কিসলু বলেন, পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতি আমাদের সঙ্গে খামখেয়ালি করে বাস পরিচালনা করায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে তারা আমাদের সব বাস আটকে রেখে হয়রানি করছে। পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতি পূর্বের সমঝোতা অনুযায়ী বাস পরিচালনা না করে, আমাদের বাস চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে।

কলাপাড়া থেকে পটুয়াখালীগামী যাত্রী সজীব আহম্মেদ বলেন, চোখের ডাক্তার দেখাতে এক আত্মীয়কে নিয়ে পটুয়াখালী যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাস চলাচল বন্ধ থাকায় রিজার্ভ করে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে তারপর পটুয়াখালী যেতে হচ্ছে৷ এতে অতিরিক্ত টাকা ও সময় খরচ হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আরিফ হোসেন বলেন, আমি পটুয়াখালীর একটি শোরুমে চাকরি করি। ছুটি নিয়ে বরগুনা এসেছিলাম। এখন বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তিনগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে মোটরসাইকেলে যেতে হচ্ছে।

পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন মৃধা জানান, বিষয়টি নিরসনের জন্য আগামীকাল রোববার পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা প্রশাসকদের সমন্বয়ে যৌথসভা আয়োজনের কথা রয়েছে। আশাকরি সেখানে এ সমস্যার সমাধান হবে।

Comments